বৃত্তের ভেতর বৃত্ত-দিনাজপুর, ঝালকাঠি, শ্রীমঙ্গল : সংবাদ শিরোনাম পুলিশ by দেবব্রত চক্রবর্তী বিষ্ণু

১৯৯৫ সালের ২৪ আগস্ট দিবাগত রাতে দিনাজপুরে পুলিশের কাছে আশ্রয় চাওয়া ইয়াসমিন নামের অসহায় নারীর জীবনের করুণ পরিণতি সচেতন মানুষের মনে থাকার কথা। ওই রাতে দিনাজপুরে টহল পুলিশ ইয়াসমিনকে বাড়িতে পেঁৗছে দেওয়ার কথা বলে তাদের গাড়িতে তুলে নেয়।


শেষ পর্যন্ত ইয়াসমিন বাড়িতে পেঁৗছে ছিল বটে; তবে জীবন্ত নয়, লাশ হয়ে। ওই টহল দলের পুলিশ সদস্যরা পর্যায়ক্রমে তাকে ধর্ষণ করে এবং অবশেষে হত্যা করে। এর প্রতিবাদে ২৭ আগস্ট দিনাজপুর শহরে প্রতিবাদী মানুষ ঘাতক পুলিশ সদস্যদের বিচারের দাবিতে রাস্তায় নামে। ওই প্রতিবাদ মিছিলে পুলিশ নির্বিচারে গুলি চালিয়ে ছয়জন প্রতিবাদকারীকে (মতান্তরে সাতজন) হত্যা করেছিল। প্রতিবাদ শেষ পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়েছিল সারা দেশে। পুলিশের অপরাধ ধামাচাপা দেওয়ার যে কত রকম ফাঁকফোকর পুলিশের হাতে রয়েছে, তা ওই বিচারের রায়ের মধ্য দিয়ে উন্মোচিত হয়েছিল। তবে অনেক বিলম্বে হলেও নিহতের পরিবার ন্যায়বিচার পেয়েছিল এবং বাংলাদেশের বিচারব্যবস্থার ওপর মানুষের হৃত আস্থা কিছুটা হলেও ফিরে এসেছিল।
এই দিনাজপুরেই পুলিশ আবার সংবাদ শিরোনাম হয়েছে ডাকাত হিসেবে। এ রকম ঘটনা এ দেশে অতীতেও ঘটেছে। অভিযোগ উঠেছে, ৩ মে দিনাজপুরের বলেয়া ঘাসিয়ারা গ্রামে দিবাগত শেষরাতে কাহারোল থানা এলাকার একজন পল্লী চিকিৎসকের বাড়িতে ডাকাতির ঘটনায় সাদা পোশাকধারী চার পুলিশ সদস্যকে গ্রামবাসী আটক করে। তারা গণপিটুনিরও শিকার হয়। অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যদের উদ্ধার করতে গেলে বীরগঞ্জ ও কাহারোল থানার অন্য পুলিশ সদস্যদেরও আটকে রাখে জনতা। স্থানীয় বিক্ষুব্ধ জনতা লাঞ্ছিত করে দিনাজপুরের জেলা প্রশাসক ও কাহারোলের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকেও। পুড়িয়ে দেয় পুলিশের একটি গাড়ি। ওই ঘটনার পর সংগত কারণেই প্রশ্ন করতে হচ্ছে_এমন পুলিশ দিয়ে আমরা কী করব? কোনো পোশাকধারী বাহিনীর সদস্যরা যখন কোনো দুষ্কর্মে লিপ্ত হন, তখন এর দায় বর্তায় গোটা বাহিনী কিংবা সংস্থাটির ওপর। 'পুলিশ জনগণের বন্ধু', 'সেবাই পুলিশের ধর্ম' ইত্যাদি আপ্তবাক্য কোনো থানার দেয়ালে কিংবা ফটকে কিংবা পুলিশ কার্যালয়ে তুলির আঁচড়ে ফুটে রয়েছে_এমনটি আমাদের চোখে পড়ে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, এই কি সেবা কিংবা বন্ধুত্বের নমুনা? স্বাধীন বাংলাদেশে পুলিশ এযাবৎ যতটা না ইতিবাচক অর্থে সংবাদ শিরোনাম হয়েছে, তার চেয়ে ঢের বেশি সংবাদ শিরোনাম হয়েছে নেতিবাচক অর্থে। পুলিশের ওপর মানুষের আস্থা কিংবা বিশ্বাস শূন্যের কোঠায় গিয়ে ঠেকেছে অনেক আগেই। তাদের হৃত গৌরব পুনরুদ্ধারে সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে শুরু করে পুলিশ বাহিনীর ঊর্ধ্বতন দায়িত্বশীলদের পক্ষ থেকেও এযাবৎ তাগিদ কম আসেনি। কিন্তু তার পরও পুলিশের নৈতিক স্খলন কিংবা পতন রোধ করা যায়নি! আমরা বিশ্বাস করি, বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীতে এখনো নিষ্ঠাবান, কর্তব্যপরায়ণ, সৎ ও দক্ষ কর্মকর্তা, সদস্য রয়েছেন। কিন্তু পাশাপাশি এই প্রশ্নও দাঁড়ায়_সেই সংখ্যা কত? আমাদের স্মরণে আছে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকার কথা। কিন্তু স্বাধীনতার পর চার দশকে এই পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের নৈতিক স্খলন এতটা পুষ্ট হলো কিভাবে?
