দিল্লিতে বাংলাদেশী কিশোরীর ‘পতিতাবৃত্তি’র নির্মম কাহিনী

ভারতের রাজধানী নয়া দিল্লির মান্দাওয়ালি এলাকা থেকে ১৫ বছর বয়সী বাংলাদেশী এক কিশোরীকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা থেকে তাকে প্রথমে কলকাতা ও পরে দিল্লিতে পতিতাবৃত্তির জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। প্রায় ২ বছর আগে আখতার নামে এক নারীর কাছে তার পিতা তাকে ‘বিক্রি’ করেছিল। মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে তাকে ফ্রান্সে পাচারের চেষ্টাও করা হয়। আদম ব্যবসায়ীরা তাকে বহুবার ধর্ষণও করে। হতভাগ্য ওই তরুণীর পরিচয় বা বাংলাদেশে কোন জেলায় তার বাড়ি, তা উল্লেখ করা হয়নি। এ ঘটনায় জড়িত আলমগীর ও রাজকুমার নামে দুই আদম ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আখতার নামে ওই নারী আদম ব্যবসায়ী এখনও পলাতক ও তাকে গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন ডেকান হেরাল্ড। পুলিশ বলেছে, ফ্রান্সের একটি সন্ত্রাসী দলের কাছে ওই তরুণীকে বিক্রি করার জন্য একটি চুক্তিও চূড়ান্ত করেছিল আদম পাচারকারী চক্রটি। সৌভাগ্যক্রমে, গত বুধবার ওই তরুণী পালাতে সক্ষম হয়। কারকারদুমা আদালতে তোলা হয় তাকে। সেখানে সে ভয়াবহ যৌন নির্যাতন ও মানবেতর পরিস্থিতির কথা ব্যক্ত করে ও পালানোর সময় একজন সহায়তাকারীর কথা উল্লেখ করে। দিল্লির হযরত নিজামুদ্দিন এলাকার বাসিন্দা নারী আদম ব্যবসায়ী আখতার। আলমগীর নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে আখতার একটি আন্তর্জাতিক অপরাধী চক্রের সদস্য বলেও অভিযোগ রয়েছে। ঢাকা থেকে কেনার পর প্রথমদিকে ওই কিশোরীকে কলকাতায় রাখা হয়েছিল। সেখানে তাকে পতিতাবৃত্তিতে বাধ্য করা হয়। পুলিশের এক কর্মকর্তা জানান, ওই কিশোরীর দাবি তাকে হত্যার হুমকি দেয়া হয়েছিল। অপরাধ চক্রের নির্দেশ না মানায় তাকে বেধড়ক মারধর করা হয়েছে। প্রায় ৬ মাস আগে তাকে রাজধানী দিল্লিতে নিয়ে যাওয়া হয়। দিল্লির বিনোদ নগরে রাজকুমার নামে এক ব্যক্তির কাছে তাকে বিক্রি করা হয়। দিল্লিতে তাকে পতিতাবৃত্তিতে বাধ্য করা হয়। সম্প্রতি একটি চুক্তির মাধ্যমে তাকে ফ্রান্সের একটি আন্তর্জাতিক অপরাধ চক্রের কাছে বিক্রি করা হয়। চুক্তিটি স্বাক্ষরের জন্য আখতার ওই তরুণীর মা এবং আলমগীর পিতা হিসেবে নিজেদের পরিচয় উল্লেখ করেছিল। ফ্রান্সে যাওয়ার জন্য তারা ৪টি পাসপোর্টও বানায়। চুক্তি সম্পর্কে জানার পর মান্দাওয়ালি এলাকার একটি বাড়ি থেকে ওই কিশোরী পালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। আখতারকে গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। পুলিশ সন্দেহ করছে, এ অপরাধ চক্রটি বেশ কয়েকজন টিনএজ মেয়েকে কিনেছে বা অপহরণ করে পতিতাবৃত্তিতে বাধ্য করিয়েছে এবং তাদের বিদেশেও মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে বিক্রি করেছে। মান্দাওয়ালি থানায় ৩৭০, ৩৭৬ ও ১২০-বি ধারায় মামলা করা হয়েছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ‘প্রোটেকশন অব চিলড্রেন ফ্রম সেক্সুয়াল অফেন্সেস অ্যাক্টে’র আওতায় অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। আলমগীর ও রাজকুমার তাকে বেশ কয়েকবার ধর্ষণ করেছে বলেও অভিযোগ এনেছে ওই কিশোরী।

No comments

Powered by Blogger.