অনাকাঙ্ক্ষিত ও অশুভ আক্রমণ-রাজনীতি by খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ

ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময়ের মতো সম্প্রীতির একটি অনুষ্ঠানে বিরোধীদলীয় নেত্রী অত্যন্ত অশোভনভাবে বলেছেন, সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হক টাকার বিনিময়ে রায় দিয়েছেন। এ বক্তব্যের সমর্থনে ৩ সেপ্টেম্বর ২০১১ তারিখের ইত্তেফাক পত্রিকার প্রথম পৃষ্ঠার প্রধান শিরোনামের প্রতিবেদক লিখেছেন,


'অনুসন্ধানে জানা যায়, বিচারপতি খায়রুল হক প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে দশ লাখ ৩৭ হাজার ২৫০ টাকা গ্রহণ করেন।' কবে কোন ব্যাংকের মাধ্যমে কত টাকা উত্তোলন করা হয়েছে, প্রতিবেদক তাও উল্লেখ করেছেন। ইত্তেফাকের সাফাই প্রতিবেদকের বিষয়ে পরে আলোচনা করব। প্রথমে দেখা যাক, ঘটনাটা কী?
এর আগে ৩ জুলাই ২০১১ তারিখে দৈনিক ইনকিলাব পত্রিকার প্রথম পৃষ্ঠার প্রথম শিরোনামের অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে প্রকাশ পেয়েছে, ৪ জন সাবেক প্রধান বিচারপতিসহ ২১ জন বিচারপতি চিকিৎসা বিল বাবদ ২ কোটি ১৭ লাখ ২৮ হাজার ৯৭৮ টাকা গ্রহণ করেছেন ২০০৪ থেকে ২০১১ সালের জুন মাস পর্যন্ত। রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, বিচারপতিদের বেতন-ভাতার পাশাপাশি প্রাপ্য সুযোগ-সুবিধার আওতায় এ অর্থ প্রদান করা হয়েছে। নিজ ও পরিবারের চিকিৎসা বিল গ্রহণকারী প্রধান বিচারপতিবৃন্দ হলেন এমএম রুহুল আমিন, মোঃ তাফাজ্জালুল ইসলাম, মোহাম্মদ ফজলুল করিম এবং এবিএম খায়রুল হক। অন্যান্য বিচারপতি হলেন শাহ আবু নঈম মোমিনুর রহমান, এসকে সিনহা, একে বদরুল হক, এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী, একেএম আসাদুজ্জামান, একেএম জহিরুল হক, মোঃ ফারুক, মোঃ আতাউর রহমান খান, মোঃ আবদুল হাই, মোঃ মইনুল ইসলাম চৌধুরী, মাশুক হোসেন আহমদ, মোঃ মিফতাহ উদ্দিন চৌধুরী, মোঃ বজলুর রহমান, মমতাজউদ্দিন আহমেদ। সর্বোচ্চ ২৪ লাখ ৭৪ হাজার ২৮৩ টাকা নিয়েছিলেন বিচারপতি মাশুক হোসেন এবং সর্বনিম্ন ৭১ হাজার ৬৩০ টাকা নিয়েছেন বিচারপতি মমতাজউদ্দিন আহমদ।
