বৃত্তের ভেতর বৃত্ত-পঞ্চাশ এমপির আমলনামা, উত্তপ্ত জাতীয় সংসদ এবং অর্জনের বিসর্জন by দেবব্রত চক্রবর্তী বিষ্ণু

ক্ষমতা, ক্ষমতার শত্রু-মিত্র, দুই-ই হতে পারে_এই কথাটি নতুন নয়। কিন্তু ক্ষমতাবান রাজনীতিক কিংবা রাজনীতির নিয়ন্ত্রকরা এ সত্যটি আমলে নিতে চান না। তবে এর মূল্য ক্ষমতাসীন অথবা ক্ষমতাবহির্ভূত ক্ষমতাবানদেরও দিতে হয়_এমন নজির আমাদের সামনেই আছে বিস্তর। ইতিহাস থেকে এ দেশে শিক্ষা নেওয়ার ব্যাপারে যে অনাগ্রহ, উদাসীনতা পরিলক্ষিত হয়, এর বিরূপ প্রভাব পড়ে জনজীবনে।


১৭ আগস্ট, ২০১১ কালের কণ্ঠে '৫০ এমপির আমলনামা প্রধানমন্ত্রীর টেবিলে' শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। গোয়েন্দা সংস্থা ও তৃণমূলের নেতাদের অভিযোগের ভিত্তিতে কিংবা সূত্র ধরে প্রকাশিত প্রতিবেদনটি ইঙ্গিত দিল_ক্ষমতাবান সংসদ সদস্যরা সরকার, দল ও মহাজোটের ললাটে শুধু কলঙ্কতিলকই এঁকে দিচ্ছেন না, তাঁরা ক্রমেই দলের বোঝা এবং অবহনযোগ্যও হয়ে উঠছেন। এমন চিত্র গত চারদলীয় জোট সরকারের আমলেও দেখা গিয়েছিল এবং তারা এর মাসুল গুনেছে_এটি হয়তো অনেকেই ভুলে গেছেন।
আমরা যারা মফস্বলে বড় হয়েছি কিংবা সেখানকার পরিবেশ-পরিস্থিতি সম্পর্কে খানিকটা হলেও জ্ঞাত, তারা ভালো করেই জানি, মফস্বলে যাঁরা সাংবাদিকতার সঙ্গে যুক্ত তাঁদের হাত-পা অনেক ক্ষেত্রেই ক্ষমতাবানদের রশিতে বাঁধা। এই বন্ধন ছিন্ন করে এগিয়ে যাওয়ার সাধ্য বা সাহস অনেকেরই নেই। অবশ্য সাধ্য বা সাহসের প্রশ্ন তুলে ওই সাংবাদিকদের খাটো করে দেখার অবকাশ কম। কারণ কোনো কোনো ক্ষমতাবানের ক্ষমতার দাপটে ইতিমধ্যে অনেকেই আক্রান্ত হয়েছেন, তা-ও আমাদের অজানা নয়। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, সরকার, দল কিংবা মহাজোট এসব বিষয় তাদের নিজ নিজ ফোরামে তুলে ধরে যথাযথ ব্যবস্থা নিচ্ছে না কেন কিংবা ক্ষমতাবহির্ভূত অবৈধ বিপুল ক্ষমতার প্রশ্রয়ই বা দেওয়া হচ্ছে কেন? তবে সম্প্রতি এ নিয়ে দলে ও জোটে ক্ষোভ পরিলক্ষিত হচ্ছে। হবিগঞ্জ থেকে ৯ আগস্ট, ২০১১ দুজন বয়োজ্যেষ্ঠ ত্যাগী আওয়ামী লীগ কর্মী টেলিফোনে ক্ষোভমিশ্রিত কণ্ঠে প্রথমেই বললেন, 'যদি আমাদের প্রসঙ্গটি গোপন রাখেন তাহলে কিছু কথা বলে মনটাকে ভারমুক্ত করতে চাই।' এরপর একাধারে তাঁরা হবিগঞ্জের রাজনীতি এবং কয়েকজন ক্ষমতাবান সম্পর্কে যা বললেন, তা শুধু উদ্বিগ্ন হওয়ার মতো বিষয়ই নয়, আওয়ামী লীগের ঘাঁটি বলে পরিচিত হবিগঞ্জের সার্বিক রাজনীতির চিত্র যে নীরবে আওয়ামী লীগ তথা মহাজোট সরকারের জন্য ক্রমেই বৈরী হয়ে উঠছে_এমন ধারণাই মিলল। এটি একটিমাত্র