শেরপুরে বিএমএ সভাপতি ও সম্পাদকের হাতে সিভিল সার্জন লাঞ্ছিত

এমএসআর সামগ্রী ক্রয়ের দরপত্র কমিটিতে না রাখার জের ধরে শেরপুরের বিএমএ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের হাতে লাঞ্ছিত হয়েছেন সিভিল সার্জন ডা: মো: মাঈন উদ্দিন মিঞা।
এ সময় তারা সিভিল সার্জনের করে কম্পিউটার, চেয়ার ও কাপ-পিরিচ ভাঙচুর করেন। তবে বিএমএ সভাপতি ডা: এম এ বারেক তোতা এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

ডা: মো: মাঈন উদ্দিন মিঞা বলেন, গতকাল বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন, শেরপুর জেলা শাখার সভাপতি, স্বাচিপের আহ্বায়ক ও আওয়ামী লীগ নেতা ডা: এম এ বারেক তোতা এবং সাধারণ সম্পাদক ও ইউএইচএফপিও কার্যালয়ের (হরচন্দ্র হাসপাতাল) চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা: মিন্টু চন্দ্র পাল অতর্কিতভাবে তার অফিস কে প্রবেশ করেন এবং দরজার লক ভেতর থেকে লাগিয়ে দেন। এ সময় মেডিক্যাল ও সার্জারিসামগ্রী (এমএসআর) ক্রয়ের দরপত্র কমিটিতে কেন তাদের রাখা হয়নি সে বিষয়ে তারা তার (সিভিল সার্জন) কাছে জানতে চান।

সিভিল সার্জন তাদের জানান, সরকারি ক্রয় নীতিমালা (পিপিআর) অনুযায়ী দরপত্র কমিটিতে নির্ধারিত কর্মকর্তাদের ছাড়া অন্য কাউকে রাখার সুযোগ নেই। এ কথা বলার সাথে সাথেই ওই দুই চিকিৎসক নেতা উত্তেজিত হয়ে তাকে (সিভিল সার্জন) চেয়ার থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেন ও শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত এবং তার করে কম্পিউটারসহ চেয়ার ও কাপ-পিরিচ ভাঙচুর করেন। এ সময় এমএসআর সামগ্রী ক্রয়ের দরপত্র গ্রহণের কাজের দায়িত্ব পালনরত শেরপুর সদর থানার পুলিশ সিভিল সার্জন কার্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সহায়তায় তাকে উদ্ধার করেন।

ঘটনার পরপরই ওই দুই চিকিৎসক নেতা সিভিল সার্জনের ক থেকে দ্রুত বের হয়ে যান। তাদের এ ধরনের আচরণে সিভিল সার্জন কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়েন।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বিএমএ, শেরপুর জেলা শাখার সভাপতি ডা: এম এ বারেক অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, সিভিল সার্জন ডা: মাঈন উদ্দিন মিঞা শেরপুরে যোগদানের পর থেকেই স্বাস্থ্য বিভাগ বা হাসপাতালের ক্রয়-বিক্রয়সংক্রান্ত কোনো বিষয়ে বিএমএকে অবহিত করেন না। এতে তিনি (বারেক) ুব্ধ হয়ে সিভিল সার্জনের সাথে কথাকাটাকাটি ও উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় করেছেন। তবে তাকে (সিভিল সার্জন) শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত বা তার করে কোনো আসবাবপত্র ভাঙচুর করেননি।

এ দিকে বিএমএ নেতা কর্তৃক সিভিল সার্জনকে লাঞ্ছিত করার প্রতিবাদে তাৎণিকভাবে কর্মচারীরা শহরে বিােভ মিছিল এবং শেরপুর জেলা সদর হাসপাতালসহ স্বাস্থ্য বিভাগের সব পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কর্মবিরতি পালন করেন। এতে রোগীরা ভোগান্তির শিকার হন। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পে সিভিল সার্জন কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ ধরনের ন্যক্কারজনক ঘটনার জন্য বিএমএ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে সিভিল সার্জন কার্যালয়ের চিকিৎসা কর্মকর্তা (এমও) ডা: মো: সেলিম মিঞা জানান, ঘটনার জন্য দায়ী দুই বিএমএ নেতা গ্রেফতার না হওয়া পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল ১০ টা থেকে ১১ টা পর্যন্ত জেলার সব হাসপাতালে প্রতীকী কর্মবিরতি পালন করা হবে। তবে হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কার্যক্রম চালু থাকবে। এ ছাড়া এ ঘটনার প্রতিবাদে সব কর্মকর্তা-কর্মচারী কালো ব্যাজ ধারণ করবেন।

No comments

Powered by Blogger.