অর্থনীতিতে প্রত্যাশা ও রাজনৈতিক সদিচ্ছা by মোহাম্মদ আব্দুল জব্বার

আজকাল প্রায়ই আমরা শুনি, বাংলাদেশ আর তলাবিহীন ঝুড়ি নয়। জাতি তলাবিহীন অপবাদকে মিথ্যা প্রমাণ করেছে। স্বাধীনতা-উত্তর বিধ্বস্ত বাংলাদেশ তখন তার মাথা তোলার জন্য সময় নিতেই তৎকালীন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জার বাংলাদেশের প্রতি এ অপবাদ দিয়েছিলেন।
আজ দেশের মানুষ সব অপবাদ ও প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও বিশেষ করে তার অর্থনীতি নিয়ে ক্রম অগ্রসরমান এবং এ অগ্রসরতার ধারা বর্তমানে এতই স্পষ্ট রূপ ধারণ করেছে যে, যুক্তরাজ্যের প্রভাবশালী সাময়িকী দ্য ইকোনমিস্ট সাম্প্রতিককালে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বাংলাদেশের এ অগ্রগতি বা উন্নয়নকে ‘আশ্চর্যজনক’ বলে মন্তব্য করেছে।


বিশ্বমন্দার সময়ে বাংলাদেশের অর্থনীতি তেমন প্রভাবিত হয়নি। এর মূল কারণ, বেসরকারি খাত। আমাদের গ্রামের সাধারণ কৃষক ভাইয়েরা খাদ্যে স্বয়ংসম্পন্নতার দ্বারপ্রান্তে দেশকে পৌঁছিয়েছেন। গত ১০ বছরে গড়ে প্রতি বছর প্রচুর খাদ্য আমদানি করতে হলেও বর্তমানে খাদ্য আমদানি করতে হয় না বললেই চলে। অর্থনীতির উৎকর্ষের অবদানে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে আমাদের তৈরী পোশাক শিল্প; যা আন্তর্জাতিক মানের ব্র্যান্ডের বাজারে দৃঢ় অবস্থান নিয়ে অগ্রসর হচ্ছে। জাতীয় রফতানি আয়ের ৮০ শতাংশ বৈদেশিক মুদ্রাই পোশাক রফতানি করে আমরা অর্জন করি। তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে আমাদের প্রবাসী শ্রমিকদের আয়। এখন প্রতি বছর প্রবাসী শ্রমিক ভাইয়েরা ১২ বিলিয়ন ডলার করে পাঠাচ্ছেন। ফলে গত চার বছরে আমাদের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৬.৫০ বিলিয়ন ডলার থেকে বেড়ে ১৩ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে।

জাতিসঙ্ঘের ‘বিশ্ব অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ও পূর্বাভাস ২০১৩’ শীর্ষক প্রতিবেদনে মূল্যস্ফীতি, রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা, জ্বালানি সঙ্কট ও বিনিয়োগ কম হওয়ায় ২০১২ সালকে এক দশকের মধ্যে সবচেয়ে মন্থরগতির বছর হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এর গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হচ্ছে বাংলাদেশ। আমরা মূল্যস্ফীতি নিয়ে বরাবরই চাপের মধ্যে রয়েছি। সামষ্টিক অর্থনীতির ব্যবস্থাপনার চাপ কমানোর লক্ষ্যে দাতাদের শর্ত মেনে সরকার গত চার বছর ক্রমাগতভাবে তেলের দাম বাড়িয়েছে। ফলে মূল্যস্ফীতি বেড়েই চলেছে। বিশেষ করে তেলের দাম বাড়ানোয় পরিবহন ও উৎপাদন ব্যয় বেড়ে যাচ্ছে। অন্যান্য ভোগ্যপণ্যের দামও বাড়ছে। এতে মানুষের প্রকৃত আয় কমে যাচ্ছে। অন্য দিকে বিদ্যুতের দাম ক্রমান্বয়ে বাড়তে থাকায় উৎপাদন ব্যয় তথা শিল্প পরিচালনা ব্যয় বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে সার্বিক অর্থনীতিতে চাহিদা হ্রাস পাচ্ছে।