দৃষ্টান্ত। মানুষ কিন্তু এখন আগের চেয়ে অনেক সচেতন, তাদের অচেতন করে রাখার সব রকম প্রচেষ্টা সত্ত্বেও। এরপর হবিগঞ্জ থেকে এ রকম টেলিফোন আরো পেয়েছি এবং বুঝতে কষ্ট হয়নি, মানুষ নীরবে কতটা ফুঁসছে। ক্ষমতাবানদের ওপর সাধারণ মানুষের ক্রমবর্ধমান এই ক্ষোভ অমূলক নয়। তবে ওই টেলিফোনকারীদের মতো হবিগঞ্জের আরো যেসব ত্যাগী রাজনীতিক ক্ষুব্ধ, ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কিত, এর পেছনের কারণ বোধকরি অনেকেই সহজে অনুমান করতে পারবেন।
হবিগঞ্জে গত আড়াই বছরে ক্ষমতাসীন মহলের জনপ্রিয়তা কতটা হ্রাস পেয়েছে, এর প্রমাণ উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের আসন হারানো এবং পৌর ও ইউপি নির্বাচনে তাদের ভোট কমার চিত্র। কোনো কোনো সংসদ সদস্য যদি দলের জন্য বোঝা হয়ে ওঠেন তবে তা সামগ্রিক ক্ষতি নয়। দলের শীর্ষজনরা এর মন্দ দিকটা বিবেচনা করবেন। কিন্তু তাঁরা যদি সাধারণ মানুষের জন্য বিষফোঁড়াসম হয়ে দাঁড়ান, বিপত্তিটা তখনই বড় হয়ে দেখা দেয় এবং কথা বলার ক্ষেত্রটাও সংগত কারণেই বিস্তৃত হয়। প্রসঙ্গক্রমে এখানে প্রাসঙ্গিক একটি বিষয়ের উল্লেখ করতে হয়। ১৮ আগস্ট হবিগঞ্জের বিরোধী দলের কয়েকজন নেতা-কর্মী কথা প্রসঙ্গে দৃষ্টান্তস্বরূপ জানালেন, হবিগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য (বানিয়াচং-আজমিরিগঞ্জ) অ্যাডভোকেট আবদুল মজিদ খান আগামী নির্বাচনে যদি দলের টিকিট পান তাহলে হয়তো উৎরে যাবেন, কিন্তু জেলার অন্য আসনগুলোর ফল ভবিষ্যতে আওয়ামী লীগের পক্ষে না যাওয়ার সম্ভাবনাই প্রকট। এ বিষয়টি আমলে নিতে হয় এ জন্য যে, বিরোধী পক্ষ যখন ক্ষমতাসীন দলের একজন সংসদ সদস্যকে নিয়ে এমনভাবে হিসাব কষে, তখন তাঁর কর্মকাণ্ড জনসমর্থন কুড়িয়েছে, নিশ্চয়ই তা বলতে হবে। অ্যাডভোকেট আবদুল মজিদ খানরা সংখ্যায় বাংলাদেশে বিপুল না হলেও রাজনীতির মাঠে কিংবা তৃণমূল পর্যায়ে তাঁদের মতো ত্যাগী রাজনীতিকের উপস্থিতি সামগ্রিকভাবে রাজনীতির জন্য সুবার্তা। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, তাঁরা বড় অবহেলিত। মন্দ বা স্বেচ্ছাচারী, ক্ষমতাবান সংসদ সদস্য হিসেবে ইতিমধ্যে যাঁরা মানুষের কাছে চিহ্নিত হয়ে গেছেন, তাঁদের ব্যাপারে দল কী ভাববে তা দলের ব্যাপার, কিন্তু সাধারণ মানুষ কিন্তু তাঁদের পরিত্যাগ করতে শুরু করেছে_এটি স্পষ্ট। আগেই বলেছি, হবিগঞ্জ একটি দৃষ্টান্ত মাত্র, এমন জেলা আছে আরো অনেক এবং সেসব জেলায় দলের বোঝাসম নেতাকর্মীর সংখ্যাও কম নয়।
