টেলিফোন বিল বকেয়া রেখে কীভাবে তাঁরা নির্বাচন করলেন?-বিলখেলাপি সাংসদেরা

সপ্তম ও অষ্টম জাতীয় সংসদের সাংসদদের কাছে ৩৮ লাখ টাকার টেলিফোন বিল পাওনা রয়েছে বলে গত বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদকে জানিয়েছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী। এই বিলখেলাপিদের মধ্যে বর্তমান সংসদের হুইপ ও একটি সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যানও রয়েছেন।


আমাদের আইনপ্রণেতারা আইনের প্রতি যে মোটেই শ্রদ্ধাশীল নন, বিল খেলাপের ঘটনাটি তার উদাহরণ মাত্র।
প্রত্যেক সাংসদকে বেতন ছাড়াও সরকারি কোষাগার থেকে নির্দিষ্ট হারে টেলিফোন ও ভ্রমণভাতা দেওয়া হয়। এমনকি তাঁর জামাকাপড় পরিষ্কার করার জন্যও ভাতা দেওয়া হয়। তার পরও মোটা অঙ্কের টেলিফোন বিল বকেয়া থাকার বিষয়টি দুঃখজনক। অষ্টম সংসদ শেষ হয়েছে ২০০৬ সালের মাঝামাঝি। গত সাড়ে পাঁচ বছরে যাঁরা বকেয়া বিল পরিশোধ করতে পারেননি, তাঁদের সাংসদ পদে থাকার নৈতিক অধিকার আছে কি না, তাও বড় প্রশ্ন।
বিস্ময়কর হলো, বিলখেলাপি হওয়া সত্ত্বেও কীভাবে তাঁরা গত নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেন এবং জয়ীও হলেন। অবশ্য বিলখেলাপি আরও চারজন সাবেক সাংসদ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেও জয়ী হতে পারেননি। সেটি হয়তো জাতির জন্য সৌভাগ্যই বলতে হবে। কেননা, গত তিন বছরে তাঁরা জাতির কাঁধে খেলাপি বিলের বোঝা আরও বাড়িয়ে দিতেন। খেলাপি তালিকাভুক্ত প্রবীণ সাংসদ মোহাম্মদ রহমত আলী বলেছেন, ‘তাঁর কাছে কোনো বিল পাবে না টেলিফোন সংস্থা।’ বিষয়টি তদন্ত করে দেখা প্রয়োজন, ভুল কার, সাংসদের না সংস্থার। হুইপ আ স ম ফিরোজ বলেছেন, ‘তিনি বিল বকেয়ার বিষয়টি জানতেন না। ডাউন পেমেন্ট দিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। তাঁর কাছে টেলিফোন সংস্থার পাওনা প্রায় দুই লাখ টাকা। হুইপ সাহেব অন্যদের সচেতন করার আগে নিজের বকেয়া বিল সম্পর্কে সচেতন থাকলে দেশ ও জাতি সবিশেষ উপকৃত হতো।
তিন মাসের বেশি বিল বকেয়া থাকলে সরকার যদি সাধারণ গ্রাহকদের লাইন কেটে দেয়, তাহলে এই সাবেক ও বর্তমান সাংসদেরা কীভাবে বছরের পর বছর বিল বকেয়া রাখলেন? কর্তৃপক্ষ কি তাঁদের টেলিফোন লাইন কেটে দিয়েছে? না দিলে এর জন্য তাদের জবাবদিহি করতে হবে। আইন তো সবার ক্ষেত্রে সমানভাবে প্রযোজ্য হতে হবে।

No comments

Powered by Blogger.