রুমানার স্বপ্ন অপূর্ণই রয়ে গেল

রুমানার স্বপ্ন ছিল রাষ্ট্রবিজ্ঞানে সম্মান শ্রেণীতে পড়ার। কিন্তু মুহূর্তের ঝড় তাঁর সবকিছু এলোমেলো করে দিল। একটি পিকআপ কেড়ে নিল সদ্য উচ্চমাধ্যমিক পাস করা এই মেধাবী ছাত্রীর সব স্বপ্ন।
কাটুনিয়া কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করা রুমানা খাতুনের (১৮) বাড়ি সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ উপজেলার কাটুনিয়া গ্রামে।
দরিদ্র বাবা হাবিবুর রহমান গাজীর চার সন্তানের মধ্যে সবার বড় রুমানা। ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল শুক্রবার সকাল সাড়ে নয়টার দিকে শ্যামনগর উপজেলার রামজীবনপুর এলাকায়। নিহত ছাত্রীর পরিবারসহ সহপাঠী আর গ্রামজুড়ে চলছে শোকের মাতম। গতকাল ছিল জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে সম্মান শ্রেণীতে ভর্তি পরীক্ষার নির্ধারিত দিন। সকালে বাড়ি থেকে বের হয়ে রুমানা সহপাঠীদের সঙ্গে মিলে ইঞ্জিনচালিত ভ্যানে করে পরীক্ষাকেন্দ্র শ্যামনগর মহসীন কলেজের উদ্দেশে রওনা হন। পথে রামজীবনপুর এলাকায় পেছন থেকে দ্রুতগতিতে আসা একটি খালি পিকআপের ধাক্কায় ইঞ্জিনচালিত ভ্যানটি উল্টে যায়। এতে রুমানা ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান।
হাবিবুর রহমান গাজী জানান, রুমানার স্বপ্ন ছিল রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতক পাস করে কলেজশিক্ষক হওয়ার। পারিবারিক অস্বচ্ছলতার কারণে রুমানা একমাত্র ছোট ভাইসহ অপর দুই বোনকে পড়াতেন। বাড়ি ফিরে ছোট বোনকে অঙ্ক করাবেন—এ কথা বলে গিয়েছিলেন। কিন্তু তিনি আর বাড়িতে ফিরবেন না, ছোট বোনকে আর অঙ্ক শেখাবেন না বলে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন হাবিবুর রহমান গাজী।
এ দুর্ঘটনায় আহত আরও ১১ জনের মধ্যে রুমানার সহপাঠী শান্তিলতা, পুষ্পলতা, ইস্রাফিল হোসেন, খাদিজা আক্তার ও আরিফুল ইসলামকে শ্যামনগর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ঘটনার পরপরই বিক্ষুব্ধ জনতা শ্যামনগর-কালীগঞ্জ সড়ক অবরোধ করে। এক ঘণ্টা পর পুলিশ এসে অবরোধ তুলে দেয়। পরে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে প্রধান প্রধান সড়কে ইঞ্জিনচালিত ভ্যান চলাচল বন্ধের আহ্বান জানিয়ে মাইকিং করা হয়েছে।
শ্যামনগর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সফিকুল ইসলাম জানান, পিকআপটি জব্দ এবং এর চালকের সহযোগীকে আটক করা হয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.