আমাদের ক্ষমতাবান রাজনীতিকরা কেন ভুলে যান, নীরব ভোটার বলে এক অপরিমেয় শক্তি রয়েছে এবং তাদের রায়ের ওপর এই ক্ষমতাবান রাজনীতিকদের রাজনীতিক হিসেবে বাঁচা-মরার অনেক কিছুই নির্ভর করে। প্রথমবারের মতো আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে এবার যাঁরা সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন, তাঁদের অনেকেই ধরাকে যে সরা জ্ঞান করছেন, এমন দৃষ্টান্ত অস্পষ্ট নয়। যাঁদের নাম কালের কণ্ঠের ওই প্রতিবেদনে এসেছে শুধু তাঁরাই নন, এর বাইরেও যে আরো অনেকেই আছেন_এমন ধারণা অমূলক বলে উড়িয়ে দেওয়া কঠিন। তাঁরা কী না করছেন। দলের মধ্যে কোন্দল সৃষ্টি, আত্মীয়করণ, নিজস্ব অনুসারীদের দিয়ে সুবিধা ভোগ এবং হত্যা মামলায় জড়িয়ে পড়ার মতো ঘটনায়ও কেউ কেউ যুক্ত হচ্ছেন! এর ফলে শীর্ষ থেকে মাঠপর্যায়ে দলের নেতা-কর্মীরা এখন ত্যক্ত-বিরক্ত এবং সংগতই ভবিষ্যৎ নিয়েও শঙ্কিত। এই ক্ষমতাবানদের দাপটে স্থানীয় প্রশাসন সব সময় থাকে তটস্থ এবং অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তাঁদের সেবাদাস হয়ে নিজেদেরও আখের গোছাচ্ছেন ভীতিমুক্তভাবে। কারণ ক্ষমতার এমন খুঁটি যাঁদের আছে, তাঁরা আর তোয়াক্কা করবেন কাকে? কিন্তু এমন চিত্র বা পরিস্থিতি অন্তত এবার উদ্ভব হবে না_সাধারণ মানুষের প্রত্যাশাটা ছিল সে রকমই। কিন্তু সেই আশার অপমৃত্যু ঘটছে এবং একই সঙ্গে অবহনযোগ্য ক্ষমতাবানদের তালিকাটাও ক্রমেই দীর্ঘ হচ্ছে।
কিছুসংখ্যক ক্ষমতাবান সংসদ সদস্য, যাঁদের উল্লেখযোগ্য অংশ নবাগত এবং ক্ষমতাসীন মহলের নেতৃত্বদানকারী দল আওয়ামী লীগের টিকিট নিয়ে নির্বাচিত হয়েছেন, তাঁরা আইনপ্রণেতা হিসেবে দেশ ও জনগণের স্বার্থ বিবেচনা করে তাঁদের প্রকৃত কাজটা করতে চরমভাবে ব্যর্থ হচ্ছেন। ওই কাজ বাদ দিয়ে তাঁরা নীতি নিয়েছেন, 'নাগালেরটাও খাবেন, নাগালের বাইরেও হাত বাড়াবেন'। এমনদের সংখ্যা মন্ত্রিপরিষদেও কম নয়, দুর্মুখেরা তো তা-ই বলে। বাণিজ্য, স্বরাষ্ট্র, যোগাযোগ, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়সহ কয়েকটি মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীদের কথাবার্তা, কর্মকাণ্ড ও ব্যর্থতা নিয়ে মিডিয়ায় প্রায় নিত্য আলোচনা হচ্ছে। ১৮ আগস্ট, ২০১১ সংসদের চলতি অধিবেশনে আওয়ামী লীগ ও মহাজোটের কয়েকজন সংসদ সদস্য যেভাবে ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছেন, ব্যর্থ মন্ত্রীদের তুলোধুনো করেছেন_তা দেশের সংসদীয় ইতিহাসে বিরল দৃষ্টান্ত। দল বা জোটের মন্ত্রীদের নিয়ে এমন কঠোর সমালোচনা সংসদে এর আগে হয়নি। তাঁদের যৌক্তিক এই বিস্ফোরণ সাধারণ মানুষকে আশান্বিত করেছে এবং এমনটি সংসদীয় রাজনীতি