মনপুরায় পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধ-১০ জলদস্যু নিহত

ভোলার মনপুরার ভাসানচরে গতকাল বুধবার জাকির বাহিনীর সঙ্গে পুলিশের বন্দুকযুদ্ধে বাহিনীর প্রধান জাকিরসহ ১০ জলদস্যু নিহত হয়েছে। এ ছাড়াও গুলিতে নিহত হয়েছেন এক জেলে। গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়েছেন পুলিশ সদস্যসহ ৩ জন। এ ছাড়া জাকির বাহিনীর আস্তানায় অভিযান চালিয়ে জিম্মি থাকা ২০ জেলে, ৫টি ট্রলার ও অস্ত্রশস্ত্র উদ্ধার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার চরফ্যাশনের ঢালচর সংলগ্ন চর শাহজালাল ম্যানগ্রোভ বাগানে জলদস্যুদের অস্ত্র
তৈরির কারখানা আবিষ্কারের কয়েক ঘণ্টার মাথায় মেঘনার ভাসানচরে এ বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটল। পুলিশ সূত্র জানায়, মনপুরা থানার এসআই নুরুল আলম ও চরনিজাম ক্যাম্পের ইনচার্জ এসআই কামালের নেতৃত্বে গতকাল সকাল ১০টা থেকে কয়েক ঘণ্টাব্যাপী মেঘনার ভাসানচর এলাকায় এ অভিযান চালানো হয়। পুলিশের ২টি দল ভাসানচরের পূর্বপাশে যাওয়া মাত্রই জলদস্যু জাকির বাহিনীর সদস্যরা এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়তে থাকে। এ সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান চরনিজামের জেলে বিল্লাল। পুলিশ জানায়, ২টি ট্রলারে ১৮-২০ জন জলদস্যু ছিল।
পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধের সময় দস্যুদের একটি গ্রুপ পালিয়ে যায়। এ সময় ১০ জলদস্যু গুলিবিদ্ধ অবস্থায় মেঘনা নদী ও বনের মধ্যে ঝাঁপিয়ে পড়লে এলাকাবাসীর গণপিটুনিতে তারা মারা যায় বলে পুলিশের এসআই নুরুল দাবি করেন। নিহত ১০ জলদস্যুর মধ্যে বাহিনীর প্রধান জাকির ও বিশুকে চিহ্নিত করতে পেরেছেন স্থানীয় জেলেরা। তাদের বাড়ি সদর উপজেলার ইশিলা ও রাজাপুর গ্রামে। গুলিতে আহতরা হলেন_ এসআই নুরুল আলম, কনস্টেবল নজরুল ও জেলে কাশেম। মনপুরা থানার ওসি মিজানুর রহমান ১০ জলদস্যু নিহত হওয়ার খবর নিশ্চিত করে জানান, লাশ আনতে তিনি ঘটনাস্থলে যাচ্ছেন।
এদিকে চরফ্যাশনের সাগর মোহনার চর শাহজালাল ম্যানগ্রোভ বাগানে মঙ্গলবার দুপুরে পুলিশ ও জলদস্যুর মধ্যে দেড় ঘণ্টাব্যাপী বন্দুকযুদ্ধ হয়েছে। এ সময় গভীর বনে জলদস্যুদের আস্তানায় দেশীয় অস্ত্র তৈরির কারখানার সন্ধান পায় পুলিশ। উদ্ধার করা হয় ২টি রাইফেল, গুলিসহ বিপুল পরিমাণ অস্ত্র তৈরির সরঞ্জাম। এতে আহত হন পুলিশের ৫ সদস্য। তবে কোনো জলদস্যুকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।
জেলেদের জালে ৭ লাশ!
পাথরঘাটা (বরগুনা) প্রতিনিধি জানান, পাথরঘাটা থেকে ১৬০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরের চট্টগ্রামখাড়িতে মাছ ধরার সময় বরগুনার পাথরঘাটার জেলেদের জালে আটকা পড়ে ৭টি লাশ। আইনি জটিলতার কারণে তাদের আবার ওখানেই ভাসিয়ে দেওয়া হয়। পাথরঘাটার এফবি তারেক ট্রলারের মাঝি ছত্তার, এফবি জ্যোৎস্না-১ ট্রলারের মাঝি নুর আলম এবং এফবি জ্যোৎস্না-২ ট্রলারের মাঝি সালামসহ ৩টি ট্রলারের ৪৫ জেলে সোমবার বিকেলে পাথরঘাটা বিএফডিসি মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে ফিরে এসে বরগুনা জেলা ট্রলার মালিক সমিতিকে এ তথ্য জানান।
পাথরঘাটা ট্রলার শ্রমিক ইউনিয়ন সভাপতি মান্নান মাঝি জানান, সাগরে জেলেদের লাশ ভাসতে দেখে ভয়ে প্রায় ২০-২৫টি ট্রলার মাছ না ধরে তীরে ফিরে এসেছে। কোস্টগার্ডের দক্ষিণ জোটের পাথরঘাটা স্টেশন কমান্ডার লে. হারুন অর রশিদ জানান, বিষয়টি তিনি শুনেছেন এবং লাশগুলো যাতে দ্রুত সাগর থেকে তোলা যায় সে ব্যাপারে বিভিন্ন বেইজে যোগাযোগ করা হচ্ছে।
বরিশাল রেঞ্জের ডিআইজি ডা. আবদুর রহিম সমকালকে জানান, জলদস্যুদের সঙ্গে পুলিশের গুলি বিনিময়কালে ঘটনাস্থলে চারজন নিহত হয়। এ ছাড়া গণপিটুনিতে নিহত হয় ছয় জলদস্যু। অন্যদিকে জলদস্যুদের গুলিতে এক জেলেও নিহত হন। ঘটনাস্থল থেকে দুটি কাটা রাইফেল, দেশি অস্ত্র ও গুলি উদ্ধার করা হয়।

No comments

Powered by Blogger.