আবারও গোলগড়ে বিদায় আবাহনীর

দরকার ছিল জয়। কিন্তু সেই জয় এল না। ম্যাচ থাকল গোলশূন্য। এর অর্থ, এএফসি প্রেসিডেন্টস কাপ থেকে বিদায় আবাহনীর। গতবারের মতো এবারও আক্ষেপের নাম গোলগড়।
কিরগিজস্তানের দরদই বিশকেক ক্লাব এই ম্যাচ থেকে এক পয়েন্ট নিয়ে চলে গেল সেমিফাইনালে।
বৃষ্টিভেজা বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামের মাঠে দরদইয়ের জালে একবার বল পাঠিয়েছিল আবাহনী। সংঘবদ্ধ আক্রমণ থেকে ৩৯ মিনিটে ডিফেন্ডার আতিকুর রহমান (মিশু) বল জালে ঠেলতেই যখন উল্লাসে মাতল গোটা স্টেডিয়াম, তখনই সবাইকে অবাক করে থাইল্যান্ডের সহকারী রেফারির পতাকা (আগের ম্যাচে ভারতীয় সহকারী রেফারির কিছু সিদ্ধান্ত ছিল আবাহনীর বিপক্ষে)। আতিকুরের হ্যান্ডবল! দক্ষিণ কোরিয়ার রেফারি কিম সান গোলের বাঁশি বাজিয়েও গোল বাতিল করেন হ্যান্ডবলের দায়ে!
ম্যাচের পর আকাশি-নীলদের কোচ অমলেশ সেন দাবি করলেন, ‘ওটা গোল ছিল। সহকারী রেফারি অনেক দূরে থেকে কীভাবে দেখলেন হ্যান্ডবল হয়েছে! আমাদের ন্যায্য গোল দেওয়া হয়নি। এ অবস্থায় আমরা আর কী করতে পারি!’
দরদইয়ের রাশিয়ান কোচ সার্গেইকে সংবাদ সম্মেলনে দেখে মনে হলো, এই মাত্র বড় একটা ম্যাচ জিতে উঠেছেন। ড্র-টাই তাঁর দলের কাছে জয়ের সমান। আবাহনীর গোল বাতিল না হলে তাঁর দলের এএফসি কাপ মিশন শেষই হয়ে যেতে পারত ঢাকায়। ব্যাপারটা মনে করিয়ে দিলে বললেন, ‘রেফারি তাঁর কাজ করেছেন। আমরা আমাদের খেলা খেলেছি।’
আগের দুটি ম্যাচের চেয়ে এদিন আবাহনী অনেকটা গোছানো ফুটবল খেলেছে। প্রথমার্ধে বেশ চাপ তৈরি করেছে শক্তিশালী প্রতিপক্ষের ওপর। দ্বিতীয়ার্ধে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা ছিল দরইয়ের। বেশ কয়েকবার আক্রমণেও উঠেছে। তুল্যমূল্য বিচারে ম্যাচে প্রাধান্য ছিল আবাহনীরই। যা দেখে কিরগিজ কোচ এদিন প্রশংসা করে গেলেন বাংলাদেশ লিগ চ্যাম্পিয়নদের। এই কোচই আবাহনীর প্রথম ম্যাচ দেখে তাচ্ছিল্যের সুরে বলেছিলেন, ‘আবাহনী ফুটবল খেলেছে নাকি!’
সেই আবাহনী কাল দরদই কোচকে দেখিয়েছেন, ফুটবল খেলতে জানে তারা। কিন্তু আবাহনী একটা সমস্যায় পড়ে গেল শেষ দিকে। আঘাত পাওয়ায় ৮০ মিনিটে উঠে যেতে হলো স্ট্রাইকার এনামুলকে। আক্রমণে তখন ইব্রাহিম একা। তার পরও ঘানাইয়ান স্ট্রাইকার গোলের চেষ্টা করে গেছেন। কিন্তু ভাগ্যও সহায় ছিল না।
তিন ম্যাচে ৫ পয়েন্ট আবাহনীর। তবে রানার্সআপ হওয়ার প্রশ্নে গ্রুপের (এ গ্রুপ) সর্বনিম্ন দল চীনা তাইপের হাসুসের বিপক্ষে পাওয়া এক পয়েন্ট বিবেচনায় আসবে না। বাকি দুই ম্যাচে চার পয়েন্ট, গোলগড় প্লাস দুই। ওদিকে সি গ্রুপের দল তুর্কমেনিস্তানের ইতোরও ৪ পয়েন্ট, তবে তাদের গোলগড় প্লাস ৮। ইতো তাদের দুর্বল গ্রুপ প্রতিপক্ষ ভুটানের ড্রুকস্ট্রার্সকে ৮ গোলে হারিয়েছে।
আবাহনী এখন শুধুই দর্শক এই টুর্নামেন্টে। ঘরের মাঠে টানা দুবার গোলগড়ে বিদায় নেওয়ার আক্ষেপটাও সঙ্গী!

No comments

Powered by Blogger.