তথা গণতন্ত্রের জন্য সুলক্ষণ বটে। কিন্তু ব্যর্থ মন্ত্রীদের অবস্থান এর পরও ঠিকই আছে। বিরোধী দলের অনুপস্থিতিতে সংসদে সরকারি কিংবা মহাজোটের দায়িত্ববান সংসদ সদস্যরা একটি অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করে বিপন্ন-বিপর্যস্ত জনগণকে হতাশা থেকে মুক্ত করেছেন। আমরা জানি না মাননীয় সংসদ নেত্রী প্রধানমন্ত্রী এই বিষয়টি কতটা আমলে নিয়েছেন। তবে অযোগ্য, অদক্ষ, ব্যর্থ মন্ত্রী-এমপিদের কল্যাণে জনবিড়ম্বনা যাতে আর প্রলম্বিত না হয় তিনি সে রকম পদক্ষেপ নেবেন, এটিই প্রত্যাশা। ক্ষমতাসংশ্লিষ্ট স্বেচ্ছাচারীদের স্থানীয় পর্যায়েও দাপট নাকি এখন খুবই দৃষ্টিকটু হয়ে দাঁড়িয়েছে। অনেকেই মনে করেন, এর প্রধান কারণ নীতিহীন সংসদ সদস্যদের অতিরিক্ত লোভজনিত সেই বিশেষ নীতি, অর্থাৎ 'নাগালেরটাও খাবেন, নাগালের বাইরেও হাত বাড়াবেন'। কেউ কেউ আবার অন্যের কিংবা সরকারি জায়গাজমি দখলেও মত্ত_এমন খবরও পত্রপত্রিকায় আসছে।
একজন নিষ্ঠাবান প্রধানমন্ত্রী, কয়েকজন মন্ত্রী কিংবা সংসদ সদস্য এই রসাতলগামী দেশটাকে উদ্ধার করার যতই চেষ্টা করুন না কেন, বিদ্যমান বাস্তবতা বলছে, তা মোটেই সহজ নয়। সরকারের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের কিংবা নানা স্তরের সহযোগিতা, অঙ্গীকার, স্বচ্ছতা ও দায়বদ্ধতা ভিন্ন এমন কঠিন কাজ সম্পন্ন করা দুঃসাধ্য। বিরুদ্ধবাদীরা স্বীকার করুন কিংবা না-ই করুন, মহাজোট সরকারের অর্জন ইতিমধ্যে কম ছিল না। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, অর্জনগুলো ক্রমেই ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। একেই হয়তো বলে অর্জনের বিসর্জন। ছাত্রলীগ, যুবলীগ, শ্রমিক লীগ কিংবা অন্যান্য লীগের মধ্যে যে অন্তর্কলহ, সংঘাত, হানাহানি ও হতাহতের ঘটনা ঘটছে; এর অন্যতম কারণ নীতিহীন সংসদ সদস্য ও অসাধু মন্ত্রীদের অতিরিক্ত লালসা_এমন মন্তব্য মোটেই অমূলক নয়। যাঁরা আদর্শের জন্য দল করেন, যাঁরা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার দেখতে চান, যাঁরা চান আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার অতীতের চারদলীয় জোট সরকারের বিপরীতে সাধারণ্যে একটি ইতিবাচক ধারণা তৈরি করুক, তাঁদের মধ্যেও ক্ষোভ বাড়ছে। দলের শীর্ষ পর্যায়ে ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতারা উপেক্ষিত_এ নিয়েও ক্ষোভ তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত লক্ষণীয় হয়ে উঠেছে। অপরদিকে ক্যাডার সংস্কৃতি চালু থাকার কারণে আইনশৃঙ্খলার অবনতিও ক্রমেই পুষ্ট