মূল্যস্ফীতির এ অব্যাহত চাপের মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক মুদ্রা সরবরাহ কমিয়ে আনার নীতি অনুসরণ করে যাচ্ছে দীর্ঘ দিন ধরে। আমরা জানি, ব্যয় বৃদ্ধি বা মুদ্রা সরবরাহ বৃদ্ধির কারণে সৃষ্ট মূল্যস্ফীতি এবং চাহিদা বাড়ায় সৃষ্ট মূল্যস্ফীতি, এক বিষয় নয়। মুদ্রা সরবরাহ বৃদ্ধির কারণে যদি মূল্যস্ফীতি ঘটে থাকে, তবে বাংলাদেশ ব্যাংক যে মুদ্রা সঙ্কোচন নীতি গ্রহণ করেছে তা অর্থনীতির জন্য হবে ইতিবাচক। কিন্তু যদি চাহিদা বৃদ্ধির কারণে এটি হয়, তবে চাহিদা মেটানোর জন্য পণ্য উৎপাদন বৃদ্ধির ব্যবস্থা না নিয়ে মুদ্রা সরবরাহ কমিয়ে দিলে অর্থনীতিতে তা ভালো ফল বয়ে আনবে না; বরং নিয়ন্ত্রিত মুদ্রাব্যবস্থার কারণে ব্যাপক ঋণের মূল্য বেড়ে যায়। উচ্চমূল্য ঋণের কারণে নতুন ব্যবসায়-বাণিজ্য, শিল্পকারখানা গড়ে ওঠা ব্যাহত এবং সাথে সাথে উদীয়মান শিল্পকারখানা বাধাগ্রস্ত হবে। ফলে বর্ধিত চাহিদা মোকাবেলায় কম কর্মসংস্থান হবে, তথা বেকারত্ব আরো বাড়বে।

প্রবাসীদের প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা পাঠানো অব্যাহত থাকায় আমাদের অর্থনীতিকে অনেকে ‘বর্ধনশীল অর্থনীতি’ বলতে চান। কাঠামোগত সুবিধাসম্পন্ন আর্থিক তৎপরতা কম থাকায় আগে থেকেই তৎপরতা কম ছিল। এর সাথে সরকার কর্তৃক কৃষিপণ্যের মূল্য নিম্নমুখীভাবে নিয়ন্ত্রিত হওয়ায় গ্রামীণ সাধারণ কৃষকদের আর্থিক মেরুদণ্ড আরো দুর্বল হয়ে পড়ছে। দেশের ৬০-৭০ শতাংশ লোক গ্রামে বাস করেন; তারা সার্বিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। আবার শহরের জমি, ফ্যাট বিক্রি, শেয়ারের মন্দা ইত্যাদি কারণে বিনিয়োগ স্থবির হয়ে গেছে। ফলে বাজারের সামগ্রিক চাহিদার ওপর  নেতিবাচক চাপ বাড়ছে। এ অবস্থায় প্রবাসী শ্রমিকদের পাঠানো বৈদেশিক মুদ্রাই গ্রামীণ আর্থিক জীবনে প্রাণ সঞ্চালন করে রেখেছে। এখন আমাদের নজর দেয়া উচিত কৃষিপণ্যের মূল্য প্রতিযোগিতামূলক রাখার সাথে সাথে প্রবাসীদের পাঠানো অর্থের উৎপাদনমূলক বিনিয়োগ নিশ্চিত করা, যা গ্রামীণ কর্মসংস্থানের সুযোগ আরো বৃদ্ধি করবে। অন্য দিকে কৃষি, বিশেষ করে খাদ্য-নিশ্চয়তামুখী পণ্য ধান উৎপাদন স্থিতিশীল রাখতে এবং আরো বাড়াতে হলে এর উৎপাদনমূল্য ও লাভজনক হওয়ার বিষয়ে কৃষকদের আস্থা কোনোভাবেই নষ্ট করা যাবে না। পরপর পাঁচ বছরের খাদ্য উৎপাদন স্বয়ংসম্পন্ন রাখতে পারলে আমাদের খাদ্য আমদানি খাতে কোনো আমদানি-ব্যয় করতে হবে না। এভাবে সামষ্টিক আর্থিক ব্যবস্থাপনা বলিষ্ঠ করা সহজ হবে। সামষ্টিক আর্থিক ব্যবস্থাপনাকে বছরপরম্পরায় বলিষ্ঠ রাখতে পারলে গ্রামীণ অর্থনীতিকে বর্ধনশীল অর্থনীতিতে রূপান্তর করা সম্ভব, যা এক দিকে গ্রামীণ কর্মসংস্থানের মাধ্যমে শহরমুখী জনস্রোতকে থামিয়ে দেবে; অন্য দিকে জিডিপির ঊর্ধ্বমুখিতা রক্ষায় সহায়তা করবে।

