প্রেসিডেন্ট হওয়া সু চির জন্য সহজ হবে না

মিয়ানমারের বিরোধীদলীয় নেত্রী অং সান সু চি দেশের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হতে চান। তবে তাঁর এ স্বপ্নপূরণের পথে প্রধান বাধা বিদ্যমান সংবিধান। এ ছাড়া আছে পারিপার্শ্বিক নানা প্রতিকূলতা।
মিয়ানমারের সংবিধান অনুযায়ী কোনো বিদেশিকে বিয়ে করলে বা সন্তানদের কেউ অন্য দেশের নাগরিক হলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি দেশের প্রেসিডেন্ট হতে পারবেন না। সু চির স্বামী প্রয়াত মাইকেল অ্যারিস ব্রিটিশ শিক্ষাবিদ। এ দম্পতির দুই সন্তানও ব্রিটিশ নাগরিক। সাবেক জান্তা সরকারের আমলে করা সংবিধানের এ ধারা পরিবর্তনের জন্য পার্লামেন্টের ৭৫ শতাংশেরও বেশি সদস্যের সমর্থন প্রয়োজন। দেশটির বর্তমান পার্লামেন্ট সদস্যদের এক-চতুর্থাংশ অনির্বাচিত সামরিক কর্মকর্তা।
বিশ্লেষকদের মতে, মিয়ানমারের বর্তমান সংবিধান সংশোধন করা না হলে ২০১৫ সালের সাধারণ নির্বাচনে সু চির দল জয়ী হলেও তিনি প্রেসিডেন্ট পদে প্রার্থী হতে পারবেন না। মিয়ানমারে পার্লামেন্ট সদস্যদের ভোটে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন।
রাজধানী নেপিডোতে অনুষ্ঠিত ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের সম্মেলনে গত ৬ জুন সাংবাদিকদের সু চি বলেন, 'আমি প্রেসিডেন্ট পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চাই। এ নিয়ে লুকোচুরির কিছু নেই।'
২০১২ সালের উপনির্বাচনে সু চির দল ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি) বিপুল বিজয় পায়। ওই বিজয়ের পথ ধরে পার্লামেন্টে যাওয়ার সুযোগ হয় সু চির। একসময় দেশে-বিদেশে সু চির ব্যাপক জনপ্রিয়তা ছিল। এখন এতে কিছুটা ভাটা পড়েছে। মিয়ানমারের সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে সংঘটিত সহিংসতার বিষয়ে চুপ থাকায় আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপকভাবে সমালোচিত হন সু চি। আর আন্তর্জাতিক এ চাপে সংখ্যালঘুদের পক্ষে মাঝেমধ্যে মুখ খুলে মিয়ানমারের সংখ্যাগরিষ্ঠদের বিরাগভাজন হয়েছেন তিনি।
মিয়ানমারের মতো একটি দেশে রাজবন্দি থেকে সু চির প্রেসিডেন্ট হওয়ার স্বপ্নপূরণের পথ খুব একটা সহজ হবে না। সামরিক বাহিনী প্রণীত সংবিধান তাঁর প্রেসিডেন্ট হওয়ার পথে প্রধান বাধা। সামরিক কর্তৃপক্ষ নিয়ন্ত্রিত পার্লামেন্ট বিদ্যমান সংবিধান সংশোধন করে সু চির পথ এত সহজেই মসৃণ করে দেবে, সে রকম ভাবা ভুল হবে বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা। সূত্র : রয়টার্স।

No comments

Powered by Blogger.