নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত বাড়ছে মানুষের দুর্ভোগ

সিরাজগঞ্জের যমুনা নদীর পানি গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৫ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে জেলার ৩৫টি ইউনিয়নের লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। নদনদীর পানি কমতে থাকায় কুড়িগ্রাম ও দিনাজপুরের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে।
তবে পানিবন্দী মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে।
নীলফামারীতে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও তিস্তার পানির প্রবল চাপে একটি বাঁধ ভেঙে নতুন করে পানিবন্দী হয়ে পড়েছে দেড় হাজার পরিবার।
সিরাজগঞ্জ: পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় যমুনার পানি ৫ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পাওয়ায় শাহজাদপুর, চৌহালী, উল্লাপাড়া, কাজীপুর, তাড়াশ, বেলকুচি ও সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার ৩৫টি ইউনিয়নের লক্ষাধিক মানুষ নতুন করে পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। শাহজাদপুর উপজেলার বিস্তীর্ণ গোচারণভূমি তলিয়ে যাওয়ায় গবাদিপশুর মালিকেরা বিপাকে পড়েছেন। চৌহালী উপজেলার বোয়ালকান্দি থেকে পাথরাইল পর্যন্ত এবং শাহজাদপুর উপজেলার জালালপুর ইউনিয়নের ভেকায় পাঁচ শতাধিক ঘরবাড়ি ও শত শত একর আবাদি জমি যমুনায় বিলীন হয়েছে। চৌহালী উপজেলা পরিষদ ভাঙন এলাকা থেকে মাত্র ৫ থেকে ১০ মিটার দূরে অবস্থান করায় জরুরি কাগজপত্র সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
কুড়িগ্রাম: গত ২৪ ঘণ্টায় ধরলার পানি ৩৫ সেন্টিমিটার কমলেও এখনো বিপৎসীমার কাছাকাছি অবস্থান করছে। অপরদিকে ব্রহ্মপুত্রে পানি ১১ ও তিস্তায় ৩৭ সেন্টিমিটার পানি কমেছে। পানি কমার সঙ্গে ভাঙন বেড়েছে। সদর উপজেলার ভোগডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ছাইদুর রহমান ও পাঁচগাছি ইউপির চেয়ারম্যান আমির হোসেন জানান, দুর্গত মানুষ বাড়িঘর ছেড়ে বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধ, বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্র ও উঁচু জায়গায় আশ্রয় নিয়েছে।
নীলফামারী: নীলফামারীতে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও তিস্তার পানির প্রবল চাপে ডিমলার বাইশপুকুর গ্রামে বন্যানিয়ন্ত্রণ ক্রস বাঁধ ভেঙে প্রায় দেড় হাজার পরিবার নতুন করে পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। ডিমলার খালিশাচাঁপানী ইউপির চেয়ারম্যান শামসুল হুদা জানান, গত কয়েক দিনে তাঁর ইউনিয়নের ৮০০ পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হলেও বাঁধটি ভাঙার কারণে আরও এক হাজার পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। শুক্রবার ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর জন্য তিন মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ পাওয়া গেছে, যা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই সামান্য।
দিনাজপুর: দিনাজপুরের পুনর্ভবা, আত্রাই, ঢেপা, ইছামতী ও বোঁচাগঞ্জ উপজেলায় টাঙ্গন নদের পানি কমতে শুরু করায় সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. মোখলেছুর রহমান জানান, বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় ঘরবাড়ি ছেড়ে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও রাস্তায় আশ্রয় গ্রহণকারী দুর্গত ব্যক্তিরা বাড়িতে ফিরতে শুরু করেছেন। দিনাজপুর-৩ (সদর) আসনের সাংসদ ইকবালুর রহিম গত শুক্র ও গতকাল শনিবার সদর উপজেলার বন্যাদুর্গতদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করেছেন। দিনাজপুর ২ (বিরল-বোঁচাগঞ্জ) আসনের সাংসদ ও আওয়ামী লীগের রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী গত শুক্রবার বোঁচাগঞ্জ উপজেলার বন্যাদুর্গতদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করেছেন।

No comments

Powered by Blogger.