যোগাযোগমন্ত্রী যাচ্ছেন-সড়ক সংস্কারে হঠাৎ দৌড়ঝাঁপ!

যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের দুই দিনের সফরে আজ শুক্রবার যশোর, খুলনা, সাতক্ষীরা ও নড়াইলে যাচ্ছেন। তাঁর আগমন উপলক্ষে এসব জেলার বিভিন্ন সড়ক সংস্কারে সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ জোরেশোরে কাজ শুরু করেছে।
আমাদের নিজস্ব প্রতিবেদক, আঞ্চলিক কার্যালয় ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর।


সাতক্ষীরা: যোগাযোগমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে সাতক্ষীরা সওজ বিভাগ দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছে। গতিরোধকে দেওয়া হচ্ছে সাংকেতিক চিহ্ন। রং দিয়ে লেখা হচ্ছে সড়কের পাশে মাইল পোস্ট ও বাঁকগুলোতে। পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করা হচ্ছে সাতক্ষীরা-খুলনা সড়কের বিভিন্ন স্থান।
জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, ওবায়দুল কাদের কাল শনিবার সাতক্ষীরায় আসছেন। তিনি ওই দিন সকাল সাড়ে নয়টায় সাতক্ষীরা-খুলনা সড়কের নওয়াপাড়া বাজারসংলগ্ন সড়ক পরিদর্শন করবেন। পরে তিনি সাতক্ষীরা-যশোর সড়কপথে নড়াইলে যাবেন। তাঁর আগমন উপলক্ষে সাতক্ষীরা-যশোর সড়কের ইলিশপুর থেকে সাতক্ষীরার লাবসা পর্যন্ত দুই পাশ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করা হচ্ছে। মেরামত করা হচ্ছে সড়কের ছোট ছোট গর্তও। সড়কের পাশের মাইল পোস্টগুলোতে রং দিয়ে লেখা হয়েছে সড়কের দূরত্ব। সড়কের গতিরোধক ও বাঁক পোস্টগুলোতেও দেওয়া হয়েছে সাংকেতিক চিহ্ন।
একইভাবে সাতক্ষীরা-খুলনা সড়কের মীর্জাপুর থেকে শুভাষিণী পর্যন্ত সাড়ে চার কিলোমিটার সড়কেও কাজ হচ্ছে জোরেশোরে। চলাচলের অনুপযোগী হওয়ায় এই সড়ক সংস্কারের দাবিতে গত পাঁচ বছরে একাধিকবার বাস ও ট্রাকমালিকেরা যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেন। পরে ২০০৯ সালের অক্টোম্বর মাসে ১৮ কোটি টাকা ব্যয়ে ওই সড়কের কাজ শুরু হয়। ২০১০ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে ওই কাজ শেষ করার কথা। পরে কাজের মেয়াদ বাড়িয়ে করা হয় ২০১১ সালের জুন পর্যন্ত। কিন্তু ওই সময়ের মধ্যে কাজ শেষ না হওয়ায় আবারও বাড়িয়ে সময় নির্ধারণ করা হয় ২০১২ সালের জুন পর্যন্ত। মন্ত্রীর কাল ওই কাজ পরিদর্শন করার কথা।
সাতক্ষীরা সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুর রহিম সড়কের পাশে পরিষ্কার, গতিরোধকে সাংকেতিক চিহ্ন দেওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, এসব নিয়মিত কাজ। তবে মন্ত্রী আসায় একটু আগে করা হচ্ছে।
যশোর: ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের যশোর শহর থেকে অভয়নগর উপজেলার নওয়াপাড়া পর্যন্ত বেহাল ২৯ কিলোমিটার সড়ক পুনর্নির্মাণ ও সংস্কারকাজ আজ শুক্রবার থেকে শুরু হচ্ছে। যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের অভয়নগর উপজেলার প্রেমবাগ এলাকায় এ কাজের উদ্বোধন করবেন।
সম্প্রতি প্রথম অলো পত্রিকায় ‘ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক, বৃষ্টিতে কাদা, রোদে ধুলা’ শিরোনামে একটি সরেজমিন প্রতিবেদন ছাপানো হয়। এরপর ওই মহাসড়কের ২৯ কিলোমিটার (যশোর-নওয়াপাড়া) সংস্কারের জন্য ১৮ কোটি টাকার দরপত্র আহ্বান করা হয়। সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে খুলনার বেসিক ইউআইএল-জেভি নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কাজের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
সওজ বিভাগ যশোরের নির্বাহী প্রকৌশলী জিয়াউল হায়দার বলেন, ২৯ কিলোমিটার সড়কের সবটুকু পুনর্নির্মাণ করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে মহাসড়কের বেশি খারাপ অংশটুকু পুনর্নির্মাণ ও কম খারাপ স্থানে সংস্কার করে গোটা সড়কের ওপর ওভার লে (পিচের কার্পেটিং) করা হবে।
নড়াইল: যশোর ও নড়াইল বাস-মিনিবাস মালিক ও শ্রমিক সমিতি ভাঙাচোরা সড়ক সংস্কারের দাবিতে একাধিকবার আন্দোলনসহ বাস চলাচল বন্ধ করলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের টনক নড়েনি। কিন্তু কাল শনিবার যোগাযোগমন্ত্রীর যশোরের মনিরামপুর মধুমেলা থেকে সড়কপথে যশোর-শরীয়তপুর ভায়া নড়াইল হয়ে পদ্মা সেতু নির্মাণস্থান পরিদর্শনের কথা রয়েছে। এ কারণে সওজ বিভাগ তড়িঘড়ি করে নড়াইল অংশের ভাঙাচোরা সড়ক নির্মাণে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে।
গতকাল দুপুরে সরেজমিনে নড়াইল-কালনা সড়কের আউড়িয়ায় গিয়ে দেখা গেছে, চিত্রা সেতুসংলগ্ন ভাঙাচোরা সড়কের সংস্কারকাজ করা হচ্ছে। সওজ বিভাগের এস ডি নজরুল ইসলাম বলেন, কাল যোগাযোগমন্ত্রীর মনিরামপুর থেকে সড়কপথে নড়াইল হয়ে শরীয়তপুর পদ্মা সেতুর স্থান পরিদর্শনে যাওয়ার কথা। এ কারণে সড়কের নড়াইল অংশের এক হাজার ২০০ মিটার ভাঙাচোরা অংশ নির্মাণ করা হচ্ছে।sc

No comments

Powered by Blogger.