তিতাসে আলীগ-যুবলীগ টেঁটাযুদ্ধ : নিহত ১

কুমিল্লার তিতাস উপজেলার কলাকান্দি বাজারে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে কলাকান্দি বাজারের একজন ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। সংঘর্ষে আট পুলিশসহ উভয় পক্ষের অন্তত অর্ধশত আহত হয়েছেন। এ সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ৩৫ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়ে। ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত উপজেলার কলাকান্দি বাজারে। গুলিবিদ্ধ ১৫ জনকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। পুলিশ নারীসহ উভয় পক্ষের দুজনকে গ্রেফতার করেছে। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। টেঁটাবিদ্ধ হয়ে নিহত কলাকান্দি বাজারের ব্যবসায়ী রেয়াজুল করিম সেন্টু মিয়া কলাকান্দি গ্রামের আবদুল জব্বারের ছেলে। পুলিশ জানায়, কলাকান্দি বাজারের আধিপত্য বিস্তার নিয়ে স্থানীয় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি হাবিবুল্লাহ বাহার ও নাছির গ্র“পের সঙ্গে স্থানীয় যুবলীগ নেতা ইব্রাহিম গ্রপের দীর্ঘদিনের শত্র“তা রয়েছে। গত কোরবানি ঈদের পর দুই গ্র“পে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়। ওই সময় উভয় পক্ষের মামলায় যুবলীগ নেতা ইব্রাহিম জেল থেকে বুধবারে বের হয়ে আসেন। বৃহস্পতিবার বিকালে ইব্রাহিম গ্র“পের যুবলীগ সদস্য ফরিদ উদ্দিন বাজারে গেলে তাকে মারধর করে। এর জের ধরে শুক্রবার সকালে ইব্রাহিম গ্র“পের লোকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। এ সময় বাহার ও নাছির গ্রুপের লোকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ধাওয়া করে। এতে উভয় পক্ষ ৪ ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষে শতাধিক রাউন্ড গোলাগুলি হয়। বাহার গ্রুপের ছোড়া টেঁটা বিদ্ধ হয়ে বাজারের ভাঙ্গারি ব্যবসায়ী রেয়াজুল করিম সেন্টু নিহত হন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে তিতাস থানা পুলিশ ৩৫ রাউন্ড ফাঁকা গুলি করে।
যুবলীগ নেতা ইব্রাহিম সাংবাদিকদের জানান, আমি জেল থেকে বের হওয়ার পর আমার কর্মী ফরিদ উদ্দিন বাজারে গেলে বাহার গ্র“পের লোকজন তাকে মারধর করে। শুক্রবার আমার লোকজন বাজারে গেলে বাহার-নাছির গ্র“পের লোকজন টেঁটা-বল্লমসহ দেশীয় বিভিন্ন অস্ত্র নিয়ে আমাদের ধাওয়া করে। এ সময় তাদের ছোড়া টেঁটা বিদ্ধ হয়ে বাজারের ভাঙ্গারি ব্যবসায়ী সেন্টু নিহত হন। এছাড়া আমার পক্ষের ২০-২৫ জন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।
কলাকান্দি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি হাবিবুল্লা বাহার সাংবাদিকদের জানান, যুবলীগ ক্যাডার ইব্রাহিম জেল থেকে বের হয়ে অস্ত্র নিয়ে বাজারে আমার পক্ষের লোকজনের দোকানপাট ভাংচুর ও লুটপাট করে নিয়ে যায়। এ সময় তার বাহিনী শতাধিক রাউন্ড গুলি ও টেঁটা বল্লম ছুড়লে বাজারের এক ব্যবসায়ী নিহত হন। এতে আমার পক্ষের ১৫-২০ জন গুলি ও টেঁটাবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
তিতাস থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তারেক মোহাম্মদ আবদুল হান্নান জানান, আওয়ামী লীগের বাহার-নাছির ও ইব্রাহিমগ্রেুপের সংঘর্ষের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছি। উভয় পক্ষের হাতে টেঁটাসহ বিভিন্ন অস্ত্র থাকায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ৩৫ রাউন্ড ফাঁকা গুলি করে। এ সময় তাদের ইট-পাটকেলের আঘাতে আমিসহ আট পুলিশ আহত হয়েছেন। ঘটনাস্থল থেকে এক নারীসহ দুজনকে আটক করা হয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.