লঞ্চ-বাসে পকেট কাটা-ফেরার পথেও ভোগান্তি

ঈদের ছুটিতে রাজধানী ও বিভাগীয় শহরগুলো থেকে গ্রামে যাওয়া-আসার পথে মানুষের ভোগান্তির চিত্র যুগ যুগ ধরে কমবেশি একই রকম থেকেছে। মঙ্গলবার সমকালে 'লঞ্চে-বাসে ঈদফেরত মানুষের পকেট কাটা হচ্ছে' শিরোনামে প্রকাশিত রিপোর্টটি যাত্রাপথে মানুষের ভোগান্তির খণ্ডিত চিত্র মাত্র। রিপোর্টে মাদারীপুরের কাওড়াকান্দি ঘাটে লঞ্চ ও স্পিডবোটে কয়েকগুণ বাড়তি ভাড়া আদায়ের চিত্র তুলে ধরা হয়েছে।
মুন্সীগঞ্জের মাওয়া থেকে ঢাকা আসার পথেও যাত্রীদের অতিরিক্ত ভাড়া গুনতে হচ্ছে। আরও কয়েকটি স্থানে যাত্রী হয়রানির যে বিবরণ প্রকাশ করা হয়েছে তা বস্তুত সারাদেশের চিত্রেরই খণ্ডিত রূপ। প্রশাসনের জানার মধ্যেই এসব অন্যায্য ভাড়ার বোঝা যাত্রীদের ওপর চাপানো হচ্ছে। তাহলে নাগরিকরা কার কাছে এর প্রতিকার চাইবে? প্রতিবছর ঈদের সময় অসংখ্য মানুষ সাধারণত শহর থেকে গ্রামে যান। এক সঙ্গে বিপুল মানুষের চাপ সামলানোর মতো অবস্থা আমাদের পরিবহন ব্যবস্থার নেই। কিন্তু গাড়ির টিপ ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে যাত্রী পরিবহন ক্ষমতাকে কয়েকগুণ বৃদ্ধি করা যায়। এতে পরিবহন মালিক ও শ্রমিকদের আয়ও বাড়তে পারে। এ ধরনের উদ্যোগ যে এখন চালু নেই তা নয়। তবে ব্যবস্থাপনাগত দুর্বলতার কারণে ট্রিপ বৃদ্ধির হার সন্তোষজনক পর্যায়ে উন্নীত করা সম্ভব হয় না। ফলে যাতায়াতে পরিবহন অপ্রতুলতা প্রকট হয়ে দেখা দেয়। হজের সময় যেভাবে বিমানের বাড়তি ফ্লাইটের পাশাপাশি হজযাত্রীদের পরিবহনের জন্য বিদেশি বিমান সংস্থার কাছ থেকে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য পরিবহন সুবিধা নেওয়া হয়, একইভাবে প্রতিবেশী বা নিকট প্রতিবেশীদের কাছ থেকে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য বাস ও রেলের বগি-ইঞ্জিন লিজ নিয়ে ঈদের সময় যাত্রী বিড়ম্বনার অবসান ঘটাতে পারি। যেসব পরিবহন মালিক ও শ্রমিক অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করে তাদের বিরুদ্ধে যাতে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ব্যবস্থা নেয় তা নিশ্চিত করেও যাত্রী ভোগান্তি কমানো যায়। এ জন্য প্রয়োজন সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনার। কর্তৃপক্ষ বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে ভেবে দেখতে পারে।

No comments

Powered by Blogger.