হচ্ছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী যত কথাই বলুন না কেন, বাস্তবতা ভিন্ন। তিনি পুলিশকে মাঝে মাঝেই বলে থাকেন, অপরাধী যে দলেরই হোক তাদের গ্রেপ্তার করতে হবে। কিন্তু একজন ওসি ভালো করেই জানেন, জলে বাস করে কুমিরের সঙ্গে যুদ্ধ করা যায় না। বিশেষ করে নীতিহীন সংসদ সদস্যদের বাহুবলস্বরূপ এই ক্যাডারদের শায়েস্তা করতে গেলে তিনি নিজেই শায়েস্তা হয়ে যাবেন। তাই এসব ক্ষমতাবানের সঙ্গে সদ্ভাব রেখে নিজেও দুই পয়সা কামিয়ে নেওয়াটাকেই তাঁরা যুক্তিযুক্ত মনে করছেন এবং
হচ্ছেও তা-ই।
এসবকে পুঁজি করে বিরোধী দল যখন মাঠ গরম করতে রাস্তায় নামবে, তখন মানুষ বাধ্য হয়ে অতীত ভুলে গিয়ে একসময় অবশ্যই প্রত্যাশা করবে_এ অবস্থার পরিবর্তন হোক। তখন এই নীতিহীন সংসদ সদস্য এবং জনদৃষ্টিতে ব্যর্থ মন্ত্রীরা তাদের কাছে গিয়ে প্রত্যাখ্যাত হবেন। এখন তো তাঁদের জোর আছে, শক্তি আছে, তাই হয়তো মানুষ ভয় পায়, কিন্তু তখন কী হবে? তাঁরা কি অতীতের স্বেচ্ছাচারীদের পরিণাম দেখছেন না? চারদলীয় জোটের কাউকে কাউকে বলতে শুনেছি, আমাদের সতর্কবার্তা নীতিনির্ধারকরা আমলে নেননি। তাই ফল ভোগ করতে হয়েছে। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার যদি স্বাধীনতার সুফল সত্যিকার অর্থেই জনগণের দোরগোড়ায় পেঁৗছে দিতে চায়, নির্বাচনী অঙ্গীকার নিয়ে যদি জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করতে না চায়, সত্যিকার অর্থেই যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করতে চায়, মৌলবাদ ও জঙ্গিবাদকে প্রতিহত করতে চায় এবং দেশকে সামগ্রিকভাবে এগিয়ে নিতে চায়_তাহলে এখনই কঠিন কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময়। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের মহাক্ষমতাবান নীতিহীন সংসদ সদস্যদের দিকে এবং ব্যর্থ, অদক্ষ, অযোগ্য মন্ত্রীদের ব্যাপারে আর বিলম্ব না করে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত। অতীতে মহাক্ষমতাবানরাই আওয়ামী লীগের ভরাডুবির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন। এটি বুঝতে দলের শীর্ষ নেতৃত্ব যদি এখনো ব্যর্থ হন, তাহলে সামনে বড় দুঃসময় অপেক্ষা করছে। দুর্মুখেরা বলেন, আওয়ামী লীগ পড়েছে কিছু আমিত্ববাদী ও স্বেচ্ছাচারীর কবলে। কিন্তু মনে রাখা উচিত, এ দেশের সাধারণ মানুষ রাজনীতির মাঠে কিংবা প্রশাসনের, সরকারের যেকোনো স্তরে কখনোই আমিত্ববাদী, স্বেচ্ছাচারীদের পছন্দ করেনি বরং পরিত্যাগ করেছে ঘৃণাভরে।

লেখক : সাংবাদিক
deba_bishnu@yahoo.com

No comments

Powered by Blogger.