ওভারব্রিজ-আন্ডারপাস ব্যবহার না করলে জেল-জরিমানা

নিয়ম না মেনে রাজধানীতে রাস্তা পারাপার হলে জেল-জরিমানা কার্যকরের উদ্যোগ নিয়েছে মহানগর পুলিশ। আগামী মঙ্গলবার থেকে ঢাকার প্রধান সড়কে বসবে মোবাইল কোর্ট। এর আগে গতকাল থেকে শুরু হয়েছে নাগরিকদের সচেতন করার কার্যক্রম। নির্ধারিত ওভারপাস ও আন্ডারপাস ব্যবহার না করে যত্রতত্র রাস্তা পার হলে ভ্রাম্যমাণ আদালত ২০০ টাকা জরিমানা ও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেবে। ডিএমপি’র এ কার্যক্রম সম্পর্কে গতকাল সংবাদ সম্মেলন করে গণমাধ্যমকে অবহিত করেন কমিশনার বেনজীর আহমেদ। তিনি বলেন, ঢাকা শহরের রাস্তায় বিশৃঙ্খলা বিরাজ করছে। অদক্ষ চালক ও ফিটনেসবিহীন গাড়ির কারণে ঘটছে দুর্ঘটনা। আবার পথচারীরা ফুটওভার ব্রিজ ও আন্ডারপাস ব্যবহার না করে রাস্তার যেখান-সেখান দিয়ে পার হচ্ছেন। এতে যেমন বাড়ছে দুর্ঘটনা, পাশাপাশি সৃষ্টি হচ্ছে যানজট। তিনি বলেন, রূপসী বাংলা হোটেল থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত রাস্তায় যে সব পথচারী ফুটওভারব্রিজ ও আন্ডারপাস ব্যবহার করবেন না তাদেরকে ভ্রাম্যমাণ আদালত ২০০ টাকা জরিমানা ও ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেবে। আগামী ২৫শে নভেম্বর থেকে সাত দিন এ কর্মসূচি চলবে।
বেনজীর আহমেদ বলেন, ঢাকা এখন মেগাসিটি। দিন দিন মানুষ যেমন বাড়ছে তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে গাড়ির সংখ্যা। কিন্তু, রাস্তা আর প্রশস্ত হচ্ছে না। যেখানে সেখানে বাস থামিয়ে যাত্রী নামানো হচ্ছে। এর মধ্যে পথচারীরা রাস্তার যেখান সেখান দিয়ে পার হচ্ছেন। জীবনের কোন পরোয়া করছেন না। যেখানে-সেখানে গাড়ি থামিয়ে যাত্রী নামানো হচ্ছে। পাশে থাকা ফুটওভারব্রিজ ও আন্ডারপাস ব্যবহার করেন না। এতে দুর্ঘটনার পাশাপাশি যানজট সৃষ্টি হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, এমন অবস্থায় রাস্তায় গাড়ির গতি কমছে। নাগরিকদের সময় নষ্ট হচ্ছে। দুর্ভোগে পড়ছে সাধারণ মানুষ। এভাবে চলতে পারে না। এর পরিবর্তন হওয়া দরকার। এ দুর্ভোগ দূর হবে তখনই যখন নাগরিকরা সচেতন ও ট্রাফিক আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হবে। শুধু আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দিয়ে একার পক্ষে এ দুর্ভোগ দূর করা সম্ভব নয়।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, রাস্তা যখন ব্যস্ত থাকে ওই সময় নাগরিকদের সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে পুলিশের পক্ষ থেকে রূপসী বাংলা থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত ক্রসিংগুলোতে ২৩ ও ২৪শে নভেম্বর লিফলেট বিতরণ করে প্রচার-প্রচারণা চালানো হবে। ২৫শে নভেম্বর থেকে সাতদিন চলবে অভিযান। তিনি বলেন, কাউকে শাস্তি দেয়ার জন্য এই উদ্যোগ নয়। এটি প্রতীকী উদ্যোগ যাতে রাজধানীর নাগরিকরা সচেতন হন।
বনানী ফুটওভারব্রিজে চলন্ত সিঁড়ির মতো আর কোন ফুটওভারব্রিজে চলন্ত সিঁড়ি দেয়া হবে কিনা সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, এ কাজটি করে থাকে মূলত সিটি করপোরেশন। পুলিশের পরামর্শে তারা বনানী ফুটওভারব্রিজে চলন্ত সিঁড়ি বানিয়েছেন। এতে অনেকেই ফুটওভারব্রিজ ব্যবহার করছেন। বৃদ্ধ নাগরিকদের সুবিধা হয়েছে। আরও ফুটওভারব্রিজে যেন চলন্ত সিঁড়ি ও লিফট দেয়া হয় এ জন্য সিটি করপোরেশনকে পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হবে। এক্ষেত্রে তিনি বেসরকারি উদ্যোক্তাদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
সংবাদ সম্মেলনে এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ডিএমপি’র অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার আবদুল জলিল মণ্ডল, মিলি বিশ্বাস, ইব্রাহিম ফাতেমী, শেখ মো. মারুফ হাসান, ডিএমপি’র গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মো. মাসুদুর রহমান ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

No comments

Powered by Blogger.