অসম প্রেমের টানে সৈকতপাড়ে, অতঃপর...

অসম প্রেমের টানে কক্সবাজার সৈকতে এসে শ্রীঘরে স্থান হয়েছে ঢাকার স্কুলছাত্র আরাফ ও স্কুলছাত্রী আফরিন আঁখির। আফরিন আঁখির বয়স ১৪ ছুঁই ছুঁই। ক্যামব্রিয়ান স্কুল আবদুল্লাহপুর শাখার ৭ নম্বর ক্যাম্পাসের অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রী সে। অন্যদিকে মাইলস্টোন স্কুলের উত্তরা ১১ নম্বর সেক্টরের নবম শ্রেণীর ছাত্র আরাফ। তার বয়স এখনও ১৫ পূর্ণ হয়নি। এ শিশু বয়সেই তারা একে অপরের প্রেমে মজেছে। চুটিয়ে প্রেম করতে গিয়ে তারা আগেও একবার আটক হয়েছিল পুলিশের হাতে। সেবার উত্তরা পশ্চিম থানা পুলিশকে মুচলেখা দিয়ে ছাড়া পায় তারা। কিন্তু  এবারের ঘটনা ভিন্ন। উত্তরা ১১ নম্বর সেক্টরের ১০ নম্বর রোডের বাসিন্দা আবদুল্লাহ খান ও ফাতেমা খাতুনের শিশুপুত্র আরাফ ও ঢাকার রপ্তানি এলাকার শাহনাজ আকতারের শিশুকন্যা আফরিন আঁখি দেড় বছর ধরে প্রেম করে আসছিল। কিন্তু ছেলের পরিবার কিছুতেই তাদের সম্পর্ক মেনে নিচ্ছিল না। পারিবারিক ঝামেলা এড়াতে এবং পরস্পরকে আরও ঘনিষ্ঠ হিসেবে পেতে তারা এবার চলে আসে পর্যটন শহর কক্সবাজারে। মঙ্গলবার কক্সবাজার পৌঁছে তারা রুম নেয় আবাসিক হোটেল অস্টার ইকোতে। এ হোটেলে একদিন অবস্থান করে পরদিন রুম নেয় ইকরা বিচ নামে আবাসিক হোটেলে। এ হোটেলের দ্বিতীয় তলার এ/৪ রুমে ওঠে তারা। রুম থেকে সন্ধ্যায় বেড়াতে বের হয় সৈকতপাড়ে। সেখানে টাকার ব্যাগ হারিয়ে ফেলে তারা। নিরুপায় হয়ে টাকা চেয়ে পিতার কাছে ফোন করে পুত্র। পিতা বিকাশে ৫০০০ টাকাও দেন। পরে বিকাশের দোকানে যোগাযোগ করে পিতা নিশ্চিত হন, প্রেমিকা নিয়ে কক্সবাজারে অবস্থান করছে পুত্র। ‘দুষ্ট’ প্রেমিকার কবল থেকে ছেলেকে রক্ষা করতে পরিচিত এক বন্ধুর মাধ্যমে পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন পিতা। অভিযোগ পেয়ে পুলিশ বৃহস্পতিবার রাত ৮টায় সৈকতপাড় থেকে তাদের আটক করে থানায় নিয়ে আসে। থানা থেকে উভয়ের অভিভাবককে খবর দেয়া হয়। গতকাল সকালে ছেলের পিতা আবদুল্লাহ খান থানায় হাজির হলেও মেয়েপক্ষের কেউ আসেননি। ছেলের পিতা আবদুল্লাহ খান জানান, ‘খারাপ’ মেয়ের পাল্লায় পড়েছে তার ছেলে। অনেক চেষ্টা করেও তিনি ছেলেকে এ মেয়ে থেকে আলাদা করতে পারছেন না। এবার মুক্ত করে ছেলেকে বিদেশ পাঠিয়ে দেবেন- এ চিন্তায় তাকে ছাড়াতে এসেছেন। কিন্তু ছেলে প্রেমিকাকে রেখে পিতার সঙ্গে যেতে রাজি নয়। আরাফ খান জানান, আব্বু দু’জনকে জিম্মায় নিলে যাব। অন্যথায় দু’জনই জেলে যাব।
আফরিন আঁখি বলেন, আমরা দু’জন দু’জনকে ভালবাসি। দেড় বছর আগে থেকে আমাদের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক। আমরা একসঙ্গে অনেকবার রাত কাটিয়েছি, যা উভয়ের পরিবারের অভিভাবকরা জানেন। কিন্তু এখন জেদ করে তারা আমাদের মেনে নিচ্ছেন না। কক্সবাজার মডেল থানার এসআই ফিরোজ আটকের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, প্রেমিকযুগল অপ্রাপ্ত বয়স্ক। তাই ছেলের পিতার অভিযোগের ভিত্তিতে তাদের আটক করা হয়। পিতার জিম্মায় ছেলে যেতে রাজি না হওয়ায় এবং মেয়েপক্ষের কেউ না আসায় তাদের আদালতে পাঠানো হয়েছে। মেয়ের মা শাহনাজ আকতার জানান, মেয়ে তার স্কুলের বয়ফ্রেন্ডকে নিয়ে কক্সবাজার যাবে এটি তিনি জানতেন। কিন্তু সেখানে গিয়ে এমন বিপদে পড়বে তা জানতেন না। তিনি মেয়েকে মুক্ত করতে আজ সকালে কক্সবাজার পৌঁছবেন বলে জানান।

No comments

Powered by Blogger.