মন্ত্রণালয়ের উচিত অভিযোগ আমলে নেওয়া-সমস্যা যখন চেয়ারম্যানের পুরুষালি ক্ষমতা

জনগণ তাঁকে ভোট দিয়ে নির্বাচন করলেও পুরুষ সহযোগীদের ক্ষমতার কাছে তিনি নাস্তানাবুদ হচ্ছেন। গত মঙ্গলবারের প্রথম আলোয় প্রকাশিত সংবাদে বান্দরবানের আলীকদম উপজেলার নারী ভাইস চেয়ারম্যান বলেছেন, ‘জনপ্রতিনিধি হয়েও আমি নির্যাতন-নিপীড়নের শিকার’।


নির্যাতক হিসেবে এখানে আবির্ভূত হয়েছেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান স্বয়ং। এই নারী জনপ্রতিনিধি এখন দায়িত্ব পালন তো দূরের কথা, নিজেকে রক্ষা করতেই অপারগ। সকল স্তরে নারীর জন্য অনুকূল পরিবেশ নিশ্চিত করা না গেলে তৃণমূল পর্যায়ে নারীর ক্ষমতায়ন ব্যর্থ হবে, যদি না এসব ঘটনার উপযুক্ত বিহিত করা যায়।
ক্ষমতার অপব্যবহারের সামনে যে কেউই বিপন্ন হতে পারে। কিন্তু ক্ষমতাবান পুরুষ হলে নারীর জন্য বিপন্নতার মাত্রা বহু গুণ বাড়ে। বান্দরবানের উপজেলা চেয়ারম্যান পুরুষালি ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে এভাবে তাঁরই ভাইস চেয়ারম্যানের জীবন অতিষ্ঠ করে তুলেছেন বলে অভিযোগ।
অতীতেও দেশের বিভিন্ন উপজেলা ও ইউনিয়ন পরিষদে নারী জনপ্রতিনিধিদের কাউকে কাউকে ক্ষমতাবান পুরুষ জনপ্রতিনিধিদের দ্বারা অপমানিত, লাঞ্ছিত ও নির্যাতিত হওয়ার ঘটনা ঘটতে দেখা গেছে। নির্বাচিত নারী জনপ্রতিনিধিদের এভাবে হয়রানি করা তৃণমূল গণতন্ত্র বিকাশে ক্ষতিকর। এ বিষয়ে সরকারের স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব রয়েছে। নারীর ক্ষমতায়নের বিধান থাকা এক জিনিস, আর বাস্তবে নারী জনপ্রতিনিধির মাধ্যমে তার বাস্তবায়ন এক নয়। নারীর ক্ষমতায়নের পথের সব বাধা, পুরুষ সহকর্মীদের অসহযোগিতা, অনৈতিকতা, কুত্সা ও নির্যাতনমূলক আচরণের প্রতিকার করতে হলে সরাসরি মন্ত্রণালয়ের অধীনে অভিযোগকেন্দ্র থাকতে হবে, থাকতে হবে প্রতিকারের দ্রুত উদ্যোগ। এই কাজে নারী অধিকার সংগঠনের প্রতিনিধিদেরও জড়িত রাখা যায়। অভিযোগ প্রমাণিত হলে কিংবা মিথ্যা অভিযোগ করা হলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। সরকার যদি এ বিষয়ে বিশেষ ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে ‘সকলি গরল ভেল’ হতে বাধ্য।

No comments

Powered by Blogger.