আইনের চেয়ে পুলিশের হাত লম্বা

আইনের হাতের চেয়ে পুলিশের হাত লম্বা হয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন ও ২০ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতা খালেদা জিয়া। বলেছেন, কিছু পুলিশ চরম দুর্নীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছে। তারা এখন সরকারেরও ওপরে। তাদের হাত আইনের  হাতের চেয়ে লম্বা। কারণ পুলিশ এখন বলে, আমরাই বিরোধী দলের আন্দোলন দমন করেছি। আমরাই সরকারকে টিকিয়ে রেখেছি। কাজেই তাদের কাছে জনগণের নিরাপত্তা আশা করেন কিভাবে? গতকাল রাজধানীর লেডিস ক্লাবে ডক্টরস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব) আয়োজিত ইফতার মাহফিলে অংশ নিয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন। যানজটের কারণে বিএনপি চেয়ারপারসন ইফতার সময়ের মিনিট খানেক পর অনুষ্ঠানস্থলে উপস্থিত হন। এর কয়েক মিনিট পরই অনুষ্ঠানে প্রবেশ করেন সাবেক প্রেসিডেন্ট ও বিকল্পধারার সভাপতি প্রফেসর একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী। ইফতার শেষে বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, দেশের গণতন্ত্র আজ নির্বাসিত, আইনের শাসন অনুপস্থিত। মানবাধিকার পদে পদে লঙ্ঘিত হচ্ছে। মানুষ প্রতিনিয়ত খুন-গুম হচ্ছে। সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, সরকার কোন কিছু নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। তাদের নিয়ন্ত্রণে কোন কিছু নেই। তারা শুধু মিথ্যা কথা আর বড় বড় বুলি আওড়ায়। আর বড় বড় প্রকল্পের নামে সব টাকা ও কমিশন নিয়ে থাকে। এই হলো তাদের কর্মকাণ্ড। এসব কাজের সঙ্গে মন্ত্রী-এমপি তাদের পরিবারের লোক এবং ছাত্রলীগ-যুবলীগ জড়িত। এর জন্য তারাই দায়ী। সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকে চাকরির মাপকাঠি হচ্ছে দলীয় বিচার। প্রার্থীর যোগ্যতা, জ্যেষ্ঠতা কোন কিছুর মাপকাঠিতে নয়। আজকে সব প্রতিষ্ঠান দলীয়করণ করেছে। বিচার বিভাগও এর বাইরে নয়। এখানে আওয়ামী লীগ দলীয় লোক বসানো হয়েছে। বিরোধী দল ও সাধারণ মানুষ সুবিচার পায় না। সরকারি দলের লোকেরা অপরাধ করেও পার পেয়ে যায়। চুরি দুর্নীতি যাই করুক না কেন তারপরেও তাদের বিচার নেই। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষার পরিবেশ নেই। বুয়েট অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। ২০ দলীয় জোটের শীর্ষনেতা বলেন, আমরা দেশে সুশাসন, মানবাধিকার, জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চাই। সবাই যাতে স্কুলে যেতে পারে, রাস্তাঘাটে মেয়েরা যাতে নিরাপদে চলতে সে ব্যবস্থা চাই। এর জন্য প্রয়োজন দেশে গণতন্ত্র। তিনি বলেন, দেশবাসীর কাছে আমাদের আহ্বান থাকবে- আসুন আমরা এই রমজানে নামাজ পড়ে আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ করি, যেন এই জালেম সরকারের দ্রুত বিদায় হয়। জনগণের গণঅভ্যুত্থানের সরকারের পতন হবে। তখনই দেশে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে এবং শান্তি ফিরে আসবে। এবং চোর-দুর্নীতিবাজ সরকারের হাত থেকে মানুষ মুক্তি পাবে। ইফতার মাহফিলে উপস্থিত সবাইকে শুভ্‌চ্েছা জানিয়ে সকল জাতীয়তাবাদী শক্তি ঐক্যবদ্ধ হতে পারবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন সাবেক প্রেসিডেন্ট প্রফেসর বদরুদ্দোজা চৌধুরী। ইফতার মাহফিলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি প্রফেসর এমাজউদ্দিন আহমেদ, প্রবীণ চিকিৎসক ডা. এমএ মাজেদ, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, এমকে আনোয়ার, নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ, আলতাফ হোসেন চৌধুরী, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ড. ইনাম আহমেদ চৌধুরী, খন্দকার মাহবুব হোসেন, আবদুল হালিম, রুহুল আলম চৌধুরী, শওকত মাহমুদ, আহমেদ আজম খান, গণস্বাস্থ্যের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি ড. খন্দকার মোস্তাহিদুর রহমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রোভিসি আফম ইউসুফ হায়দার, সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক রুহুল আমিন গাজী, ড্যাব সভাপতি ডা. একেএম আজিজুল হক, মহাসচিব প্রফেসর এজেডএম জাহিদ হোসেন, সহসভাপতি রফিকুল ইসলাম লাবু, ডা. আবদুস সালাম, ডা. ওবায়দুল কবির খান, কোষাধ্যক্ষ মোস্তাক রহিম স্বপন, রফিকুল ইসলাম বাচ্চু, ডা. জহিরুল ইসলাম সাথী, ডা. রফিক চৌধুরী, ডা. সালাহউদ্দিন মোল্লাসহ ঢাকা, ময়মনসিংহ-চট্টগ্রাম-বগুড়াসহ সারা দেশের বিভিন্ন মেডিকেল কলেজের বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক, চিকিৎসক এবং তিন হাজার চিকিৎসক অংশ নেন।

No comments

Powered by Blogger.