কী দেব তোমায়?

খবর পেলেন, কাছের কিংবা পরিচিত কারও সন্তান জন্ম নিয়েছে। দেখতে যাওয়ার কথা ভাবতে গেলেই মনে আসে উপহারের কথা। আবার এমনও হয়, নতুন শিশুকে এর আগে কখনো দেখেননি।


প্রথম জন্মদিনের অনুষ্ঠানে দেখার কাজটি সারতে চান। তাতেও উপহার বাদ দিয়ে কিছু ভাবা যায় না। কিন্তু কী উপহার দেবেন? অতশত না ভেবে প্রথমেই জেনে নিন সন্তান ছেলে না মেয়ে। সেই পরিবারের সঙ্গে সম্পর্কের ধরন বুঝে সিদ্ধান্ত নিলে উপহার দেওয়া সহজ হয়। উপহারের ক্ষেত্রে বেশির ভাগ সময় শিশুর জন্য পোশাক, নানা ধরনের প্রসাধনীর সেট কিংবা খেলনাকেই বেছে নেওয়া হয়। এর তালিকায় নিত্যদিনের ব্যবহারোপযোগী জিনিস দেওয়ার কথা ভাবতে পারেন, যাতে তা শিশুর পরিবারের কাজে লাগে। পোশাক না দিয়ে ওই পরিবারের ঘর সাজানোর সামগ্রীও দিতে পারেন। পোশাক দিলে অবশ্যই সুতির হতে হবে। শীতের সময় হলে সুতির মোজা, টুপি ও জুতা দেওয়া যেতে পারে।
ঢাকার বারডেম হাসপাতালের শিশুরোগ বিভাগের প্রধান তাহমিনা বেগম বলেন, ‘জন্মের পর থেকে দ্রুত শিশুর শারীরিক পরিবর্তন আসতে থাকে। দেখা যায়, উপহারের সব পোশাক পরার আগেই শিশু একটু একটু করে বড় হতে থাকে। পোশাকটা হয়তো আর গায়ে লাগে না; বরং মা-বাবাকে কোনো উপহার দিলে সেটি কাজে লাগবে।’
কাছের কেউ হলে সুন্দর খামে করে টাকা কিংবা প্রাইজবন্ড দিতে পারেন। আরেকটি বিষয় খেয়াল রাখতে হবে, প্লাস্টিকের কোনো উপহার দিলে এর কোনাগুলো যেন ধারালো না হয়। ভালো মানের উপহারসামগ্রী দিতে হবে। তাহমিনা বেগমের মতে, নবজাতককে দেখতে গেলে ফিডার বা চুষনি উপহার না দেওয়াই ভালো। আজকাল উপহার হিসেবে গিফট ভাউচারও বেশ চলছে। এটি উপহার দিলে শিশুর পরিবার তাদের পছন্দমতো প্রয়োজনীয় জিনিস কিনে নিতে পারবে। বন্ধু বা কাছের কেউ হলে জিজ্ঞেস করে নিতে পারেন তাঁদের কোন জিনিস দরকার। সেটি দিলে কাজে লাগল। এ ছাড়া শিশুর মা-বাবাকে কয়েন বাক্স দেওয়া যেতে পারে। এতে সন্তানের জন্য সঞ্চয়ের প্রবণতা তৈরি হবে।
তবে সন্তানের পাশাপাশি মাকেও যে উপহার দেওয়া যেতে পারে, তা অনেকেই ভাবেন না। মা সবচেয়ে বেশি কষ্ট করেন সন্তান জন্মের আগে ও পরে। তাই মাকেও এ সময় হাসিখুশি রাখতে হবে। নতুন অতিথিকে নিয়েই দেখা যায় সবার মধ্যে ব্যস্ততা, যা নতুন মায়ের বেলায় ততটা দেখা যায় না। ফ্যাশন হাউস টেক্সমার্টের ডিজাইনার তাসলিমা জেসি বলেন, ‘এ সময় মাকেও সমান গুরুত্ব্ব দেওয়া উচিত। তা না হলে তিনি বিষণ্ন হয়ে পড়তে পারেন। মায়ের জন্য ঢিলেঢালা পোশাক, সুগন্ধি, তাঁর প্রিয় লেখকের বই বা গানের সিডি উপহার হিসেবে দেওয়া যেতে পারে।’ এ ছাড়া সন্তানের পরিচর্যা নিয়ে ভালো ভালো বই পাওয়া যায়। সেসবও উপহার দিতে পারেন। নিজের ও সন্তানের যত্নে এসব বই বেশ উপকারী।
উপহার দেওয়ার আগে বাজেট ঠিক করা প্রয়োজন। দামি উপহারই দিতে হবে, এমন কোনো কথা নেই।
সহকর্মী বা বন্ধুর সন্তান হলে সবাই মিলে বড় ধরনের উপহার দিতে পারেন। তখন বেবি কট, স্ট্রলার, ওয়াকার বা শিশুর উপযোগী উঁচু চেয়ার দিলে তা কাজে আসবে। ঢাকার দ্য বেবিশপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফারজানা আলী জানান, দামি কিন্তু প্রয়োজনীয় উপহার অনেকে মিলে দিলে আর্থিকভাবে একজনের ওপর বিশেষ চাপ পড়ে না। এসবের বাইরে ফটোফ্রেম, নোটবুক, রং-পেনসিলের বাক্স, অক্ষর লেখা ব্লক অথবা নানা সুরের মিশেলে খেলনা দেওয়া যেতে পারে। শিশুর জন্য উপহার কেনার সময় উজ্জ্বল রংকে প্রাধান্য দিতে হবে।
আসল কথা হলো, তাতে যেন ভালোবাসা ও আন্তরিকতা থাকে। এসব উপহার ঢাকার আড়ং, যাত্রা, দ্য বেবিশপ, মাদার কেয়ার, নিউমার্কেটসহ ছোট-বড় শপিং মলের দোকানে পাবেন।

No comments

Powered by Blogger.