সড়কের মাঝে হাঁ করে আছে গর্ত by সামছুর রহমান

নিউ এলিফ্যান্ট রোডের বাটা মোড় থেকে গাউছিয়া মার্কেট পর্যন্ত
শহীদজননী জাহানারা ইমাম সড়কের মাঝখানে পাইপ বসানোর
জন্য ওয়াসা এই গর্ত খুঁড়েছে। দু​ই সপ্তাহের বেশি পেরিয়ে
গেছে, তবু কাজ শেষ হয়নি l ছবি: প্রথম আলো
সড়কের প্রস্থের দুই-তৃতীয়াংশ জুড়ে গভীর গর্ত। হাঁ করে থাকা গর্তের চারপাশে নেই কোনো নিরাপত্তাবেষ্টনী। ৪০ ফুট প্রস্থ সড়কটি সংকীর্ণ হয়ে পড়েছে। ব্যস্ত সড়কের দুই পাশ থেকে আসা যানবাহনের চাপে লেগে যাচ্ছে দীর্ঘ যানজট। ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে যাত্রীদের।
রাজধানীর নিউ এলিফ্যান্ট রোডের বাটা মোড় থেকে গাউছিয়া মার্কেট পর্যন্ত শহীদজননী জাহানারা ইমাম সড়কে এ রকম একাধিক গর্ত। এলাকাবাসী অভিযোগ করেন, ঢাকা পানি সরবরাহ ও পয়োনিষ্কাশন কর্তৃপক্ষ (ওয়াসা) সড়ক খোঁড়াখুঁড়ি করে কাজ অসমাপ্ত রেখে যাওয়ায় এ অবস্থা হয়েছে। ওয়াসা সূত্র জানায়, ‘ঢাকা ওয়াটার সাপ্লাই সিস্টেম ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্টের’ অংশ হিসেবে নিউ এলিফ্যান্ট এলাকার সড়ক খুঁড়েছিল। এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) অর্থায়নে এ প্রকল্পের অধীনে পুরো ঢাকা শহরের পুরোনো পানির পাইপ সরিয়ে নতুন পাইপ বসানো হচ্ছে।
সরেজমিন দেখা যায়, বাটা মোড় থেকে গাউছিয়া মার্কেটের দিকে যেতে শহীদজননী জাহানারা ইমাম সড়ক ধরে কিছু দূর এগোলেই প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ জুড়ে বিশাল গর্ত। ছোট ছোট লাঠির খুঁটিতে ফিতা জড়িয়ে গর্তটি ঘিরে রাখা হয়েছে। গর্তের ভেতরে জমে থাকা পানিতে মনুষ্য বর্জ্য ভাসছে।
গর্তের পাশের স্যানিটারি সামগ্রীর দোকানের ব্যবসায়ী মো. ইকবাল বলেন, প্রায় ১৫ দিন ধরে গর্তটি এভাবে পড়ে আছে। ওয়াসার লোকজন কাজ করেছিল, কিন্তু অসমাপ্ত রেখেই তারা চলে গেছে। এ গর্তের কারণে প্রতিদিন রাস্তায় যানজট লেগেই থাকছে। গর্তের কারণে সংকীর্ণ হয়ে পড়া সড়কটি দিয়ে একমুখী যানবাহন চলাচল করছে। মুখোমুখি দুটি যানবাহন এলেই লেগে যাচ্ছে যানজট। একটির বেশি যানবাহন চলতে পারছে না। ফলে এক পাশ থেকে আসা যানবাহনগুলো দাঁড়িয়ে আরেক পাশ থেকে আসা যানবাহনগুলোকে যেতে দিতে হচ্ছে।
এ সড়কটি এলিফ্যান্ট রোড এবং আশপাশের এলাকার জনগণের নিউমার্কেট, গাউছিয়া মার্কেট, চাঁদনীচক, ধানমন্ডি হকার্স মার্কেট, নীলক্ষেত এলাকায় যাতায়াতের প্রধান পথ। সামনেই ঈদ। কেনাকাটা করতে প্রচুর লোকজন যাতায়াত করছেন এই পথে। তাঁদের পড়তে হচ্ছে প্রচণ্ড ভোগান্তিতে।
গতকাল বেলা তিনটার দিকে যানজটে আটকে থাকা রিকশাযাত্রী ফরিদা ইয়াসমিন বললেন, ‘এ রকম ব্যস্ত রাস্তায় একটা গর্ত এত দিন ধরে কীভাবে থাকে! দুইটা রিকশা পাশাপাশি চলার উপায় নেই। রোজার মাসে কেনাকাটা করতে এসে ঝামেলায় পড়তে হচ্ছে।’
দেখা গেছে, সড়কের অনেক জায়গায় খোঁড়াখুঁড়ির পরে বালু দিয়ে ভরাট করে দেওয়া হয়েছে। বড় গর্তটি থেকে কিছুটা সামনে গেলেই সড়কের ওপর আরও দুটি গর্ত। অ্যারোপ্লেন মসজিদের পাশের সড়কের প্রবেশমুখেও একটি বড় গর্ত। এই গর্তগুলো ঘিরে কোনো নিরাপত্তাবেষ্টনী নেই।
ওয়াসার ঢাকা ওয়াটার সাপ্লাই সিস্টেম ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্টের প্রকল্পের পরিচালক তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী শহীদ উদ্দিন শহীদজননী জাহানারা ইমাম সড়কে বড় গর্তটি এভাবে পড়ে আছে তা জানতেন না। গতকাল মুঠোফোনে বিষয়টি জানানো হলে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘কোনো গর্ত তো এভাবে পড়ে থাকার কথা না। এখনই বলে দিচ্ছি আগামীকাল (আজ রোববার) গর্ত ভরাট করে দেবে।’
এলাকার অন্য গর্তগুলোর বিষয়ে শহীদ উদ্দিন বলেন, ‘কাজ শেষে খোঁড়া গর্ত বালু ফেলে ভরাট করে চলাচলের উপযোগী করে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু টানা বৃষ্টিতে বালু সরে গিয়ে কিছু জায়গায় আবার গর্ত বের হয়ে গেছে। সেগুলো আবার ভরাট করে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছি।’

No comments

Powered by Blogger.