বিশদ বিশ্লেষণে না গিয়েও বলা যায়, দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা অপরাজনীতির অপচ্ছায়া পড়েছে এই বাহিনীর ওপর। খুবই মারাত্মক সব অভিযোগ রয়েছে, নিয়োগ থেকে শুরু করে বদলি, পদোন্নতি_সব কিছুই নির্ধারিত হয় রাজনৈতিক বিবেচনায়। আমরা অহরহ দেখে আসছি, একেকটি সরকার এই পুলিশ বাহিনীকে নিজেদের রাজনৈতিক হীন স্বার্থ চরিতার্থ করতে কী নগ্নভাবে ব্যবহার করেছে। দিনাজপুরের ওই ঘটনায় ইতিমধ্যে ছয় পুলিশ সদস্যকে বরখাস্ত এবং বীরগঞ্জ থানার অভিযুক্ত সব সদস্যকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। এ রকম টোটকা দাওয়াই আগেও দেওয়া হয়েছে। কিন্তু অসুখটা এত গুরুতর পর্যায়ে পেঁৗছেছে যে এসব দাওয়াই কোনো কাজেই আসছে না। তাদের যে শাস্তি হয়েছে তা প্রশাসনিক শাস্তি। তাই আদালতের শাস্তি না হওয়া পর্যন্ত কোনোভাবেই বলা যাবে না, অপরাধীদের উপযুক্ত শাস্তি হয়েছে। শুধু পুলিশ কেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী অন্য বাহিনীর সদস্যদেরও অপরাধে লিপ্ত হতে দেখা যাচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ক্রমাবনতির চিত্রে জনমনে যখন শঙ্কা দানা বাঁধছে, তখন আইনি সংস্থার সদস্যদের অব্যাহত অপরাধজনিত কর্মকাণ্ড সমাজদেহকে আরো বিষিয়ে তুলছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোর দায়িত্ব হলো জানমালের নিরাপত্তা রক্ষা করা। কিন্তু তারাই যদি নিরাপত্তাহীনতার অনুষঙ্গ হয়ে দাঁড়ায়, তাহলে ভরসার জায়গাটি কোথায়? আইনি সংস্থাগুলোর বেআইনি তৎপরতা, স্বেচ্ছাচারিতা ও নানা দুষ্কর্ম এই রাষ্ট্রে অব্যাহতভাবে ইয়াসমিন-লিমনদের দুঃসহ স্মারক করে তুলছে। একটি রাষ্ট্র ও সমাজের জন্য এর চেয়ে বড় দুঃসংবাদ আর কিছু হতে পারে না। আমরা জানি না, আমাদের দেশের আইনি সংস্থাগুলোর সদস্যরা কবে নৈতিক মূল্যবোধে উজ্জীবিত হবেন। আমরা এও জানি না, তাঁরা কবে পেশাদারিত্বের প্রতিফলন ঘটাতে সক্ষম হবেন। জনসেবা তো দূরের কথা, তাঁরা যে ক্রমেই জন-আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছেন_এটা অবশ্যই দুর্ভাবনার অন্যতম বড় কারণ।
আমরা জানি ঝালকাঠির লিমনের কথা। র‌্যাবের গুলিতে পঙ্গুত্ববরণকারী কলেজ শিক্ষার্থী লিমন অমানবিকতা ও বিপন্নতার স্মারক হয়েও আইনি সংস্থাগুলোর কত ধরনের স্বেচ্ছাচারিতার শিকার হয়েছেন। লিমনের পরিবারের আর্তনাদ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এবং তৎসংশ্লিষ্ট কাউকেই স্পর্শ করতে পারেনি। স্থানীয় থানা পুলিশ লিমনের পরিবারের মামলাটি পর্যন্ত গ্রহণ করতে রাজি হয়নি এবং এ নিয়ে দীর্ঘদিন টালবাহানা করেছে, এমনকি আদালতের নির্দেশ পর্যন্ত উপেক্ষা করে চলছিল। প্রশ্ন হচ্ছে_পুলিশের এত অনৈতিক শক্তি ও স্বেচ্ছাচারিতার উৎস কী? একই সঙ্গে স্মরণ করতে পারি সম্প্রতি শ্রীমঙ্গলে খুন হওয়া উত্তমের করুণ অধ্যায়ের কথাও। ৪, ৫ ও ৬ মে কালের কণ্ঠের প্রতিবেদনে উত্তম হত্যাকাণ্ডের উপাখ্যান এবং তাঁর লিখে যাওয়া ডায়েরির কথা চিত্রিত হয়েছে। উত্তম