‘মানবাধিকার কমিশন সাক্ষীগোপাল প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে’

দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ সম্প্রদায়ের কোনো মানুষ যখন মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকার হন, মানবাধিকার কমিশন তাঁদের পাশেই দাঁড়াতে পারে না। সেখানে দেশের ক্ষুদ্র বা আদিবাসী জাতিসত্তার মানুষের মানবাধিকার লঙ্ঘিত হলে কমিশন কীভাবে তাঁদের পাশে দাঁড়াবে?
এ প্রশ্ন করে লেখক ও সাংবাদিক সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেছেন, মানবাধিকার কমিশন এখন একটি সাক্ষীগোপাল প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। এ প্রতিষ্ঠানের প্রধান ব্যক্তি তাঁর কর্মকাণ্ড বক্তৃতা ও বিবৃতির মধ্যে সীমাবদ্ধ রেখেছেন। মানবাধিকার লঙ্ঘিত হলে কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নিতে দেখা যায় না তাঁকে।
গত বুধবার বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি ও লামায় চাক এবং ম্রো আদিবাসীদের গ্রাম উচ্ছেদের বিষয়ে সরেজমিন পরিদর্শন করে আসা নাগরিক প্রতিনিধিদল আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি। ঢাকার সেগুনবাগিচায় মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর মিলনায়তনে আয়োজিত এ সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, গত মার্চে নাইক্ষ্যংছড়ির বাদুড়ঝিরিতে (আলেখ্যং মৌজা) ২১টি চাক পরিবারের প্রায় সব কটিকে উচ্ছেদ করা হয়েছে। বাদুড়ঝিরির উচ্ছেদকৃত চাক পরিবারের সদস্যরা আশ্রয় নিয়েছেন পাশের বাইশারী মৌজায়। জেলার লামা উপজেলার লুলাইং এলাকার ২১০টি ম্রো পরিবার নানা হুমকি-ধমকির মধ্যে ভয়াবহ উচ্ছেদ-আতঙ্কে দিনাতিপাত করছে।
নাগরিক প্রতিনিধিদলটি গত সপ্তাহে পার্বত্য এলাকা পরিদর্শন করে। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, পাহাড়িরা নিরাপত্তাহীন হয়ে উচ্ছেদের শিকার হলেও বিতাড়নকারীরা বহাল তবিয়তে আছেন এবং প্রশাসনের সহযোগিতা পাচ্ছেন। তাঁরা অবিলম্বে বাদুড়ঝিরির উচ্ছেদকৃত ২১ পরিবারসহ অন্যদের বাস্তুভিটা ফেরতসহ পুনর্বাসনের দাবি করেন। পার্বত্য ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন আইন গত বছরের ৩০ জুন আন্তমন্ত্রণালয় ও পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়ন কমিটির সভায় গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সংশোধনের কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করারও দাবি জানানো হয়।
দীপায়ন খীসার সঞ্চালনায় সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন গণ-ঐক্যের আহ্বায়ক পংকজ ভট্টাচার্য, পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির তথ্য ও প্রচার সম্পাদক মঙ্গল কুমার চাকমা। লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন প্রতিনিধিদলের সদস্য রাজীব মীর।

No comments

Powered by Blogger.