বিমানের ককপিটে মাশরাফি

ঢাকা প্রিমিয়ার লীগে পুরনো দল আবাহনী আগ্রহ দেখাইনি। মাশরাফি বিন মর্তুজা নিজেই তাই যোগাযোগ করলেন ঘরোয়া ক্রিকেটের দামি দল বিমানের সঙ্গে। দেশের ক্রিকেটের অন্যতম পৃষ্ঠপোষক এ সংস্থাটি এগিয়ে এলো। ব্যস, আর বিলম্ব নয়। দলবদলের প্রথম দিনেই বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামের সিসিডিএম অফিসে এসে নাম লেখালেন বিমানে। কথা বললেন মিডিয়ার সঙ্গে প্রশ্ন : দলবদলে মাশরাফি সবসময়ই বড় নাম। বিশেষ কিছু। এবার তার ব্যতিক্রম?
মাশরাফি : এ মুহূর্তে আমার প্রথম চ্যালেঞ্জ জাতীয় দলে ফেরা। অনেক টাকা কামিয়েছি। এখন ব্যক্তিগত চাহিদা জাতীয় দলে ফেরা। অবশ্যই একটা বিষয় একটু খারাপ লেগেছে, সব সময়ই দলবদলের সময় আলাদা একটি অনুভূতি আমার মধ্যে কাজ করে। এবার তেমন কিছু না থাকলেও মন্দ লাগছে না। বিমান যে আমাকে খেলার সুযোগটা দিয়েছে তাতেই আমি ভীষণ খুশি।
প্রশ্ন : আবাহনী ছাড়ছেন_ সিদ্ধান্তটি কখন নিলেন?
মাশরাফি : আসলে আমি নিজেই মঙ্গলবার রাতে জালাল ভাইকে ফোন করেছিলাম। তাকে জানিয়েছি বিমানে খেলতে চাই। তিনি না করেননি। এখানে মনোমালিন্যের জায়গা নেই। আমিও তাদের বলেছি, আমার এ অবস্থায় দলে রাখলে আবাহনীরই ক্ষতি হবে। রাখতে চায়নি, ওসব কোনো বিষয় নয়। ক্লাব কর্মকর্তাদের ওপর সমর্থকদের চাপ থাকে। তারা ইচ্ছে করলেই অনেক কিছু করতে পারেন না। সে ক্ষেত্রে বিমানের অবস্থান অন্যরকম। ওরা আমাকে বলেছে, আমি আমার ইচ্ছামতো খেলতে পারব। এসব বিষয় আবাহনীর কর্মকর্তাদের বুঝিয়ে বলেছি। তাছাড়া বিমান পুলের ক্রিকেটার নিচ্ছে না। সে সুযোগটাও আমি নিয়েছি।
প্রশ্ন : গত পাঁচ মৌসুমে তিনবার আবাহনীকে চ্যাম্পিয়ন করেছেন। এমন একটি দল ছেড়ে আসা নিশ্চয় কঠিন সিদ্ধান্ত।
মাশরাফি : আমি তো আর এখন পেশাদার ক্রিকেটার নই। নিজেই নিজের সঙ্গে যুদ্ধ করছি। সেরা দলে খেললে বাড়তি আনন্দ পাওয়া যায়। আবাহনীতে যে ক'বছর খেলেছি শিরোপার লড়াইয়ে ছিলাম। ভালো লাগত। সব দলে খেললে চ্যালেঞ্জ থাকে।
প্রশ্ন : এবার কী হবে ...
মাশরাফি : এবার অন্যরকম চ্যালেঞ্জ। বিমান তো সবসময়ই বড় দল। সুপার লীগে খেলে। সে ক্ষেত্রে লীগে মোহামেডান-আবাহনীর বিপক্ষে বিমানের হয়ে খেলা এবং ভালো করা তো অবশ্যই আমার জন্য বড় চ্যালেঞ্জ।
প্রশ্ন : বিমানে খেলবেন_ এমন সিদ্ধান্তটি কখন নিলেন?
মাশরাফি : আসলে বিমানে খেলার সুযোগটা আমিই চেয়ে নিয়েছি। পারিশ্রমিক নিয়ে কোনো আলোচনাই হয়নি। এ মুহূর্তে জাতীয় দলে ফেরাটাই আমার চ্যালেঞ্জ। ওরা আমাকে নিতে চায়নি। আমি নিজেই খেলতে চেয়েছি। তারা সুযোগ দিয়েছে। আমি তাতেই দারুণ খুশি। টাকা-পয়সার প্রসঙ্গ আসেনি। আমি যে কয়টা ম্যাচ খেলতে চাইব, তারা সে কয়টা ম্যাচ আমাকে খেলার সুযোগ দেবে।
প্রশ্ন : এমন কেন?
মাশরাফি : আমি আসলে সে ম্যাচগুলোতে খেলতে পারব, যে ম্যাচগুলোতে বিসিবির ফিজিও বিভব সিং আমাকে খেলার অনুমতি দেবেন। আমার শারীরিক অবস্থার ওপর ভিত্তি করে তিনি ম্যাচ খেলার সিদ্ধান্ত দেবেন। এভাবে তিনি যে ক'টি ম্যাচ খেলার অনুমতি দেবেন, সে ক'টি ম্যাচই আমি খেলব।
প্রশ্ন : পুল থেকে অব্যাহতি চেয়ে আবেদন করার পরামর্শ দেওয়া হলেও তা করেননি কেন?
মাশরাফি : দেখুন, পুলে না থাকলে কী হতো, আমি হয়তো কিছু টাকা বেশি পেতাম। টাকাই কি সব? একজন মানুষের চলতে যে অর্থের প্রয়োজন তা আমার আছে। তাই ওদিকটা নিয়ে ভাবিনি। দল না পেলেও খারাপ হতো না। বরং নিজের প্র্যাকটিসটা আরও ভালো হতো। আর এখন কী হলো ... টাকা নেই তো কী হয়েছে, বিমানের মতো বড় দলে খেলছি। এ নিয়ে আমার গর্বের কমতিও নেই।

No comments

Powered by Blogger.