কেয়ামত পর্যন্ত পূরণ করলেও যুক্তরাষ্ট্রের নির্দেশনা শেষ হবে না : তোফায়েল

বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, জিএসপি নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যেভাবে একের পর এক নির্দেশনা দিয়ে চলেছে তাতে মনে হচ্ছে, কেয়ামত পর্যন্ত পূরণ করলেও তা শেষ হবে না। তাদের শর্ত বাড়তেই থাকবে। তবে দেশের অর্থনীতি যে হারে এগিয়ে যাচ্ছে তাতে ২০২১ সালের পর বাংলাদেশের জিএসপি কিংবা অন্য কোটা সুবিধার দরকার হবে না।
আজ শনিবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ঢাকা ট্রিবিউন আয়োজিত ‘পোশাক খাতের চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক এক গোলটেবিল আলোচনায় একথা বলেন বাণিজ্যমন্ত্রী।
তিনি বলেন, অ্যাকর্ড ও অ্যালায়েন্স পোশাক শিল্পের খুঁটিনাটি ত্রুটিকেও বড় আকারে প্রচার করায় পোশাক রফতানি কমে গেছে।
জাফর সুবহানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) বাংলাদেশ প্রতিনিধি শ্রীনিবাস রেড্ডি, অ্যাকর্ডের প্রতিনিধি রব ওয়েজেস, অ্যালায়েন্স প্রতিনিধি মেজবাহ রবিন, বিজিএমইএ সভাপতি আতিকুল ইসলাম, সাবেক সভাপতি টিপু মুন্সী এমপি, আনোয়ার-উল আলম পারভেজ ও আব্দুস সালাম মুর্শেদী, কর্মজীবি নারীর সভাপতি শিরিণ আক্তার এমপি, বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক আর্বিটেশন সেন্টারের প্রধান নির্বাহী তৌফিক আলী, শ্রমিক নেতা সিরাজুল ইসলাম রনি, বিলসের ড. ওজেদুল ইসলাম প্রমুখ।
দেশে অনেক শ্রমিক নেতা রয়েছেন যারা এই শিল্পের বিরুদ্ধে বহির্বিশ্বে অপপ্রচার ছড়াচ্ছেন দাবি করে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, এ শিল্পের স্বার্থে এসব অপপ্রচার বন্ধ করতে হবে। শ্রমিকদের অধিকারের জন্য বিদেশী ক্রেতারা পোশাক শিল্প উদ্যোক্তাদের চাপ সৃষ্টি করছে। অথচ ইউরোপীয় ইউনিয়নভূক্ত দেশগুলোয় সরকারি খাতে ২৫ শতাংশ ও বেসরকারি খাতে ট্রেড ইউনিয়ন রয়েছে মাত্র ৯ শতাংশ।
রানা প্লাজা পরবর্তী ইমেজ সংকট কাটাতে বেগ পেতে হচ্ছে জানিয়ে বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি আনোয়ার-উল আলম পারভেজ বলেন, বাংলাদেশের কারখানাগুলোতে যে মাত্র দুই শতাংশ সমস্যা রয়েছে তা বিদেশীদের সামনে ভালোভাবে তুলে ধরা হয়নি। ফলে কোনো ক্রেতা নতুন প্রতিষ্ঠানে অর্ডার দিচ্ছে না। অর্ডার পেতে হলে কারখানাগুলোকে কিয়ারিং সার্টিফিকেট দেখাতে হয়। তা না হলে অর্ডার হচ্ছে না। এতে করে রফতানি কমে গেছে।
তিনি অভিযোগ করেন, বাংলাদেশের উদ্যোক্তাদের সহায়তা না দিয়ে সরকার চীন, জাপান, কোরিয়াকে অর্থনৈতিক জোনসহ অবকাঠামো সুবিধা দেয়ার আশ্বাস দিচ্ছে। টেকসই অর্থনীতির জন্য এটা শুভ লক্ষণ নয়। দেশী উদ্যোক্তাদের সমস্যাগুলো অগ্রাধিকারভিত্তিতে সমাধানের দাবি জানান তিনি।
আব্দুস সালাম মুর্শেদী বলেন, মার্কেটে প্রতিযোগিতা বাড়াতে হলে সংস্কার করা কারখানাগুলোর গ্যাস ও বিদ্যুৎ সমস্যার সমাধান করতে হবে। দেশীয় উদ্যোক্তাদের শিল্প কারখানাতে গ্যাস ও বিদ্যুতের সরবরাহ বাড়ালে বিদেশী বিনিয়োগের দরকার হবে না বলেও দাবি করেন তিনি। শিল্পের সহযোগী খাতে বিনিয়োগ বাড়ালে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব বলে মনে করেন সালাম মুর্শেদী।
পোশাক কর্মীদের নিরাপত্তার জন্য অ্যাকর্ড ও অ্যালায়েন্সের কারখানা পরিদর্শনে বেশ কিছু কারখানা বন্ধ হয়েছে জানিয়ে শ্রমিক নেতা সিরাজুল ইসলাম রনি বলেন, কারখানাগুলোর খবর নেয়া হলেও বেকার হয়ে পড়া শ্রমিকদের খবর কেউ নিচ্ছে না।
সব কারখানায় ট্রেড ইউনিয়ন চালুর সুযোগ দাবি করে তিনি বলেন, সঠিকভাবে ট্রেড ইউনিয়ন গড়ে উঠলে তাতে মালিক শ্রমিক সম্পর্কের উন্নতি হবে এবং উৎপাদনশীলতা বাড়বে।

No comments

Powered by Blogger.