ইউরোপিয়ান ফুটবল- বছর শেষের চারকাহন

(গোলের পর মেসি প্রথম অভিনন্দন পেলেন সুয়ারেজের কাছ থেকে। এর আগে এমন অভিনন্দন সুয়ারেজও পেয়েছেন মেসির কাছ থেকে l এএফপি) বাতাসে বড়দিনের আমন্ত্রণ। ইউরোপিয়ান ফুটবলেও বেজে গেছে ছুটির ঘণ্টা। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ ছাড়া শীর্ষ লিগগুলোয় এর মধ্যে শুরু হয়ে গেছে বড়দিনের বিরতি। তবে সবার মধুরেণ সমাপয়েৎ হয়নি, বড় ক্লাবগুলোর সবাই বছর শেষ করতে পারেনি জয় দিয়ে...
অবশেষে সুয়ারেজ
এই বছরটা বার্সেলোনার জন্য ভুলে যাওয়ার। বছরটা যে গেল ট্রফিহীন। তবে কোচ লুইস এনরিকের সান্ত্বনা একটাই, বছরটা অন্তত জয় দিয়ে শেষ করতে পারলেন। কর্দোবার সঙ্গে পরশু ৫-০ গোলের জয়টা অপ্রত্যাশিত কিছু ছিল না অবশ্য। লিওনেল মেসি জোড়া গোলে বছর শেষ করলেন, তবে এদিন বার্সেলোনার সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি লুইস সুয়ারেজ। লা লিগায় প্রথম সাত ম্যাচে গোলহীন ছিলেন উরুগুইয়ান স্ট্রাইকার। অবশেষে লিগে পেলেন প্রথম গোল। সুয়ারেজ অবশ্য দাবি করছেন, গোলখরা নিয়ে খুব একটা উদ্বিগ্ন ছিলেন না, ‘গোল করতেই হবে এ রকম ভাবিনি। দলের জয়টাই ছিল বড় কথা।’ বার্সার অন্য দুটি গোল করেছেন পেদ্রো ও পিকে।
ইউনাইটেডের হোঁচট
টানা ছয় ম্যাচ জিতে শীর্ষ তিনে উঠে এসেছিল ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। উঁকি দিতে শুরু করেছিল শিরোপাস্বপ্নও। কিন্তু পরশু অ্যাস্টন ভিলার সঙ্গে ১-১ গোলে ড্রয়ের পর সেই সম্ভাবনা আবারও ফিকে হয়ে গেল। কোচ লুই ফন গালও স্বীকার করলেন, ড্রটা শিরোপা লড়াই থেকে ইউনাইটেডকে অনেকটা পিছিয়ে দিয়েছে, ‘আমরা বেশি ভালো খেলেছি। এমন ম্যাচ জিততে না পারলে সেটা অবশ্যই হতাশার। শিরোপাদৌড়ে থাকতে হলে এ রকম ম্যাচ জিততেই হবে।’ পরশু কিন্তু ইউনাইটেড সুবর্ণ সুযোগই পেয়েছিল। রাদামেল ফ্যালকাও ইউনাইটেডকে সমতায় আনার পর ভিলা হয়ে পড়েছিল ১০ জনের দল। ফন গাল তো হতাশ হবেনই!
হায় ডর্টমুন্ড!
কী হয়েছে বরুসিয়া ডর্টমুন্ডের? ইয়ুর্গেন ক্লপ উত্তরটা খুঁজে মরছেন। চ্যাম্পিয়নস লিগে খেলার আশা অনেক আগেই মিলিয়ে গেছে। তাই বলে অবনমন! পরশু ভেরডার ব্রেমেনের কাছে ২-১ গোলে হারের পর সেই শঙ্কা এখন প্রবল। ডর্টমুন্ড যে এখন পয়েন্ট তালিকার নিচ থেকে দুইয়ে। কোচ ক্লপ রেগেমেগে বলেই ফেললেন ডর্টমুন্ড এখন একদল নির্বোধের দলে পরিণত হয়েছে। পরে অবশ্য নিজেকে সামলে ঘুরে দাঁড়ানোর কথা বলেছেন, ‘আমরা পরিস্থিতিটা নিয়ে খুবই অসন্তুষ্ট, কিন্তু এর কারণ আছে। তবে এখনই আমাদের মুছে ফেলবেন না।’ কিন্তু এই ব্যর্থতার দায় কাঁধে নিয়ে কি সরে দাঁড়াবেন? ক্লপ সেই সম্ভাবনা আবার উড়িয়ে দিয়েছেন।
হ্যান্ড অব ডি ইয়ং!
পরিষ্কার দেখা গেছে, গোলপোস্টের একদম সামনে বলটা হাত দিয়ে ঠেকিয়ে দিয়েছেন এসি মিলান মিডফিল্ডার নাইজেল ডি ইয়ং। অথচ রেফারি সেটা খেয়ালই করলেন না। রোমার খেলোয়াড়েরা উচ্চ স্বরে প্রতিবাদ জানালেন, কিন্তু লাভ হলো না তাতে। পরশু শেষ পর্যন্ত এই বিতর্কটাই বড় হয়ে উঠেছে, কারণ রোমা-মিলান ম্যাচে কোনো গোলই হয়নি। পরে রোমা কোচ রুডি গার্সিয়া ক্ষোভ জানিয়েছেন, ‘হ্যান্ডবলটা খুব জঘন্য ছিল। গোললাইনে রেফারি থেকে তাহলে লাভটা কী হচ্ছে?’ ড্রতে বেশি ক্ষতি হয়েছে রোমারই, জুভেন্টাসের চেয়ে ৩ পয়েন্ট পিছিয়ে তারা এখন দুইয়ে। ২৬ পয়েন্ট নিয়ে মিলান আছে সাতে। মিলান কোচ ফিলিপ্পো ইনজাগি শুধু শীর্ষ তিন নয়, আরও বড় কিছুর স্বপ্ন দেখছেন, ‘আমরা মিলান, তৃতীয় হওয়ার জন্য আমরা খেলতে পারি না। আমাদের চোখ এখন শিরোপায়।’ এএফপি, রয়টার্স, গোলডটকম।

No comments

Powered by Blogger.