একই বিষয়ে রিপোর্ট করতে গিয়ে দৈনিক সমকাল ৮ জুন ২০১১ তারিখে শেষ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে, 'নিজের ও পরিবারের অসুস্থতার কারণে বিচারপতি, সচিব, সরকারি কর্মকর্তা, সাংবাদিকসহ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ প্রধানমন্ত্রীর তহবিল থেকে সাহায্য নিয়েছেন। গত সাত বছরে তিন প্রধান বিচারপতিসহ সর্বোচ্চ আদালতের ২৪ বিচারপতি নিজের ও পরিবারের অসুস্থতার কারণে প্রধানমন্ত্রীর তহবিল থেকে অর্থ সাহায্য নিয়েছেন। আইন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, প্রধান বিচারপতি এমএম রুহুল আমিন নিয়েছেন ২১ লাখ ১৫ হাজার ৩১৬ টাকা; মোঃ তাফাজ্জালুল ইসলাম নিয়েছেন ১৫ লাখ ৭০ হাজার ৪০৮ টাকা এবং মোঃ ফজলুল করিম নিয়েছেন ৩১ লাখ ৬৯ হাজার ৪৭০ টাকা।'
প্রকাশিত রিপোর্টগুলো থেকে জানা যাচ্ছে, (ক) ২৪ জন বিচারপতি যে বিধি বা প্রথা মোতাবেক চিকিৎসা ব্যয় নিয়েছেন, বিচারপতি খায়রুল হকও সেই একই বিধি বা প্রথামাফিক চিকিৎসা ব্যয় গ্রহণ করেছেন; (খ) ২০০৪ সাল থেকে চিকিৎসা ব্যয় গ্রহণের হিসাব পর্যালোচনায় প্রতীয়মান হয় যে, বিএনপি-জামায়াত জোট আমলেও অনেক বিচারপতি সরকার থেকে চিকিৎসা ব্যয় গ্রহণ করেছেন। একই প্রথায় বর্তমান সরকারও ব্যয় নির্বাহ করছেন; (গ) চিকিৎসা ব্যয়ের মাত্রা অনুযায়ী অর্থ ছাড় দেওয়া হয়েছে_ সর্বোচ্চ ২৪,৭৪,৬৩০ টাকা দেওয়া হয়েছে আবার মাত্র ৭১,৬৩০ টাকাও একজন বিচারপতি নিয়েছেন।
এখন বিচারপতি খায়রুল হকের কেসটি খতিয়ে দেখা যাক। প্রকাশিত রিপোর্টগুলো থেকে জানা যায়, (ক) ৫ জুলাই ২০০৯ তারিখে সাবেক রাষ্ট্রপতি ও বিশিষ্ট চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. বদরুদ্দোজা চৌধুরী এই মর্মে লিখিত সুপারিশ প্রদান করেন যে, বিচারপতি খায়রুল হকের স্ত্রী মিসেস আসমা হককে স্পেশালিস্ট ট্রিটমেন্টের জন্য বিলেতের ব্রম্পটন চেস্ট হাসপাতাল অথবা ব্যাংককের বামরুনগ্রাদ লাঙ সেন্টারে প্রেরণ করা প্রয়োজন। (খ) ৭ জুলাই ২০০৯ তারিখে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক গঠিত ৪ সদস্যবিশিষ্ট বিশেষ মেডিকেল বোর্ড সিদ্ধান্তে উপনীত হন, তার চিকিৎসার উচ্চতর পরীক্ষার জন্য কোনো উন্নত দেশে প্রেরণ করা প্রয়োজন। (গ) এমতাবস্থায় সম্ভাব্য ব্যয় ১৫ হাজার মার্কিন ডলার। বিধি মোতাবেক মঞ্জুরির জন্য সুপ্রিম কোর্টের তৎকালীন প্রধান বিচারপতি সরকারের কাছে সুপারিশ করেন। (ঘ) বিলেতে খরচ বেশি বিধায় বিচারপতি খায়রুল হক ব্যাংককে চিকিৎসার সিদ্ধান্ত নেন। (ঙ) অতঃপর সরকারি অনুমোদনপ্রাপ্তির পর তিনি স্ত্রীকে ব্যাংকক বামরুনগ্রাদ হাসপাতালে প্রেরণ করেন।
