সৌদিতে হামলার হুমকি বাগদাদির

সৌদি আরবের শাসকদের বিরুদ্ধে হামলার আহ্বান জানিয়েছেন আইএসের (ইসলামিক স্টেট) প্রধান আবু বকর আল-বাগদাদি। গত বৃহস্পতিবার প্রচারিত এক অডিও বার্তায় সৌদিসহ পাঁচটি আরব রাষ্ট্রে খেলাফতের সীমানা বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলায় বাগদাদি নিহত বা আহত হয়েছেন এমন খবর প্রকাশিত হওয়ার পর এই অডিও বার্তা প্রকাশ করেছে আইএস। খবর রয়টার্সের। বাগদাদি বলেন, সিরিয়া ও ইরাকে আইএসের ওপর যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন হামলা ব্যর্থ হয়েছে। তারা এখন ভীতসন্ত্রস্ত ও দুর্বল। বিশ্বব্যাপী জিহাদের ডাক দিয়ে তিনি বলেন, ও ইসলামিক স্টেটের যোদ্ধারা, জিহাদের অগ্নিগিরি বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দাও। সব এক নায়কের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে বিশ্বকে আলোকিত কর।
তিনি আরও বলেন, আমরা ইসলামিক স্টেটের সীমানা নতুন কয়েকটি দেশে বাড়ানোর ঘোষণা দিচ্ছি। এগুলো হল- হারামাইন (সৌদি আরব), ইয়েমেন, মিসর, লিবিয়া ও আলজেরিয়া।পবিত্র মক্কা ও মদিনা নগরী আল-হারামাইন হিসেবে পরিচিত। সৌদির (হারামাইন) নাগরিকদের উদ্দেশ্যে বাগদাদি বলেন, ও হারামাইনের সন্তানরা... সেখানে বিশ্বাসঘাতকতা ও রোগ ছড়িয়ে পড়েছে... তোমার তলোয়ার উঠাও ও জীবন কেড়ে নাও। সেখানে মুহাজিরদের কোনো নিরাপত্তা নেই। অডিও বার্তায় ইয়েমেনে হুথি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে জিহাদিদের আহ্বান জানান তিনি। এছাড়া মিসরের সিনাই উপত্যকায় সামরিক বাহিনীর সদস্যদের ওপর জিহাদিদের হামলার ঘটনার প্রশংসা করেন। এ হামলা মিসরের একনায়কের ওপর আঘাত বলে উল্লেখ করেন বাগদাদি। গত সপ্তাহে মিসরের জিহাদি সংগঠন আনসার বাইত আল-মাকদিস আইএসের প্রতি তাদের সমর্থন ব্যক্ত করে। এর আগে লেবানন, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের বেশ কয়েকটি জিহাদি সংগঠন আইএসের প্রতি তাদের সমর্থন ব্যক্ত করেছিল।১৭ মিনিটের ওই বার্তায় বাগদাদি বলেন, আইএস নেতাদের লক্ষ্য করে চালানো বিমান হামলা ব্যর্থ হয়েছে। বার্তায় শত্র“দের ওপর হামলা অব্যাহত রাখতে জিহাদিদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। বলেন, একজন যোদ্ধা বেঁচে থাকতে এ লড়াই বন্ধ হবে না। হামলার তীব্রতাও বাড়ানো হবে।সৌদি আরবের রাজকীয় শাসনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য দেশটির আইএস সমর্থকদের প্রতি আহ্বান জানান আইএসপ্রধান। আইএস বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন জোটের বিমান হামলায় সৌদি আরব ইতিমধ্যে যোগ দিয়েছে। বাগদাদি বলেন, মুসলিমরা নিশ্চিত হও, তোমাদের রাষ্ট্র ভালো ও সর্বোত্তম অবস্থায় আছে। আল্লাহর আদেশে এই অভিযান চলতেই থাকবে। মুজাহিদরা রোমে পৌঁছানো পর্যন্ত তাদের অভিযান চালিয়ে যাবে।তিনি আরও বলেন, ইসলামী খেলাফত ফিরে আসায় যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছে। শিগগিরই ইহুদি, শয়তান, জালেম ও ধর্মযোদ্ধা স্থলযুদ্ধে নামতে বাধ্য হবে। তাদের সেনারা সেখানেই নিহত ও ধ্বংস হবে।প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার আইএস নেতাদের বৈঠক লক্ষ্য করে ইরাকের মসুলে বিমান হামলা চালায় মার্কিন নেতৃত্বাধীন জোট। ওই হামলায় বাগদাদি আহত অথবা নিহত হয়েছে বলে ইরাকি প্রশাসন দাবি করে। তবে যুক্তরাষ্ট্র এ সংবাদ নিশ্চিত করেনি।বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ওই হামলার ঘটনায় ওঠা গুজবের কাউন্টার হিসেবে এ ভিডিও বার্তা প্রকাশ করা হয়েছে।তবে বৃহস্পতিবার ওয়াশিংটনে এক সংবাদ সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র জেন সাকি এ ধরনের বক্তব্যকে আগ্রাসী বলে অভিহিত করেছেন।

No comments

Powered by Blogger.