ঢাবিতে দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষার সুযোগ দাবি- পুলিশের বাধায় সমাবেশ পণ্ড, আটক ১৬

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে দ্বিতীয়বার ভর্তির পরীক্ষার সুযোগের দাবিতে আন্দোলনকারীদের পূর্বঘোষিত সমাবেশ পুলিশের বাধায় পন্ড হয়ে গেছে। সমাবেশস্থল থেকে ১৬ জন শিক্ষার্থীকে আটক করা হয়। পরে তাদের কোর্টে চালান দেয়া হয়েছে। গতকাল সকাল ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে এ ঘটনা ঘটে। পরে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীরা ফটক ভেঙে ভিসির কার্যালয় ঘেরাও করে। সকাল ১১টায় পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যে জড়ো হতে থাকে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীরা। সমাবেশ শুরু করার আগেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর অধ্যাপক ড. এএম আমজাদ ও পুলিশের রমনা জোনের এসি শিবলী নোমানের নেতৃত্বে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ধাওয়া দিয়ে ছত্রভঙ্গ করে দেয় পুলিশ। ধাওয়া খেয়ে শিক্ষার্থীরা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ঢুকে পড়ে। এ সময় পুলিশ ১৬ জন শিক্ষার্থীকে আটক করে। আটককৃতরা হলেন- সাজ্জাদ লিমন মাদবর, শফিকুল ইসলাম, তামজীদ, রাতুল, শাহরিয়ার, ইমতিয়াজ, শাকিল, তাহসিন, শাকিল (২), রাফাত, সাইফুল, রাকিব, রাসেল, ইসমাইল, জামিউল, সাজ্জাদ (২)। তাদের পরে কোর্টে চালান দেয়া হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন শাহবাগ থানার তদন্ত কর্মকর্তা হাবিল হোসেন। শিক্ষার্থীদের সমাবেশকে কেন্দ্র করে ক্যাম্পাসে সকাল থেকে পুলিশের উপস্থিতি বাড়ানো হয়। শাহবাগ, রাজু ভাস্কর্য, ভিসির বাসভবন, কার্যালয়ের সামনে প্রায় তিন শতাধিক পুলিশ মোতায়ান করা হয়। টিএসসির চা-দোকানগুলো বন্ধ করে দেয়া হয়। সন্ধ্যা পর্যন্ত এসব দোকান বন্ধ ছিল। টিএসসির দোকানগুলো বন্ধ থাকায় ভোগান্তি পোহাতে হয় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের। এদিকে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা জানান, শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির মাধ্যমে আমাদের যৌক্তিক দাবির পক্ষে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন প্রথমে ছাত্রলীগ পরে পুলিশ দিয়ে আমাদের ওপর হামলা চালায়। আমাদের কথা বলতে দেয়া হচ্ছে না। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের একগুয়েমির কারণে আমাদের শিক্ষাজীবন ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। সমাবেশ করতে না পেরে দুপুরে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীরা কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে জড়ো হয়। এসময় তাদের সঙ্গে প্রগতিশীল ছাত্রজোটের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। সেখানে তারা পুনরায় বিক্ষোভ শুরু করলে প্রক্টর তাদের বাধা দেয়। এসময় বাম নেতাদের সঙ্গে প্রক্টরের বাগবিত-া হয়। পরে প্রক্টরের বাধা উপেক্ষা করে শিক্ষার্থীরা ভিসির কার্যালয়ের দিকে এগুতে থাকেন। তখন ভিসির কার্যালয়ের ফটক তালাবদ্ধ ছিল। শিক্ষার্থীরা ফটক ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করেন এবং ভিসির কার্যালয় প্রায় দুই ঘণ্টা ঘেরাও করে রাখেন। পরে ভিসির সঙ্গে প্রগতিশীল ছাত্রজোটের নেতারা দেখা করলে তাদের তিনি সিদ্ধান্তে অটল রয়েছেন বলে জানান। তিনি বলেন, দ্বিতীয়বার ভর্তির সুযোগের বিষয়ে যে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে তা পরিবর্তন করা হবে না। নেতারা আটককৃত শিক্ষার্থীদের অবিলম্বে ছেড়ে দেয়ার দাবি জানান।
প্রগতিশীল ছাত্রজোটের নেতা প্রীতিলতা বলেন, শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক আন্দোলনের পক্ষে অবস্থান করে দাবি আদায়ের চেষ্টা করছি। শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করছি। কিন্তু প্রশাসন এতে নগ্ন হস্তক্ষেপ করেছে। বিকাল ৫টায় ক্যাম্পাসে আটক শিক্ষার্থীদের মুক্তির দাবিতে মশাল মিছিলের প্রগতিশীল ছাত্র জোট।
ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর ড. এএম আমজাদ বলেন, ক্যাম্পাসে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাই আন্দোলন করার অধিকার রাখে। বহিরাগতরা বিনা অনুমতিতে এখানে আন্দোলন করে ক্যাম্পাসকে অস্থিতিশীল করতে চাইছে তাই পুলিশের সহযোগিতায় তাদের আটক করা হয়েছে। রমনা জোনের এসি শিবলী নোমান বলেন, ক্যাম্পাস স্থিতিশীল রাখার স্বার্থে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আমাদের সহযোগিতা চেয়েছে। আমরা তাদের সহযোগিতা করেছি।

No comments

Powered by Blogger.