যুক্তরাষ্ট্রের ২৮০০ কোটি ডলার ব্যর্থ

সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধে পাকিস্তানতে দেয়া যুক্তরাষ্ট্রের ২৮০০ কোটি ডলার ব্যর্থ বলে প্রমাণিত হয়েছে। ২০০১ সাল থেকে গত ১২ বছরে এ সহায়তা দেয়া হয়েছে। মার্কিন গণমাধ্যম বলছে, জঙ্গিবিরোধী যুদ্ধে পাকিস্তানে নেয়া যুক্তরাষ্ট্রের এই বিশাল অর্থ ও নানা কৌশল খুব একটা কাজে আসেনি। পাকিস্তানের সেনাবাহিনীকে বিভিন্নভাবে সহায়তা করেও গত এক যুগের সাফল্য হিসাব করলে অর্থ ও সময়ের অপচয় ছাড়া আর কিছুই চোখে পড়ে না। নতুন করে মার্কিন প্রতিরক্ষা বাজেটে পাকিস্তানকে সহায়তায় ১০০ কোটি ডলার অনুমোদন করা হয়েছে। দ্য আটলান্টিক তাদের অনুসন্ধানে জানায়, প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশের সময় প্রথম সন্ত্রাসবিরোধী কৌশলগত যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে জোটবদ্ধ হয় পাকিস্তান। পাকিস্তানের সাবেক প্রেসিডেন্ট পারভেজ মোশাররফ পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে তালেবানবিরোধী অপারেশনে প্রথম কাজে লাগান। সেই সময় থেকে পাক অপারেশন ও মার্কিন ড্রোন হামলায় তালেবান ও আল কায়দার শীর্ষস্থানীয় অনেক নেতা নিহত হলেও তাদের অবস্থান দুর্বল করা যায়নি। ওবামা প্রশাসন পাকিস্তানকে না জানিয়ে এক অভিযানে আল কায়দা প্রধান ওসামা বিন লাদেনকে হত্যা করতে সমর্থ হয়। কিন্তু এত কিছুর পরও তালেবান ও আল কায়দা সংশ্লিষ্ট একাধিক জঙ্গি গ্রুপ একের পর এক হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। মঙ্গলবার পেশোয়ারে সেনাবাহিনী পরিচালিত স্কুলে ভয়বাহ জঙ্গি হামলায় প্রায় দেড়শ’ নিহত হওয়ার ঘটনা চোখ আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধকৌশলে গলদ রয়েছে। হামলার পর পরই পাক সেনাপ্রধান জেনারেল রাহিল শরিফ আফগানিস্তানে ছুটে গিয়ে ন্যাটোসহ আফগান কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে কার্যকর সহায়তা চেয়েছেন।
২০১০ থেকে ২০১২ পর্যন্ত পাকিস্তানের মার্কিন রাষ্ট্রদূত ক্যামেরন মান্টার বলেন, ‘পাকিস্তান সম্পর্কে ওয়াশিংটনের এখনও বড় বিভ্রান্তি রয়েছে।’ সম্প্রতি ১০০ কোটি ডলার মার্কিন সহায়তা বিষয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জেন সাকি ওয়াশিংটনে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, ‘সন্ত্রাসবাদ দমনে পাকিস্তান সরকারের সর্বস্তরে আমরা নিবিড়ভাবে কাজ করছি। প্রয়োজনে সহযোগিতা আরও বাড়াতে আমরা প্রস্তুত আছি।’ তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র অবশ্যই পাকিস্তান সরকারের প্রতি সহযোগিতা বৃদ্ধি করবে।
চার আসামির ফাঁসির জন্য মঞ্চ প্রস্তুত : পাকিস্তানের ফয়সালাবাদ কারাগারে আরও চার বন্দির ফাঁসি কার্যকরের জন্য যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে কারা কর্তৃপক্ষ। রোববার ফয়সালাবাদ কেন্দ্রীয় কারাগার এ প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। খবর ডনের।
দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট পারভেজ মোশাররফের ওপর হামলার সঙ্গে ওই চারজন জড়িত ছিল। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ওই চার আসামি হল, জুবায়ের আহমেদ, রশিদ কোরেশি, গুলাম সারোয়ার ভাট্টি ও রাশিয়ার নাগরিক আখলাক আহমেদ।
ওই চারজনকেই শনিবার ফয়সালাবাদ কেন্দ্রীয় কারাগারে নিয়ে আসা হয়েছে। তবে কখন তাদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হবে তা জানা যায়নি। এরই মধ্যে ওই চারজনের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে তাদের দেখা করানো হয়েছে।
পেশোয়ারে শান্তি সম্মেলন করবে ওআইসি
পাকিস্তানের পেশোয়ারে ওলামা ও রাষ্ট্রদূতদের নিয়ে শান্তি সম্মেলন আয়োজন করতে যাচ্ছে ওআইসি (অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশন)।
মুসলিম দেশগুলোকে একত্রিত করে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে নীতিমালা প্রণয়নে এ সম্মেলন করা হবে বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির মহাসচিব ইয়াদ আমিন মাদানী।
পেশোয়ারে খাইবার পাখতুনখোয়ার মুখ্যমন্ত্রী পারভেজ খাত্তাকের সঙ্গে শনিবার এক বৈঠকের পর এ ঘোষণা দেন মাদানী। তবে সম্মেলনের নির্দিষ্ট তারিখ উল্লেখ করেন তিনি।
এ সময় আর্মি পাবলিক স্কুলে চালানো তালেবান হামলার নিন্দা ও নিহতদের পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করেন ওআইসি মহাসচিব। তিনি নিহত শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
মাদানী বলেন, সন্ত্রাসীদের পাকিস্তানি, মুসলিম বা মানুষ নামে চিহ্নিত করা উচিত নয়। অমানবিক আচরণের কারণে তারা কোনো ধরনের সহানুভূতি পেতে পারে না।
আমি ওআইসির সদস্যদের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছি।
বৈঠকের পর তিনি পেশোয়ারে হামলায় আহত শিক্ষার্থীদের দেখতে হাসপাতালে যান। ডন।

No comments

Powered by Blogger.