এতক্ষণ রেকর্ডকৃত তথ্য সংকলন করা হলো। এখন তথ্যের আলোকে বিরোধীদলীয় নেত্রীর বক্তব্যের যথার্থতা পরীক্ষা করা যাক। (ক) খালেদা জিয়ার বক্তব্যমতে বিচারপতি খায়রুল হক যদি স্ত্রীর জন্য চিকিৎসা ব্যয় গ্রহণ করে 'টাকা নিয়ে রায় দিয়ে থাকেন', তাহলে ২০০৪ সাল থেকে বিএনপি শাসনামলে যেসব বিচারপতি অনুরূপ চিকিৎসা ব্যয় গ্রহণ করেছিলেন, তারাও কি টাকা নিয়ে খালেদা জিয়ার মর্জিমাফিক রায় দিয়েছিলেন? (খ) রিপোর্টমতে ৪ জন প্রধান বিচারপতিসহ ২৪ জন বিচারপতি একই প্রক্রিয়ায় একই বিধিমতে নিজ বা পরিবারের চিকিৎসা ব্যয় সরকারের কাছ থেকে গ্রহণ করেছেন। তাহলে ২৩ জনকে বাদ দিয়ে শুধু বিচারপতি খায়রুল হকের নাম ধরে অভিযোগ উত্থাপন করে খালেদা জিয়া কি শিষ্টাচার লঙ্ঘন করেননি? (গ) বিধি মোতাবেক মঞ্জুরিকৃত চিকিৎসা ব্যয় গ্রহণ করা কি কোনো অবৈধ সুবিধা গ্রহণ? তাহলে ক্ষমতায় থাকাকালে তিনি কেন মঞ্জুরি প্রদান করে একই কাজ করেছিলেন?
বিরোধী নেত্রী কিন্তু সরকারের প্রধানমন্ত্রীর মতোই একটি ইনস্টিটিউশন। তিনি ব্যক্তিমাত্র নন। তিনি যে অসত্য, অশালীন এবং কুরুচিপূর্ণ ব্যক্তিগত আক্রমণ করেছেন তা কি তার পদমর্যাদার পরিপন্থী নয়? তার মতো প্রবীণ রাজনীতিক দু'বারের প্রধানমন্ত্রীর এ ধরনের বাক স্খলন কি শোভা পায়? প্রধান বিচারপতির মতো একজন অরাজনৈতিক, বিজ্ঞ এবং ন্যায়ানুগ ব্যক্তির বিরুদ্ধে নাম উচ্চারণ করে যে আক্রমণাত্মক অসত্য অভিযোগ খালেদা জিয়া এনেছেন, তা একটি ধ্বংসাত্মক কার্যের পর্যায়ে পড়ে। একজন সাবেক সরকারপ্রধান এবং ভবিষ্যতের সম্ভাব্য প্রধানমন্ত্রীর আচরণ যদি এমন কুৎসিত হয় তাহলে তার ওপর নির্ভরতা অর্পণের সুযোগ সংকীর্ণ হয়ে আসে। দুর্ভাগ্য রজানীতির। দুর্ভাগ্য দেশের।
বোঝার ভুল না হলে, খালেদা জিয়ার ইঙ্গিত ছিল টাকার বিনিময়ে পঞ্চম সংশোধনী মামলার রায় দেওয়া নিয়ে। বিচারপতি খায়রুল হক পঞ্চম সংশোধনী বাতিলের রায়টি দিয়েছিলেন বিএনপি শাসনামলে। খালেদা জিয়া তখন প্রধানমন্ত্রী ও সরকার প্রধান। তাহলে তার কথামতো তিনি নিজেই কি টাকা দিয়েছিলেন রায় লেখার জন্য! কারণ তখন তিনিই তো সরকার প্রধান। ওই 'রায় প্রদানের জন্য সরকার টাকা দিয়ে থাকলে' তো তারই দেওয়ার কথা এবং তারই জানার কথা। তিনি বিষয়টি ব্যাখ্যা করবেন কি?
