ছাত্রলীগকে বাঁচান

সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবি) ছাত্রলীগের সংঘর্ষের ঘটনায় স্থানীয় সংসদ সদস্য অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত এবং শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের ওপর তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত। একই সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া সংগঠন ছাত্রলীগকে বাঁচাতে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানান তিনি। শুক্রবার সকালে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় মুক্তিযোদ্ধা জাদুঘরে বঙ্গবন্ধু একাডেমি আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
অর্থমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রীকে উদ্দেশ করে সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেন, বিগত সময়ে সিলেটের এমসি কলেজের হোস্টেলের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় তখন শিক্ষামন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রী দুজনই গিয়েছিলেন। তখন শিক্ষামন্ত্রী সেখানে গিয়ে কেঁদেছিলেন। আমি এবারও শিক্ষামন্ত্রীকে বলব, আর কিছু না পারেন অন্তত একবার শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে কাঁদেন। আর অর্থমন্ত্রীকে বলব সেখানে গিয়ে রাবিশ খোবিশ বলে আসেন। প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার আধিপত্য বিস্তারের জের ধরে শাবিপ্রবিতে ছাত্রলীগের দুগ্র“পের সংঘর্ষে একজন নিহত হয়। সারা দিনব্যাপী সংঘর্ষের পর বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়।
ছাত্রলীগ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে আওয়ামী লীগের এ প্রবীণ নেতা বলেন, ছাত্রলীগকে রক্ষা করতে হবে। গুটিকয়েককর্মী ছাত্রলীগের গৌরবজ্জ্বল ইতিহাসকে ম্লান করে দিচ্ছে। সময় চলে যাচ্ছে, এখনই বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া ছাত্রলীগকে আবার নীতি ও আদর্শের পথে নিয়ে আসতে হবে। প্রধানমন্ত্রী কষ্ট করে যা কিছু অর্জন করছেন তা কয়েকজনের কারণে ম্লান হয়ে যাচ্ছে।
সোনা চোরাচালানে বিমান কর্মকর্তাদের জড়িত থাকার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে সুরঞ্জিত বলেন, এ বিষয়ে উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করা দরকার। বিমানের গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তারা বিমান চালানো বাদ দিয়ে এখন সোনা চোরাচালানের দায়িত্ব নিয়েছেন। এবার রাঘব বোয়াল নয়, ছোট পদের রুই, মৃগেল ধরা পড়েছে। এর পেছনে আরো বড় রাঘব-বোয়াল রয়েছে। এ জন্য উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি হওয়া প্রয়োজন। তিনি বলেন, আশা করেছিলাম সোনা চোরাচালানে বিমান কর্মকর্তা আটকের পর মন্ত্রী অন্তত একবার বিমানবন্দরে যাবেন। কিন্তু তিনি যাননি। আশা করি বিমানমন্ত্রী ও বিমানের চেয়ারম্যান দায়িত্ব নিয়ে বলবেন, এ বিষয়ে তারা কি পদক্ষেপ গ্রহণ করতে যাচ্ছেন।
আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি বলেন, সোনা চোরাচালানের ঘটনায় বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয় তাদের দায়িত্ব পালন করবেন। কিন্তু আইন মন্ত্রণালয়কেও এ বিষয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে দোষীদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে।
সম্প্রতি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক হত্যার ঘটনার শাস্তি দাবি করে সুরঞ্জিত বলেন, গোয়েন্দা সংস্থা ও পুলিশ বাহিনী নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করলে আমাদের বিচলিত হতে হয়। শিক্ষকের হত্যাকাণ্ডের পরে আইনশৃংখলা বাহিনীর উচ্চ পর্যায়ের লোকজনকে বদলি করা হয়েছে। এটা আরও আগে করা দরকার ছিল। গতকালকে (বৃহস্পতিবার) সিলেটের ঘটনায় আমরা দেখলাম ঘণ্টার পর ঘণ্টা সংঘর্ষের ঘটনা, পুলিশ বাহিনী পরে এসেছে। পরে এসেও তারা কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি। সভায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের উপদেষ্টা ও ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হাজী মোহাম্মদ সেলিম।

No comments

Powered by Blogger.