হোমিওপ্যাথি, ইউনানী ও আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা পদ্ধতি আইন চূড়ান্ত করার নির্দেশ স্বাস্থ্যমন্ত্রীর

‘বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা পদ্ধতি আইন’ এবং ‘বাংলাদেশ ইউনানী ও আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা পদ্ধতি আইন’ দ্রুত চূড়ান্ত করার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। তিনি বলেন, সাধারণ মানুষের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে হলে দেশীয় চিকিৎসা ব্যবস্থাকেও শক্তিশালী করতে হবে। এ জন্য আইন দুটো দ্রুত প্রণয়ন করা জরুরি।
গতকাল সচিবালয়ে দেশীয় চিকিৎসক সমিতি, বাংলাদেশ ইউনানী আয়ুর্বেদিক বোর্ড এবং বাংলাদেশ হোমিও প্যাথিক বোর্ডের সমন্বয়ে এক যৌথ সভায় সভাপতিত্বকালে মন্ত্রী এ কথা বলেন। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, দরিদ্র মানুষের কাছে দেশীয় চিকিৎসা পদ্ধতি এখনো জনপ্রিয়। কম খরচে চিকিৎসা পায় বলে সাধারণ মানুষ এই সেবা নিতে পছন্দ করে। তবে দেশীয় চিকিৎসা পদ্ধতির মান বাড়ানোর লক্ষ্যে সংশ্লিষ্টদের আরো তৎপর হওয়ার জন্য স্বাস্থ্যমন্ত্রী নির্দেশ দেন। তিনি বলেন, দেশের সর্বত্র হোমিওপ্যাথি, ইউনানী বা আয়ুর্বেদিক কলেজ রয়েছে। সরকারও গুরুত্ব দিয়ে এ ধরনের চিকিৎসা পদ্ধতির মানোন্নয়নে পদক্ষেপ নিচ্ছে।
ইতিমধ্যে সরকারি হাসপাতালে বিকল্প চিকিৎসার জন্য চিকিৎসকও নিয়োগ দেয়া হয়েছে। বিকল্প চিকিৎসা পদ্ধতির মান বৃদ্ধির লক্ষ্যে সরকার ইতিমধ্যে ভারত ও শ্রীলঙ্কার সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করার উদ্যোগ নিয়েছে। সরকারের উদ্যোগ বাস্তবায়নে হোমিওপ্যাথি, ইউনানী এবং আয়ুর্বেদিক চিকিৎসক ও শিক্ষকদের মান বাড়ানোর জন্য সংশ্লিষ্টদেরকেই উদ্যোগী হতে হবে বলে মন্ত্রী এসময় মন্তব্য করেন। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, দেশীয় চিকিৎসা ব্যবস্থায় প্রায় সময় ভুয়া চিকিৎসকদের তৎপরতা দেখা যায়। তারা চটকদার বিজ্ঞাপন দিয়ে সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করে। সাধারণ মানুষ যেন প্রতারিত না হয় সে লক্ষ্যে মনিটরিং জোরদার করার জন্য হোমিওপ্যাথিক এবং ইউনানী ও আয়ুর্বেদিক বোর্ডগুলোর কর্তৃপক্ষকে তিনি নির্দেশ দেন। তিনি দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার মূলধারায় দেশীয় চিকিৎসা পদ্ধতিকে সম্পৃক্ত করার ওপরও গুরুত্বারোপ করেন।
সভায় দেশীয় চিকিৎসক সমিতির কর্মকর্তাগণ পেশার মানোন্নয়নে কয়েকটি প্রস্তাবনা উপস্থাপন করেন। প্রস্তাবনাগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সুপারিশ প্রতিবেদন তৈরির জন্য স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রীর নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। কমিটিতে চিকিৎসা, শিক্ষা ও পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের সচিব, বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথিক বোর্ড, বাংলাদেশ ইউনানী ও আয়ুর্বেদিক বোর্ডের চেয়ারম্যান সদস্য হিসেবে কাজ করবেন। সভায় অন্যান্যের মধ্যে রেলমন্ত্রী ও বাংলাদেশ ইউনানী বোর্ডের চেয়ারম্যান মুজিবুল হক, স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক, চিকিৎসা, শিক্ষা ও পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের সচিব ফয়েজ আহমেদ, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ, বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথিক বোর্ডের চেয়ারম্যান ডা. দিলীপ কুমার রায় প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

No comments

Powered by Blogger.