অর্থমন্ত্রী নিজেই বলেছেন, মূলধন যন্ত্রপাতি আমদানি এবং বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ কমেছে। বেসরকারি খাতগুলো অর্থনীতির মূল চাবিকাঠি। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী, গত জুলাই-অক্টোবর মেয়াদে সব ধরনের আমদানি ব্যয় ৬.৭৭ শতাংশ কমেছে। একই সময়ে শিল্পে যন্ত্রপাতি, মধ্যবর্তী পণ্য ও কাঁচামাল আমদানি ব্যাপকভাবে কমে গেছে। শিল্পের যন্ত্রপাতি আমদানি এবং নতুন এলসি কমে যাওয়ার তথ্য প্রমাণ করে যে, দেশে বিনিয়োগে মন্দা চলছে। অন্য দিকে কাঁচামাল এবং মধ্যবর্তী পণ্য আমদানি কমা বিষয় প্রমাণ উৎপাদন কমে যাওয়ার প্রমাণ বহন করে। দেশের প্রধান প্রধান শিল্প খাতের যন্ত্রপাতি আমদানি গত চার মাসে কমে গেছে।

আমাদের মূলধন ও উৎপাদন উপকরণ আমদানির পরিমাণ মোট আমদানির তিন-চতুর্থাংশ। আমদানি কমে যাওয়ার অর্থ হচ্ছে ভবিষ্যৎ প্রবৃদ্ধি কমে যাওয়া। আর প্রবৃদ্ধি কমে যাওয়ার অর্থ হলো শিল্পায়ন ব্যাহত হওয়া, বাজারে সুলভ মূল্যে পণ্যের সরবরাহ কমে যাওয়া এবং কর্মসংস্থানও কমে যাওয়া। অতিমাত্রায় বা দুই ডিজিটের মুদ্রাস্ফীতি নিশ্চয়ই ক্ষতিকারক। কিন্তু যে মাত্রায় সঙ্কোচনমূলক মুদ্রানীতি আমাদের প্রবৃদ্ধির গলা চেপে ধরবে, সেই মাত্রায় আমরা সীমিত পর্যায়ে হলেও সম্প্রসারণমূলক মুদ্রানীতির দিকে নজর দিতে পারি। ফলে অর্থনীতির গতিশীলতা আবার ফিরে আসবে। উন্নয়ন ও অগ্রগতির স্বার্থে প্রবৃদ্ধিকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিতে হবে। সাথে সাথে প্রবৃদ্ধির অংশ যেন সবার ভেতর ন্যূনতমভাবে বণ্টিত হয়, সে দিকেও নজরদারি করতে হবে।

এ অবস্থায় অব্যাহত সঙ্কোচনমূলক মুদ্রানীতির কারণে বিনিয়োগ শ্লথ হয়ে আসায় ভবিষ্যৎ আশঙ্কা উল্লেখ করা যেতেই পারে। অধিক বর্ধনশীল একটি জনগোষ্ঠীর জন্য প্রবাসী আয়ের ওপর অতিমাত্রায় নির্ভর করে উৎপাদনবিমুখ ভোগবাদকে উসকে দেয়া অর্থনীতির কোনো নীতিমালায় পড়ে না। তাই সঙ্কোচনমূলক মুদ্রানীতি, তেলের মূল্য বাড়ানো ও গ্যাসের উৎপাদনমুখী সংযোগের অনুপস্থিতি বিনিয়োগের ধারাকে আরো সঙ্কুচিত করে তুলেছে, যা দীর্ঘমেয়াদের জন্য ক্ষতিকারক।