খুন হওয়ার পর তাঁর পরিবারের সদস্যরা প্রশাসনের দ্বারে দ্বারে ঘুরলেও ন্যায়বিচার পাওয়ার পথ কণ্টকমুক্ত করা যায়নি। শ্রীমঙ্গল থানা পুলিশ মামলাটি গ্রহণ করেনি। শ্রীমঙ্গল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা উত্তমের বাবাকে পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন, মামলাটি নেওয়া যাবে না! এরপর তাঁরা যান পার্শ্ববর্তী থানা কমলগঞ্জের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কাছে। সেখানেও তাঁদের একই কথা শুনতে হয়। অবশেষে উত্তমের বাবা ৩ মে যান শ্রীমঙ্গল রেলওয়ে থানায়। রেলওয়ে থানার কর্মকর্তা তাঁকে বলেন, পোস্টমর্টেমের রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত নতুন করে মামলা নেওয়া সম্ভব নয়! এমতাবস্থায় অপরাধী চক্র বেপরোয়া হবে না তো কি ভয়ে কুঁকড়ে যাবে? কালের কণ্ঠে উত্তম হত্যার মর্মন্তুদ ঘটনা প্রকাশিত হওয়ার পর একটি মহল উত্তমের বাবা এবং পরিবারের সদস্যদের প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে আসছে। শ্রীমঙ্গল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে তাঁরা এও জানিয়েছেন। এ ক্ষেত্রে তাঁরা যে জবাব তাঁর কাছ থেকে পেয়েছেন, তাতে খুব সহজেই প্রতীয়মান হয়, এ দেশে দায়সারাভাবেই প্রায় সব কিছু চলে। পুলিশের ভাষ্য, অভিযোগ জানালে তাঁরা দেখবেন কিন্তু এর আগে যদি আরো প্রাণ ঝরে যায়, তখন কী হবে?
শ্রীমঙ্গল একটি ছোট্ট উপজেলা শহর। কিন্তু নানা কারণে সমৃদ্ধ। অনেক চা বাগানবেষ্টিত প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর পর্যটকদের বিশেষ পছন্দের এই স্থানটি ক্রমেই জন-আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। গত ১৪ এপ্রিল এই শহরেই প্রকাশ্যে খুন হয়েছেন কলেজছাত্র পুলক। ১৬ এপ্রিল জনৈক আলতাফের লাশ মিলল শহরের ব্যস্ততম কেন্দ্রে। ১৮ এপ্রিল লাশ মিলল রেজিনা কন্দর, যে ১৪ এপ্রিল থেকে নিখোঁজ ছিল। এমন পরিস্থিতিতে কালের কণ্ঠের স্থানীয় প্রতিনিধি বিশ্বজিতের প্রশ্নের জবাবে শ্রীমঙ্গলের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিস্ময়কর মন্তব্য করেছেন। তাঁর ভাষ্য, 'লাশ উদ্ধারের মাধ্যমেই আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে এভাবে দেখা ঠিক হবে না।' আমরা কোন দুনিয়ায় আছি, এবার ভাবুন! উত্তমের মৃত্যুর কারণ এ পর্যন্ত কালের কণ্ঠের রিপোর্টে যা জানা গেছে, তা অত্যন্ত ভয়াবহ। শ্রীমঙ্গলের মতো ছোট্ট একটি শহরে অপরাধী চক্র আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চোখে ধুলা দিয়ে কিভাবে দিনের পর দিন নানা দুষ্কর্ম চালিয়ে যাচ্ছে? প্রশাসন কিভাবে এসবের দায় এড়াবে? এ রকম ঘটনা বাংলাদেশের বিভিন্ন জনপদে অব্যাহতভাবে ঘটে চললেও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ঊর্ধ্বতনদের দৃষ্টিতে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে! তাঁরা অহরহ উচ্চারণ করছেন, পরিস্থিতি ভালো। রাষ্ট্র কিংবা সরকারের দায়িত্বশীলরা যখন