বোয়ালখালীতে তেলবাহী ট্রেন দুর্ঘটনা- নয় দিন পর একটি ওয়াগন উদ্ধার

দুর্ঘটনার নয় দিন পর গতকাল চট্টগ্রামের
বোয়ালখালীর হারগেজি খাল থেকে একটি
ওয়াগন টেনে তোলা হয়েছে l প্রথম আলো
দুর্ঘটনার নয় দিন পর গতকাল শনিবার বিকেলে চট্টগ্রামের বোয়ালখালীর হারগেজি খাল থেকে একটি ওয়াগন টেনে তোলা হয়েছে। ডুবে থাকা বাকি দুটি ওয়াগন দুই দিনের মধ্যে তোলা সম্ভব হবে বলে রেলের প্রকৌশলীরা জানান।
রেলওয়ে সূত্র জানায়, এর আগে গত বৃহস্পতিবার রিলিফ ট্রেনের (উদ্ধারকারী ট্রেন) ক্রেনের তার ছিঁড়ে যাওয়ায় উদ্ধার অভিযান ব্যাহত হয়। পরে নতুন আরেকটি রিলিফ ট্রেন অভিযান পরিচালনার জন্য পাঠানো হয়। গতকাল ভোর থেকে ডুবুরি দলের সদস্য ও রেলের প্রকৌশলীরা ওয়াগন টেনে তোলার কাজ নতুন করে শুরু করেন। প্রথমে পাম্প যন্ত্র দিয়ে আংশিক ডুবে থাকা ওয়াগনের ভেতর থেকে তেলমিশ্রিত পানি সরিয়ে ফেলা হয়। এরপর পরস্পর যুক্ত তিনটি ওয়াগনের সংযোগ কেটে বিচ্ছিন্ন করেন ডুবুরি দলের সদস্যরা। বিকেল সোয়া চারটার দিকে রিলিফ ট্রেন দিয়ে আংশিক ডুবে থাকা ওয়াগনটি ওপরে টেনে তোলা হয়।
রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের প্রধান যান্ত্রিক প্রকৌশলী মো. হারুন-অর-রশীদ প্রথম আলোকে জানান, আরও দুটি ওয়াগন পানিতে ডুবে আছে। ইঞ্জিনও ঝুলে আছে রেলসেতুর ওপর। সেগুলো দ্রুত উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।
১৯ জুন দুপুরে চট্টগ্রামের বোয়ালখালী ও পটিয়া উপজেলার সীমান্তে শাইরাপুল এলাকায় হারগেজি খালের (বোয়ালখালী খাল) সেতু পার হওয়ার সময় সেটি ভেঙে খালে পড়ে যায় তেলবাহী ট্রেন। দুর্ঘটনায় দুটি ওয়াগন খালে পড়ে, আংশিক ডুবে থাকে আরও একটি। প্রতিটি ওয়াগনে ২৫ হাজার লিটার তেল ছিল। তিনটি ওয়াগন থেকে ৭০ হাজার লিটার তেল ছড়িয়ে পড়ে। হারগেজি খাল কর্ণফুলী নদীর সঙ্গে যুক্ত। জোয়ার-ভাটার প্রভাবে আশপাশের পুকুর, খালসহ কর্ণফুলী নদী এবং মা মাছের প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদীতেও তেল ছড়িয়ে পড়ে। ট্রেনটি চট্টগ্রাম থেকে দোহাজারী যাচ্ছিল।
রেলওয়ে সূত্র জানায়, ভেঙে যাওয়া রেলসেতু সংস্কারের পর গত বুধবার তা ট্রেন চলাচলের উপযোগী করে তোলা হয়। এরপর রেলসেতুর ওপর দিয়ে বেশ কয়েকবার পরীক্ষামূলকভাবে ট্রেন চালানো হয়। তবে উদ্ধার অভিযান শেষ না হওয়া পর্যন্ত যাত্রী বা পণ্যবাহী ট্রেন চালানো বন্ধ রয়েছে।
রেলওয়ের চট্টগ্রাম বিভাগীয় ব্যবস্থাপক মফিজুর রহমান প্রথম আলোকে জানান, উদ্ধার অভিযান শেষ হওয়ার পরই ওই রেলপথে ট্রেন চলাচল শুরু হবে।
এদিকে পিডিবি সূত্র জানায়, চট্টগ্রামের সঙ্গে দোহাজারীর রেলযোগাযোগ বন্ধ থাকায় দোহাজারীর বিদ্যুৎকেন্দ্রের জ্বালানি মজুত কমে আসছে। গতকাল দুপুর পর্যন্ত ওই বিদ্যুৎ কেন্দ্রে দুই হাজার টন ফার্নেস অয়েল মজুত ছিল।
দোহাজারী পিকিং বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক আরিফুর রহমান ভূঁইয়া প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করি। প্রতি ঘণ্টায় বিদ্যুৎ উৎপাদনে ২০ টন জ্বালানির প্রয়োজন হয়। প্রতিদিন দুই থেকে ১০ ঘণ্টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ উৎপাদনের কাজ চলে।’

No comments

Powered by Blogger.