প্রসঙ্গ সিরিয়ায় হামলা মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সেনাপ্রধানের ‘মতপার্থক্য’

সিরিয়ায় বোমা হামলার কার্যকারিতা নিয়ে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি ও সামরিক বাহিনীর প্রধান জেনারেল ডেম্পসির মধ্যে মতপার্থক্য দেখা দিয়েছে। হোয়াইট হাউসে বৈঠকের সময় এই মতপার্থক্য প্রকাশ পায় বলে গত বুধবার গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়।
ব্লুমবার্গ-এর কলাম লেখক জেফরি গোল্ডবার্গ কোনো সূত্রের নাম উল্লেখ না করে কেরি-ডেম্পসির এই মতপার্থক্যের খবর প্রকাশ করেছেন।
জেফরির লেখা ওই প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গত সপ্তাহে হোয়াইট হাউসের সিচুয়েশন রুমে অন্যদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি ও জয়েন্ট চিফস অব স্টাফ চেয়ারম্যান মার্টিন ডেম্পসি। এ সময় কেরি বারবার সিরিয়ার সরকারি বাহিনীর বিমানঘাঁটিতে হামলা চালানোর পক্ষে মত তুলে ধরেন। এ ধরনের হামলা না চালালে সরকারি বাহিনী বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার করবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।
তবে ডেম্পসি পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বলেন, বিমান হামলা চালানো হলেই ঝুঁকি বরং বেশি। এ জন্য অনেক শক্তি ব্যয় করতে হবে। বিশেষ করে সিরিয়ার আকাশসীমা প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ঘায়েল করতে হলে বড় আকারে বিমান হামলা চালাতে হবে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘কয়েকটি সূত্র থেকে জানা যায়, ডেম্পসি বেশ কিছু জটিল ইস্যু ছুড়ে দিয়ে কেরির কাছে জানতে চান, সিরিয়ায় হামলার আগমুহূর্তের পরিকল্পনা ঠিক কী হতে পারে। একই সঙ্গে বলেন, কেরি যে ধরনের হামলার কথা বলছেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সে ধরনের হামলার জটিলতা উপলব্ধি করতে পারবে না।
মার্কিন কর্মকর্তারা সিরিয়া প্রশ্নে কেরি ও ডেম্পসির মধ্যে খোলাখুলি আলোচনা এবং বিতর্কের বিষয়টি স্বীকার করেছেন। প্রতিরক্ষা বিভাগের একজন কর্মকর্তা বলেন, সেনাপ্রধান ডেম্পসি খোলাখুলিভাবে বলেছেন, ‘সব ধরনের বিকল্পই আমাদের বুঝতে হবে এবং পারিপার্শ্বিক ঘটনাও বোঝা জরুরি।’
মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ ব্যাপারে বিস্তারিত কিছু বলতে রাজি হয়নি। তবে বলেছে, ওই বৈঠকে সবকিছুই ঠিকঠাক ছিল। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জেন পিসাকি বলেন, ‘আমি গণমাধ্যমের প্রতিবেদনগুলো দেখেছি। প্রতিবেদনে কিছুটা অন্য সুর তুলে ধরার চেষ্টা হয়েছে, যা সঠিক নয়।’ তিনি জানান, জ্যেষ্ঠ কূটনীতিক ও প্রতিরক্ষাবিষয়ক কর্মকর্তারা প্রেসিডেন্টকে পরামর্শ দিতে এসেছিলেন। সেখানে সব ধরনের বিকল্প নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
বিভিন্ন সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরির মন্তব্যে ইঙ্গিত পাওয়া গেছে যে তিনি সিরিয়ার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করার পক্ষে। কিন্তু ডেম্পসির বিভিন্ন প্রকাশ্য মন্তব্যে সিরিয়া অভিযানের সম্ভাব্য ঝুঁকির বিবেচনায় কিছুটা সতর্কতা লক্ষ্য করা গেছে।
‘বাশারকে পদত্যাগ করতেই হবে’: এদিকে সিরিয়ার বিদ্রোহীরা বলেছে, প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের পতন না হওয়া পর্যন্ত তারা লড়াই চালিয়ে যাবে। আর কোনো রাজনৈতিক সমাধান হলেও বাশারকে অবশ্যই সরে যেতে হবে।
১৭ ও ১৮ জুন যুক্তরাজ্যে অনুষ্ঠিত উন্নত দেশগুলোর সংগঠন জি-৮-এর সম্মেলন থেকে ‘সিরিয়ায় রাজনৈতিক সমাধানের অঙ্গীকার’ ঘোষণা করা হয়। এরপর সিরিয়ার বাশারবিরোধী প্রধান জোট ন্যাশনাল কোয়ালিশন এক বিবৃতিতে বাশারের পদত্যাগের দাবির কথা গত বুধবার পুনর্ব্যক্ত করে। এএফপি।

No comments

Powered by Blogger.