একই সময়ে রফতানি ৩.৮ শতাংশ বাড়ার সাথে সাথে প্রবাসী আয়ের প্রবৃদ্ধি ২০ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে। আমদানি কম ও প্রবাসী আয় বেড়ে যাওয়ায় রিজার্ভ ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। ফলে ডলারের বিপরীতে টাকা শক্তিশালী হচ্ছে। দেশীয় মুদ্রার মজুদও ব্যাংকগুলোতে বাড়ছে। এ অবস্থায় শক্তিশালী টাকার কারণে রফতানি বৃদ্ধি ও রেমিট্যান্স আয় নিরুৎসাহিত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

আমরা লক্ষ করেছি, মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্কোচনমুখী মুদ্রানীতি বিশেষ ভূমিকা রেখেছে। কিন্তু অন্যভাবে দেখলে দেখা যায়, কয়েক বছর আগে মুদ্রা সরবরাহের প্রবৃদ্ধি যখন ছিল প্রায় ২২-২৩ শতাংশের মতো তখন অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ছিল ৬.৭ শতাংশ। ওই প্রবৃদ্ধি গত বছর নেমে এসেছে ৬.৩ শতাংশে। বৈশ্বিক মন্দার তেমন প্রভাব আমাদের অর্থনীতিতে পড়েনি বলে দাবি করা হয়। তা হলে এ প্রবৃদ্ধি কমে যাওয়ার অন্যতম কারণ হলো, মুদ্রা সরবরাহের সঙ্কোচন। এ সঙ্কোচনমূলক মুদ্রানীতির কারণে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে বিনিয়োগযোগ্য ঋণের পরিমাণ কমে গেছে। সাথে সাথে কমেছে আমদানির প্রবৃদ্ধিও।

সম্প্রতি মার্কিন রাষ্ট্রদূত ড্যান মজিনা বাংলাদেশকে ‘অপার সম্ভাবনার দেশ’ হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, এ দেশের প্রকৃতি, পরিবেশÑ সবই দ্রুত উন্নয়নের অনুকূলে। এখন অন্তত অবকাঠামোগত উন্নয়ন হলেই সত্যিকারের উদীয়মান দেশ হিসেবে বাংলাদেশের পক্ষে নিজেকে তুলে ধরা সম্ভব। তার ভাষায়, বাংলাদেশ যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে তাতে এ দেশ ‘দ্বিতীয় চীন’ হতে বেশি সময় লাগবে না। বাংলাদেশে অনেক বিদেশী ব্যবসায়ী বিনিয়োগ করতে চান। কিন্তু দুর্নীতি ও রাজনৈতিক অস্থিরতায় তারা এখানে বিনিয়োগ করেন না। ব্যবসায়ীদের ভীতি কাটানো ও বিদেশী বিনিয়োগ আকর্ষণের জন্য রাজনৈতিক সংস্কৃতি পরিবর্তনের আহ্বানও জানান তিনি।

অর্থনীতিকে সুপথে ফেরানোর মূল কাজে হাত না দিয়ে সাময়িক সমস্যা থেকে পরিত্রাণের চেষ্টা করা বোকামি ছাড়া কিছুই নয়। দরকার স্বাভাবিক প্রবৃদ্ধিতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে, এমন সব অর্থনৈতিক ইস্যুর মধ্যে সমন্বয়ের চেষ্টা করা। আমাদের বৈষয়িক অবকাঠামো যেমন বাড়ানো দরকার, তার চেয়ে বেশি দরকার নৈতিক অবকাঠামোর মেরামত। এ কথা সবাই স্বীকার করবেন, চলমান দুর্নীতি এবং তার ব্যাপক বেষ্টনী এ দেশে জাতীয় অর্থনীতির জন্য একটি বড় ধরনের প্রতিবন্ধক। তার প্রতিনিয়ত নিম্নমুখিতা ব্যবসায় প্রতিযোগিতার ক্ষেত্রে আমাদের সক্ষমতা আরো ১০ ধাপ পিছিয়ে দিয়েছে। এ ক্ষেত্রে বিশ্বের ১৪৪টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান এখন ১১৮তম স্থানে। অথচ ২০১১ সালে এ ক্ষেত্রে ১৪২ দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ১০৮তম। সম্প্রতি প্রকাশিত ‘বিশ্ব প্রতিযোগিতা সক্ষমতা প্রতিবেদন ২০১২’-তে বিষয়টি উঠে এসেছে।