বাস্তবতা এড়িয়ে এর বিপরীতে অবস্থান নেন, তখন সমাজের দুষ্কর্মকারীরা সংগত কারণেই আশকারা পায় এবং অধিক উৎসাহে আরো অপরাধকর্মে লিপ্ত হয়। দিনাজপুর, ঝালকাঠি, শ্রীমঙ্গল কিংবা দেশের অন্য স্থানে অব্যাহতভাবে জননিরাপত্তা বিঘি্নত হয়ে চলার ঘটনাগুলো স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কিংবা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থাগুলোর ঊর্ধ্বতন ব্যক্তিরা যতই ঢাকতে চেষ্টা করুন না কেন, সাধারণ মানুষ এখন আর কোনোভাবেই এতটা অসচেতন নয়, তারা অনেক কিছুই বোঝে। মহাজোট সরকার ইতিমধ্যে তাদের শাসন মেয়াদের প্রায় অর্ধেক সময় কাটিয়ে দিয়েছে। দেশের মানুষ আগামী জাতীয় নির্বাচনে এ বিষয়গুলো সামনে রেখেই ভোটকেন্দ্রে যাবে, এটা বিস্তৃত না হলেই মঙ্গল।
বলার অপেক্ষা রাখে না, পুলিশ একটি রাষ্ট্রের অন্যতম স্তম্ভ প্রশাসনের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সংস্থা। একটি দক্ষ, সৎ, গতিশীল, স্বচ্ছ, কর্তব্যপরায়ণ, দায়বদ্ধ এবং জবাবদিহিতামূলক পুলিশ বাহিনী গড়ে তোলার গণদাবি দীর্ঘদিনের। অন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর জন্যও রয়েছে একই ধরনের দাবি। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, এসব দাবি বাস্তবায়নে এযাবৎ কোনো সরকারেরই অঙ্গীকার-প্রতিশ্রুতি কম পাওয়া যায়নি; কিন্তু ফলাফল কার্যত শূন্য। পুলিশ কিংবা অন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর স্বেচ্ছাচারী ও দুর্নীতিপরায়ণ কর্মকর্তা এবং সদস্যদের তুঘলকি কাণ্ডকীর্তি সরকার কেন বন্ধ করতে পারছে না? উত্তমের ঘটনার ক্ষেত্রে পুলিশ মামলা নিতে গিয়ে আইনের যে মারপ্যাঁচ কষেছে, তা শুধু দুঃখজনকই নয়, রীতিমতো প্রশ্নবোধকও। এ চিত্র জিইয়ে রেখে অপরাধ ও অপরাধী নির্মূল করবে প্রশাসন? প্রশাসনের কর্তারা কেন ভুলে যান যে তাঁরা প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী এবং মানুষের সেবা করতে অবশ্যই তাঁরা দায়বদ্ধ। তাঁদের দায়িত্বহীনতার কারণেই উত্তমরা এ সমাজে অপশক্তির ছোবলে চিরতরে হারিয়ে যাচ্ছে। আইন মানুষের কল্যাণের জন্য, আইনের জন্য মানুষ নয়। মানুষ আইনের শাসন ও ন্যায়বিচারপ্রাপ্তির বদলে আইনের মারপ্যাঁচে পিষ্ট হবে কেন? এ ক্ষেত্রেও কি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলবেন, তাঁদের কিছুই করার নেই? যদি তা-ই হয়, তাহলে বারবার কেন তাঁরা অপরাধ ও অপরাধী নির্মূলের অঙ্গীকার-প্রতিশ্রুতি দেন? দরিদ্র জনগোষ্ঠী তাদের করের টাকায় কেনইবা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অসাধু সদস্যদের প্রতিপালন করবে? একটি স্বাধীন-সার্বভৌম গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের চিত্র তো এমন হতে পারে না। যে আইন মানুষের কল্যাণ নিশ্চিত না করে উল্টো বিপদাশঙ্কা প্রকট করে তোলে, তেমন আইন জিইয়ে রাখা হয়েছে কেন? প্রশ্ন অনেক, কিন্তু উত্তর কোথায়?

লেখক : সাংবাদিক
deba_bishnu@yahoo.com

No comments

Powered by Blogger.