বিচারপতি খায়রুল হকের উলি্লখিত রায়ের বিরুদ্ধে সরকার আপিল করেছিল। তদনুযায়ী আপিল মামলাটির বিচারকার্য চলে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে। আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে আপিল শুনানি চলেছিল। উল্লেখ্য, বিচারকারী বেঞ্চে খায়রুল হক ছিলেন না। যেহেতু আগের রায়টি তার দেওয়া ছিল, সে জন্য আপিল বেঞ্চে তার অবস্থান ছিল না। স্বভাবত তার কোনো ভূূমিকাও ছিল না। বিস্তারিত শুনানি শেষে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ পঞ্চম সংশোধনী বাতিলের পক্ষেই রায় ঘোষণা করেন, যে রায়ে বিচারপতি খায়রুল হকের কোনো সম্পৃক্ততা ছিল না। এ অবস্থায় পঞ্চম সংশোধনী বাতিলের চূড়ান্ত রায়ের জন্য খায়রুল হকের দায়ই-বা কোথায়, আর টাকাই-বা পাবেন কেন?
তাহলে খালেদা জিয়া কি অন্য কোনো মামলার কথা বলেছেন? তেমন হলে, কোন মামলার জন্য অর্থ আদান-প্রদান হয়েছে তা তাকে বলতে হবে। অভিযোগ যখন প্রকাশ্যে উচ্চারণ করেছেন, অভিযোগ প্রমাণের দায়ও তার। হয় তাকে অভিযোগ প্রমাণ করতে হবে, নচেৎ গর্হিত কাজের জন্য জনসমক্ষে ক্ষমা প্রার্থনা করতে হবে। জনগণকে 'যা বুঝাব তাই বুঝবে' এমন প্রজা না ভেবে, তাদের দায়িত্বশীল নাগরিক ভাবতে শেখা উচিত রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের।
বিজ্ঞ আদালতের আইনানুগ রায়ের ফলে জিয়াউর রহমানের হিংস্রতাপ্রসূত এবং বেআইনি পঞ্চম সংশোধনী বাতিল হওয়ায় খালেদা জিয়া ক্ষুব্ধ হয়েছেন। যেহেতু এই যুগান্তকারী সাহসী রায়টি বিচারপতি খায়রুল হক খালেদা জিয়ার শাসনামলেই কোনো প্রকার প্রভাবান্বিত না হয়ে নিঃশঙ্কচিত্তে প্রদান করেছিলেন, সে জন্যই সম্ভবত বিরোধী নেত্রীর এই ক্ষোভ ও অন্তর্জ্বালা। কিন্তু যেভাবে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন, তা বুমেরাং হয়ে তার দিকেই ছুটে যাবে। কারণ সত্য বড় কঠিন।
বাহাত্তরের মূল সংবিধানটি ছিল সবার কাছে গ্রহণযোগ্য। গণতান্ত্রিক, মানবিক এবং উচ্চ মূল্যবোধসম্পন্ন। এটি ছিল সর্বজন সমাদৃত মুক্তিযুদ্ধের চেতনাসমৃদ্ধ একটি মহান আইনি দলিল। পঁচাত্তর সালের এই পবিত্র দলিলকে 'ছুড়ে ফেলে দিয়ে', আইন ও মানবতা লঙ্ঘন করে বুলেট আর বেয়নেটের হিংস্র আক্রমণে শত শত সেনা-জনতাকে হত্যা করে, সর্বোপরি স্বাধীনতার মহানায়ক বঙ্গবন্ধু ও সহনায়ক তাজউদ্দীন আহমদ, সৈয়দ নজরুল প্রমুখকে পৈশাচিকভাবে হত্যা করে, স্বীয় স্বৈরশাসনকে পাকাপোক্ত করার জন্যই জেনারেল জিয়া এই পঞ্চম সংশোধনী এনেছিলেন, যা ছিল মূল সংবিধানের সঙ্গে সংঘাতপূর্ণ। রাষ্ট্রের বিচার বিভাগের দায়িত্বই হলো সংবিধানে সাংঘর্ষিক কিছু যুক্ত হলে, তা রহিত করা। এতদিন পর বিচার বিভাগ সে দায়িত্বই পালন করেছে। বিচারপতি খায়রুল হক এ আইনি প্রক্রিয়ার সূচনামাত্র করেছিলেন। শেষ করেছেন