অধিকতর স্বচ্ছতার সাথে, পূর্ণাঙ্গ ও নিরপেক্ষভাবে অপরাধ তদন্তের নিশ্চয়তার শর্ত পূরণ না হওয়া পর্যন্ত পদ্মা সেতু প্রকল্পে অর্থায়নের বিষয়টি বিবেচনা করবেন না বলে বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট জানান। অর্থনৈতিক বিষয়কে অনৈতিক রাজনৈতিক কাঠামো দিয়ে বিবেচনা করার সংস্কৃতি থেকে বাইরে আসতে না পারলে জাতি হিসেবে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির যে সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে, তা কোনো দিনই অর্জন করা সম্ভব নয়। ন্যূনতম রাজনৈতিক সদিচ্ছা ছাড়া এর উত্তরণের কোনো সহজ রাস্তা আছে কি না, তা আমাদের জানা নেই।

�*���s��� ভেসে ওঠে। অথচ সরকার ভাবছেÑ তারা এভাবেই কিস্তিমাত করবে। সরকার ফ্যাসিবাদ দিয়ে ক্ষমতার স্বপ্ন কোন দিন অর্জন করতে পারবে না। তাছাড়া রাজপথে কোনো আন্দোলনের সুফল সরকার পায় না, বাঁক ঘুরে সেটা বিরোধী দলের ঘরেই উঠে যায়। ব্যাপারটা শুধু অপেক্ষার।

আগামি নির্বাচনকে সামনে রেখে যারা মাঠ সাজিয়ে তুষ্ঠি পাচ্ছেন তাদের জন্য কোনো সুসংবাদ অপেক্ষা করবে না। যারা হঠকারি হয়ে সময় জ্ঞান হারিয়ে রাষ্ট্র শক্তির অপব্যবহার করছেন কিংবা তার বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে পথ চলতে চাচ্ছেন তাদেরকেও অতীত বর্তমান ভবিষ্যৎ ভাবতে হবে। জনগণের অর্জন, তারুণ্যের উচ্ছ্বাসকে তুড়ি মেরে উড়িয়ে দেয়া যায় না। যদিও সেই অর্জন ও উচ্ছ্বাস ছিনতাই করার জন্য রাজনৈতিক তস্কররা ওৎ পেতে বসে আছে। সরকার বগল বাজিয়ে বলছে ও ভাবছে তাদের অ্যাজেন্ডা তরুণ সমাজ বাস্তবায়ন করে দিচ্ছে। আর প্রতিপক্ষ ভাবছে সব ঝুটা হ্যায়। কোনো মূল্যায়ন ও ভাবনাই সঠিক নয়। মিডিয়ায় হামলা বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। একটা শেষের পর আরো শেষ আছে। সেই ‘শেষ’ রাজনীতিবিদদের খোড়া গর্তে রাজনীতিবিদরাই পড়তে যাচ্ছেন। ঘাড়ে তোলা সত্য ঘাড় মটকায়। যেমন ওঝা মরে সাপ খেলায় বিষধর সাপের দংশনে। রাজনীতিকে যেভাবে বিষাক্ত ও অসহিষ্ণু করে তোলা হচ্ছে তার বিপরীতে রাজনীতি ও রাজনীতিবিদদের জন্য শুধু দুঃসংবাদই অপেক্ষা করছে।

digantaeditorial@gmail.com

No comments

Powered by Blogger.