পাকিস্তানে আগস্টে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন!

পাকিস্তানের বর্তমান প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারির মেয়াদ শেষ হবে আগামী ৮ সেপ্টেম্বর। মেয়াদের শেষ দিন পর্যন্ত হয়তো ক্ষমতায় থাকবেন তিনি। তবে তার উত্তরসূরি নির্বাচন নিয়ে তোড়জোড় শুরু হয়ে গেছে।
আগামী আগস্টের প্রথম সপ্তাহেই প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হতে পারে। নির্বাচন কমিশনের (ইসি) জ্যেষ্ঠ সদস্য রিয়াজ কায়ানি গত শুক্রবার এ কথা জানিয়েছেন।
অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি রিয়াজ কায়ানি জানান, পাকিস্তানের সংবিধানের ৪১(৪) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী ৮ আগস্টের মধ্যে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে। ওই অনুচ্ছেদে বলা আছে, প্রেসিডেন্টের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগের ৬০ দিনের মধ্যে অথবা মেয়াদ শেষ হওয়ার পরবর্তী ৩০ দিনের মধ্যে নির্বাচন হবে। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে নির্বাচন কমিশনকে কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে কি না- এ প্রশ্নের জবাবে কায়ানি বলেন, এ রকম কোনো তথ্য তাঁর জানা নেই। তবে ইসি সংবিধানের নিয়ম মানতে বাধ্য। সে অনুযায়ী ২০ জুলাইয়ের আগে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে। তবে পাকিস্তানের এক্সপ্রেস ট্রিবিউন পত্রিকা দাবি করেছে, সরকার ইতিমধ্যে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার জন্য কমিশনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
গত ১১ মের পার্লামেন্ট নির্বাচনে পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) ভরাডুবি হয়েছে। ইতিমধ্যে আগামী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা না করার ঘোষণা দিয়েছেন জারদারি। তবে পিপিপির মুখপাত্র মাখদুম আমিন ফাহিম বলেন, 'দল এখনো প্রার্থী ঠিক করেনি। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর যত দ্রুত সম্ভব আমরা প্রার্থীর নাম ঘোষণা করব।'
তিন সপ্তাহের ব্যক্তিগত সফরে শুক্রবার দুবাই গেছেন জারদারি। সেখান থেকে তাঁর লন্ডনে যাওয়ার কথা। প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র ফরহাতুল্লাহ বাবর বলেন, সন্তাদের সঙ্গে দেখা করতে দুবাই গেছেন জারদারি। সেখান থেকে লন্ডনে যাবেন আরেক মেয়ের সঙ্গে দেখা করতে। জারদারি আর দেশে ফিরবে না- এ ধরনের গুজব নাকচ করে দিয়ে বাবর বলেন, 'কেন তিনি দায়িত্ব থেকে সরে দাড়াবেন? পাঁচ বছরের মেয়াদ শেষের এক দিন বাকি থাকতেও তিনি দায়িত্ব ছাড়বেন না।' তবে এক সূত্র জানিয়েছে, জারদারির মেয়াদ শেষের আর মাত্র আট সপ্তাহ বাকি। এই সময়টাই তিনি দেশে থেকেও বিদেশে থাকার ব্যাপারে বেশি আগ্রহী।
পাকিস্তানে জনগণের সরাসরি ভোটে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হয় না। পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ সিনেট, নিম্নকক্ষ জাতীয় পরিষদ এবং চার প্রাদেশিক পরিষদ মিলে গঠন করা হয় ইলেকটোরাল কলেজ। এ কলেজের এক হাজার ১৭০ সদস্যদের ভোটে পাঁচ বছরের মেয়াদে নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন।
গত ১১ মের পার্লামেন্ট নির্বাচনে নওয়াজ শরিফের নেতৃত্বাধীন পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজ (পিএমএল) বিপুল ভোটে জিতে সরকার গঠন করেছে। স্বাভাবিকভাবেই প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ এবার তাঁর পছন্দের প্রার্থীকেই প্রেসিডেন্ট বানাতে চাইবেন। যদিও পিএমএল-এন এখনো প্রেসিডেন্ট পদে সরাসরি কারো নাম প্রস্তাব করেনি।
এদিকে জারদারির পাশাপাশি এ বছর সেনাপ্রধান জেনারেল আশফাক পারভেজ কায়ানি ও প্রধান বিচারপতি ইফতিখার মোহাম্মদ চৌধুরীর মেয়াদও শেষ হচ্ছে। কায়ানির মেয়াদ শেষ হবে অক্টোবরে। ইফতিখারের মেয়াদ শেষ হবে নভেম্বরে। সূত্র : ডন।

No comments

Powered by Blogger.