অন্যদিকে একটি ‘ঐতিহাসিক’ ঘটনা

এর মধ্যে পাকিস্তানের রাজনীতিতে ঘটে গেল খুবই তাৎপর্যপূর্ণ একটি ঘটনা। অনেকেই একে আখ্যা দিচ্ছেন ‘ঐতিহাসিক’ বলে। আসিফ আলী জারদারি দেশের প্রথম প্রেসিডেন্ট হিসেবে সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে নিজের ক্ষমতা খর্ব করলেন। আর এর মাধ্যমে ক্ষমতা বাড়ল দেশটির চির-অবহেলিত পার্লামেন্টের।


প্রধানমন্ত্রীকে বরখাস্ত, পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়া, জরুরি অবস্থা জারি—এগুলো আর এখনকার মতো প্রেসিডেন্টের ইচ্ছাধীন থাকবে না। প্রধানমন্ত্রী সৈয়দ ইউসুফ রাজা গিলানি একে একটি ঐতিহাসিক সাফল্য বলে বর্ণনা করেছেন। ১৯ এপ্রিল প্রেসিডেন্ট জারদারির স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে অষ্টাদশ সংশোধনী সংবিধানে যুক্ত হয়েছে। প্রেসিডেন্টের একজন মুখপাত্র মন্তব্য করেছেন, এ ঐতিহাসিক ঘটনার মাধ্যমে পাকিস্তানের সংবিধান বিভিন্ন ‘একনায়কের যুক্ত করা অগণতান্ত্রিক’ ধারাগুলো থেকে নিষ্কৃতি পাবে।
অষ্টাদশ সংশোধনী সব মুশকিল যে আসান করে দেবে, তা মনে করছেন না পর্যবেক্ষকেরা। মানবাধিকার আন্দোলনের নেত্রী, পাকিস্তানের মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারপারসন আসমা জাহাঙ্গীর বলেছেন, এর সামনে অনেক চ্যালেঞ্জ। আবার অনেক সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও এর মধ্যে কিছু ভালো দিক আছে। যেমন প্রাদেশিক সরকারকে বাড়তি ক্ষমতা প্রদান, প্রেসিডেন্টের গণভোট ডাকার ক্ষমতা রদ, যখন-তখন অধ্যাদেশ জারির ক্ষমতা সীমিত করা ইত্যাদি ইতিবাচক পরিবর্তন। অন্যদিকে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের অধিকারের স্বীকৃতির কথা বলা হলেও প্রধানমন্ত্রীকে অবশ্যই মুসলমান হতে হবে, এই পুরোনো বিধান ফিরিয়ে আনা হয়েছে। মৌলিক অধিকার এখনো দুর্বল। মত প্রকাশ, স্বাধীন চলাফেরা ও ধর্মের অধিকার এখনো সীমিত রয়ে গেছে। আসমা জাহাঙ্গীর আশা প্রকাশ করেছেন, সংস্কার এখানেই শেষ না হয়ে একটি চলমান প্রক্রিয়া হবে। কেবল তখনই পাকিস্তানের গণতন্ত্র সামনে এগোতে পারবে।

No comments

Powered by Blogger.