ভোক্তাদের আচরণে পরিবর্তন নেই ব্যবসায়ী নেতাদের প্রচারণার সুফল মেলেনি

একসঙ্গে পুরো রোজার বাজার না করতে এবার আগেভাগেই পরামর্শ দিয়েছিলেন ব্যবসায়ী নেতা ও বাজার তদারকি দলের কর্মকর্তারা। এমন প্রচারণার সুফল মেলেনি। রোজার তিন দিন আগে থেকেই ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড় ছিল খুচরা বাজারে।
ক্রেতাদের এমন আচরণকে পুঁজি করে এবার পেঁয়াজের দাম বেড়ে গেছে অস্বাভাবিক। বেড়েছে টমেটো, কাঁচা মরিচ, বেগুনের দামও।
তবে রোজা শুরুর পর এখন ক্রেতার হার কমছে। ফলে পণ্যের দামও কমতে শুরু করেছে। খুচরা ও পাইকারি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।
অন্যদিকে ছোলা, চিনি, মটর ডাল, মসুর ডাল ও ভোজ্যতেলের দাম স্থিতিশীল আছে। চাহিদার অন্তত দুই থেকে আড়াই গুণ বাড়তি সরবরাহ থাকায় এসব পণ্যের দাম বাড়েনি বলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা মন্তব্য করেন।
চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, ‘ক্রেতার আচরণের ওপরও বাজারে পণ্যের দাম ওঠানামা করে।
এ কারণে রোজার আগেই আমরা ক্রেতাদের বারবার পরামর্শ দিয়েছিলাম অল্প অল্প করে রোজার বাজার করতে। কিন্তু অনেকে তা শোনেননি।’
চেম্বার সভাপতির মতে, ক্রেতাদের আচরণ পরিবর্তন হলে বাজারে বাড়তি চাপ তৈরি হয় না। তাই কেউ বাড়তি সুযোগও নিতে পারে না। এর পরও এবার বেশি সরবরাহের কারণে পণ্যের দাম স্থিতিশীল আছে।
খুচরা ও পাইকারি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ক্রেতাদের চাপের কথা মাথায় রেখে খুচরা ব্যবসায়ীরা রোজা শুরুর আগে দুই সপ্তাহের পণ্য মজুদ করেন। কিন্তু রোজা শুরুর দুই দিনের মধ্যে এসব পণ্যের সিংহভাগই বিক্রি হয়ে গেছে। এখন ক্রেতার চাপ কমে যাওয়ায় পাইকারি বাজারেও খুচরা বিক্রেতাদের চাপ কমছে। ফলে পণ্যের দাম কমতে শুরু করেছে। পাহাড়তলি পাইকারি বাজারের ব্যবসায়ী মোজাহের আলম গতকাল শনিবার প্রথম আলোকে জানান, রোজার তিন দিন আগে থেকে গত শুক্রবার পর্যন্ত ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড় ছিল বাজারে। অনেকে পাঁচ থেকে ১০ কেজি করে ছোলা, ১০ থেকে ২০ কেজি করে পেঁয়াজ কিনেছেন। তবে এখন বাজারে ক্রেতা কমে গেছে। পণ্যের দামও কমছে।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ক্রেতাদের ভিড় না থাকায় কমতে শুরু করেছে রোজার পণ্যের দাম। অস্বাভাবিক হারে বাড়ার পর পাইকারি বাজারে পেঁয়াজের দাম কেজিপ্রতি দেড় টাকা করে কমেছে একদিনের ব্যবধানে। গত শুক্রবার পেঁয়াজের গড় দাম ছিল কেজি সাড়ে ৩৯ টাকা। শনিবার তা ৩৮ টাকায় নেমে এসেছে। একই হারে কমেছে ছোলার দামও। তবে খুচরা বাজারে এর প্রভাব পড়তে আরও দু-তিন দিন লাগবে বলে ব্যবসায়ীরা জানান।
এদিকে আমদানিনির্ভর নিত্যপণ্যের বেশির ভাগ স্থিতিশীল থাকলেও ক্রেতার চাপে বেড়ে গেছে ইফতারি তৈরিতে বেশি ব্যবহূত উপাদান টমেটো, কাঁচা মরিচ ও বেগুনের দাম। এর পরও বেশি দামেই এসব পণ্য কিনছেন ক্রেতারা। লালখান বাজার এলাকার বাসিন্দা মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, দাম বাড়লেও কী করব। ইফতারের মূল উপাদান হিসেবে কাঁচা মরিচ, বেগুন তো অল্প হলেও কিনতে হয়।
ব্যবসায়ীরা মনে করেন, রোজার এক সপ্তাহ পর পাইকারি ও খুচরা বাজারে যে দরে পণ্য বিক্রি হবে সেটিই আসল দর। কারণ এ সময়ে মূলত নিম্ন-আয়ের ও নিম্মমধ্যবিত্ত লোকজন রোজার বাজার করবেন। তাই তারাই স্বাভাবিক দামে পণ্য কেনার সুযোগ পাবেন।

No comments

Powered by Blogger.