ঢাকায় যদি হতো! by রানা আব্বাস

৮ জুন মেক্সিকো সিটিতে পালিত কর্মসূচিটির খবর যারা দেখেছেন, বিস্ময়ে বিমূঢ় হয়েছেন! এতে প্রায় ২ হাজার সাইক্লিস্ট অংশগ্রহণ করেন। অভিনব কায়দায় 'ওয়ার্ল্ড ন্যাকেড বাইক রাইড ডে' পালন করেন তারা।
অংশগ্রহণকারী প্রায় সবাই নগ্ন কিংবা অর্ধনগ্ন অবস্থায় শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়কে সাইকেল চালান! স্বাভাবিকভাবে এ ধরনের কর্মসূচির শালীনতা নিয়ে প্রশ্ন উঠবে। প্রশ্ন উঠবে আয়োজক ও অংশগ্রহণকারীদের মানসিক সুস্থতা নিয়েও। তবে অংশগ্রহণকারীরা এসব প্রশ্নের থোড়াই কেয়ার করেন। নইলে এমন 'দুঃসাহসিক' কর্মসূচিতে কি অংশগ্রহণ করা যায়! আয়োজকরা বলছেন, এটি এক ধরনের প্রতিবাদ কর্মসূচি। প্রতিবাদ বেপরোয়া গাড়িচালক ও কার্বন ডাই-অক্সাইড নির্গমনকারীদের বিরুদ্ধে।
প্রতিবাদকারী অনেকের শরীরে লেখা ছিল, 'মোর বাইসাইকেলস, লেস পলিউশন' (অধিক বাইসাইকেল, কম দূষণ); 'দ্য সিটি ইজ ফর এভরিওয়ান, লেট বাইকস পাস' (শহর সবার, সাইকেল চলতে দাও)। মেক্সিকো সিটিতে নিরাপদে চলাফেরা খুবই কঠিন। একজন অংশগ্রহণকারী বলেছেন, 'ঘর থেকে বেরিয়ে নিরাপদে বাড়ি ফেরার নিশ্চয়তা নেই এ শহরে।' এ অভিনব প্রতিবাদ প্রথম শুরু হয়েছিল ২০০৪ সালের ১২ জুন, কানাডার ভ্যাংকুভারে। এ পর্যন্ত বিশ্বের প্রায় ২৯টি শহরে এ প্রতিবাদ কর্মসূচি আয়োজন করা হয়েছে।
আমাদের ঢাকায় যদি এমন কর্মসূচি আয়োজন করা হয়, তাহলে অবস্থা কী দাঁড়াবে_ তা নিশ্চয় অনুমেয়! সেটি অবশ্য সুদূরপরাহত সম্ভাবনা। কেউ হয়তো চাইবে না এমন 'নগ্ন কর্মসূচি' আয়োজন করা হোক। তবে শালীনভাবে সাইক্লিস্টরা প্রতিবাদ কর্মসূচি আয়োজন করতে পারেন। গত দু-তিন বছরে ঢাকায় সাইকেলের জনপ্রিয়তা বেড়েছে অনেক। এখন অনেকেই ব্যস্ত সড়কে দিব্যি সাইকেল চালিয়ে যাতায়াত করছেন। নিরাপত্তার দিক দিয়ে ঢাকা শহর নিশ্চয় মেক্সিকো সিটি থেকে খুব একটা এগিয়ে থাকবে না। মেক্সিকো সিটি বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় দূষিত শহর হলে ঢাকার অবস্থান ঠিক তার পরেই। ফলে মেক্সিকো সিটিতে 'সাইকেল আন্দোলন' হলে, ঢাকায় কেন নয়? সাইক্লিংয়ের উপকারিতা নিয়ে নতুন করে কিছু বলার নেই। স্বাস্থ্য, অর্থনীতি ও পরিবেশ_ সব দিক দিয়েই সাইক্লিংয়ের উপকারিতা অতুলনীয়। সাইকেল নিয়ে আমাদের ব্যক্তিগত স্মৃতিও কি কম? ঢাকা শহরে নিরাপদে সাইকেল চালানোর দাবিতে ভিন্ন রকমের কোনো কর্মসূচি (মেক্সিকো সিটির মতো ঠিক নয়) কি আয়োজন করা যায় না?
স সাংবাদিক

No comments

Powered by Blogger.