স্বল্পোন্নত দেশগুলোর বাণিজ্য সুবিধা বাড়ানোর কার্যক্রম সন্তোষজনক নয় -সিপিডি

গত বিশ্ববাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) ইন্দোনেশিয়ার বালি সম্মেলনে যে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল সেগুলো বাস্তবায়নে খুব একটা অগ্রগতি নেই। বিশেষ করে স্বল্পোন্নত দেশগুলোর বাণিজ্য সুবিধা বাড়ানোর কার্যক্রম সন্তোষজনক নয়। শুধু তাই নয়, বৈশ্বিক ও অভ্যন্তরীণ নীতিমালা যথাযথভাবে বাস্তবায়ন না করায় বাংলাদেশসহ স্বল্পোন্নত দেশগুলোর অগ্রগতি দৃশ্যমান হচ্ছে না। বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) আয়োজিত সংলাপে বক্তারা এসব কথা বলেন।  গতকাল রাজধানীর একটি হোটেলে ‘রিক্যাপচারিং দ্য মোমেনটাম ইন দ্য পোস্ট-বালি প্রোসেস অব দ্য ডব্লিউটিও’ নিয়ে সেমিনারের আয়োজন করা হয়। সিপিডি’র বিশেষ ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যের সঞ্চালনায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিপিডি’র নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক মুস্তাফিজুর রহমান। আলোচনায় অংশ নেন, সিপিডি’র ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক রেহমান সোবহান, অধ্যাপক আনোয়ার হুদা, রিচার্ড কানিং হাম প্রমুখ। সেমিনারটি আয়োজন করে সিপিডি ও ফ্রিডরিস এবেট্রো স্টিটাং। সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও তিনি উপস্থিত হননি।
বক্তারা বলেন, উন্নত বিশ্বের বাজারে স্বল্পোন্নত দেশগুলোর পণ্যের প্রবেশাধিকার সুবিধা বাড়ানোসহ, শুল্কমুক্ত সুবিধা বাড়ানোর লক্ষ্য থাকলেও তা কাঙ্ক্ষিত হারে হয়নি। তবে সম্প্রতি ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে খাদ্য নিরাপত্তা বিষয়ক যে সমঝোতা হয়েছে, এর ফলে বালি সম্মেলনের সিদ্ধান্তগুলো বাস্তবায়ন প্রক্রিয়াকে সহজ করবে।
দেবপ্রিয় বলেন, ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে খাদ্য নিরাপত্তা বিষয়ে যে আলোচনা হয়েছে তাতে বালি প্যাকেজের অগ্রগতি ত্বরান্বিত করবে বলে মনে হচ্ছে। তবে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) বিকল্প কিছু সংস্থা গড়ে উঠেছে। তাদের মাধ্যমেও স্বল্পোন্নত দেশগুলোর অগ্রগতি কিছুটা হলেও দেখা যাচ্ছে।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিপিডি’র নির্বাহী পরিচালক ড. মোস্তাফিজুর রহমান। তিনি বলেন, এলডিসিভুক্ত ৪৯টি দেশের মধ্যে ৩৪টি দেশ বালি প্যাকেজে অংশগ্রহণ করেছে। এক বছরের মাথায় এর মধ্যে মাত্র ৮টি দেশের সামান্য অগ্রগতি হয়েছে।
মুক্ত আলোচনায় বক্তারা বলেন, ১২ বছর আগে ডব্লিউটিও’র দোহা রাউন্ডের সিদ্ধান্তগুলো এখনও বাস্তবায়ন হয়নি। এর মধ্যে বিশ্বে অনেক পরিবর্তন এসেছে। বিশেষ করে অর্থনীতিতে সেবাখাতের অবদান উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। চীন ও ভারতের অনেক উন্নতি হয়েছে। বিশ্বের অনেক দেশ ডব্লিউটিও’র চুক্তির বাইরেও দ্বিপাক্ষিক ও বহুপাক্ষিক বাণিজ্যিক সম্পর্ক গড়ে তুলেছে। কিন্তু ডব্লিউটিও’র বিভিন্ন পর্যায়ের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ায় লাভবান হচ্ছে না স্বল্পোন্নত দেশগুলো। এ পরিস্থিতির উন্নতির জন্য বহুপাক্ষিক বাণিজ্যের নীতিমালা সংশোধনসহ স্বল্পোন্নত দেশগুলোর অভ্যন্তরীণ নীতিমালারও পরিবর্তন প্রয়োজন, তা না হলে স্বল্পোন্নত দেশগুলোর জন্য যে সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে তা হাতছাড়া হয়ে যেতে পারে।

No comments

Powered by Blogger.