পুলিশের ‘সিভিল টিম’- নির্দেশ অমান্যকারীদের শাস্তি দিন

আইন প্রয়োগের মাধ্যমে অপরাধ দমন ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার দায়িত্ব যাঁদের, তাঁরাই যদি আইনের বর্ম পরে সশস্ত্র ও সংঘবদ্ধভাবে অপরাধবৃত্তি চালিয়ে যান, তাহলে তাঁদের ঠেকায় কে? ঢাকা মেট্রোপলিটান পুলিশের (ডিএমপি) আওতাধীন থানা ও পুলিশ ফাঁড়িগুলোর তথাকথিত ‘সিভিল টিম’ তেমনই অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেছে। এটা বিরাট উদ্বেগের বিষয়।
উদ্বেগের ব্যাপারটা খুব স্পষ্ট হয়ে ওঠে, যখন খোদ ডিএমপি কমিশনারের নির্দেশনা অমান্য করে সিভিল টিমগুলো চালানো হচ্ছে বলে তাঁকে সেগুলো বন্ধ করার নির্দেশনা দিয়ে থানা ও পুলিশ ফাঁড়িগুলোতে চিঠি পাঠাতে হয় দ্বিতীয় দফায়। দ্বিতীয় চিঠির বিষয় ‘কর্তৃপক্ষের সুস্পষ্ট নির্দেশনা অমান্য করে সিভিল টিম পরিচালনা’ আমাদের বিস্মিত করে। পুলিশের মতো একটি সুশৃঙ্খল সশস্ত্র বাহিনীর কোনো ইউনিট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের লিখিত ‘সুস্পষ্ট নির্দেশনা’ কীভাবে ‘অমান্য’ করতে পারে? যারা নির্দেশ অমান্য করেন, কেন তাঁদের শাস্তি হয় না?
দ্বিতীয় চিঠির এক জায়গায় লেখা হয়েছে, সিভিল টিমের সদস্যদের দ্বারা নিরীহ জনসাধারণকে অসৎ উদ্দেশ্যে আয়ত্তে নিয়ে নানাভাবে ভয়ভীতি দেখিয়ে অর্থ আদায় করা ‘অনাকাঙ্ক্ষিত ও দুঃখজনক’। কেন এটাকে শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলে সতর্ক করে দেওয়া হয়নি? নিরীহ সাধারণ মানুষকে ধরে এনে বা মামলায় ফাঁসানোর ভয় দেখিয়ে অর্থ আদায় করাসহ নানাভাবে হয়রানি করার যেসব অভিযোগ পুলিশের সিভিল টিমের সদস্যদের বিরুদ্ধে উঠেছে, সেগুলো কি বিচার ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ নয়? আমরা মনে করি, আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যদের দ্বারা সংঘটিত এ ধরনের বেআইনি কর্মকাণ্ড বিশেষভাবে আমলযোগ্য, বিচারযোগ্য ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এ ধরনের অপরাধের বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা জরুরি।
পুলিশের সিভিল টিম একটা স্থায়ী ব্যবস্থা হতে পারে না। এই মুহূর্তে এসব বন্ধ করা হোক। অপরাধীদের গতিবিধি লক্ষ করা ও গ্রেপ্তার করার প্রয়োজনে পুলিশ সদস্যদের সাদাপোশাকে অভিযান চালানো অপরিহার্য হলে যথোপযুক্ত নজরদারি, দায়িত্বশীলতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করেই তা করতে হবে।

No comments

Powered by Blogger.