প্রধান বিচারপতিসহ আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ। খায়রুল হকসহ এ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণকারী কোনো বিচারকের বিরুদ্ধে এ সংক্রান্ত কারণে বিষোদ্গার করা শুধু গণতন্ত্রবিরোধী আচরণই নয়, উপরন্তু এটি হবে সংবিধানবিরোধী তথা রাষ্ট্রবিরোধী। বিরোধী দলের নেত্রী সরকারের বিরোধিতা করতে পারেন, কিন্তু সংবিধান বা রাষ্ট্রের বিরোধিতা করতে পারেন না।
এখন ফিরে তাকানো যাক রিপোর্টটির পরিবেশক দৈনিক ইত্তেফাকের সাফাই সাংবাদিকের প্রতিবেদনের দিকে। অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে তিনি লিখেছেন, 'অনুসন্ধানে জানা যায়, বিচারপতি খায়রুল হক প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে দশ লাখ ৩৭ হাজার ২৫০ টাকা গ্রহণ করেন।' কোন অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে কবে টাকা নেওয়া হয়েছে, তাও উল্লেখ করা হয়েছে। অথচ প্রতিবেদক বেমালুম চেপে গিয়েছেন টাকা গ্রহণের উদ্দেশ্য সম্পর্কে এবং খরচের খাত সম্পর্কে। রিপোর্টটি পড়লে মনে হবে, খায়রুল হক একাই টাকা নিয়েছেন, অন্য কোনো বিচারপতির প্রসঙ্গই টানেননি প্রতিবেদক। এ সাফাই সাংবাদিকের উদ্দেশ্যই ছিল বিরোধী নেত্রীর বক্তব্য 'সাবস্ট্যানশিয়েট' করা। প্রতিবেদক নিজেই যেহেতু 'অনুসন্ধান' করেছেন মর্মে উল্লেখ করেছেন, তাহলে অনুসন্ধানের অন্য বিষয়গুলো উল্লেখ করলেন না কেন? মাত্র দু'মাস আগে দৈনিক ইনকিলাব প্রথম পৃষ্ঠার লিড নিউজে এবং দৈনিক সমকাল শেষ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনে একই অনুসন্ধানী রিপোর্ট ছেপেছিল। তারা উভয়েই উলেল্গখ করেছে যে, ২১ জন (ইনকিলাব) বা ২৪ জন (সমকাল) বিচারপতি একই বিধি মোতাবেক ২ কোটি টাকার অধিক নিজ বা পরিবারের চিকিৎসা ব্যয় গ্রহণ করেছেন। ইত্তেফাকের অনুসন্ধানী প্রতিবেদক এই প্রকাশিত তথ্যটিও বাদ দিয়েছেন। এ জন্যই তিনি সাফাই সাক্ষী! তিনি হয়তো দাবি করবেন, তিনি যেটুকু লিখেছেন, ওইটুকু তো মিথ্যা নয়। খণ্ডিত তথ্য মিথ্যার পর্যায়ে পড়ে। রমজানের রোজার নির্দেশনা হলো, 'তোমরা পানাহার কর, যতক্ষণ না ফজর হয়।' পরের অংশ বাদ দিয়ে যদি বলা হয়, 'তোমরা রমজানে পানাহার কর', তাহলে অবস্থা কী দাঁড়ায়? ধর্মগ্রন্থে আছে, 'তোমরা নামাজে দাঁড়িও না, যতক্ষণ তোমরা আচ্ছন্ন থাকো।' পরের অংশ বাদ দিয়ে প্রথম অংশই শুধু উচ্চারণ করলে তো একেবারে বেশরিয়তি কাজ হবে। অতএব সাধু সাবধান! জনতার আদালতে সাফাই সাক্ষী চলে না। তাও আবার একটি জলজ্যান্ত মিথ্যা কথাকে 'সাবস্ট্যানশিয়েট' করার জন্য সাফাই প্রতিবেদন উপস্থাপন করা। দোষ যে করে আর দোষ যে ঢাকে, উভয়েই সমঅপরাধী।

খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ : ব্যাংকার ও কলাম লেখক
 

No comments

Powered by Blogger.