পটুয়াখালী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট- ছাত্রলীগের ভাঙচুর, বিস্ফোরণ ছাত্রাবাস বন্ধ ঘোষণা

ছাত্রলীগের নেতাদের মুক্তির দাবিতে গত বৃহস্পতিবার রাতভর পটুয়াখালী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে ভাঙচুর চালিয়েছেন ছাত্রলীগের কর্মীরা। এ সময় তাঁরা অধ্যক্ষের বাসভবন ও স্টাফ কোয়ার্টারে হামলা চালান এবং ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আতঙ্ক তৈরি করেন।
এ ঘটনায় পুলিশ ইনস্টিটিউটের ক্যাম্পাস থেকে ১১ জন ছাত্রকে আটক করেছে এবং দুটি গুলি, দা, রডসহ কিছু দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করেছে। গতকাল শুক্রবার ইনস্টিটিউটের প্রশাসনিক একাডেমিক সভায় অনির্দিষ্টকালের জন্য ছাত্রবাস বন্ধ ঘোষণা ও সাত দিন একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
ইনস্টিটিউট সূত্রে জানা গেছে, জেলা ছাত্রলীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের জের ধরে পটুয়াখালী সরকারি কলেজ এলাকায় বৃহস্পতিবার দুপুরে সংঘর্ষে চারজন আহত হয়।
এ ঘটনায় পুলিশ পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট ছাত্রলীগের সভাপতি রাকিব খান, পটুয়াখালী সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আতিকুর রহমান, জেলা ছাত্রলীগের সদস্য লুৎফর রহমান ও সরকরি কলেজ শাখার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রাসেল মিয়াকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
এ ঘটনায় পটুয়াখালী সরকারি কলেজ ও পটুয়াখালী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ছাত্রলীগের কর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। রাত ১২টার দিকে ইনস্টিটিউটের প্রধান ফটক বন্ধ করে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা বিক্ষোভ শুরু করেন। একপর্যায়ে তাঁরা ইটপাটকেল নিক্ষেপ, ইনস্টিটিউটের বিভিন্ন ভবনের দরজা-জানালার কাচ ও আসবাব ভাঙচুর শুরু করেন এবং প্রধান ফটকে আসবাব স্তূপ করে আগুন ধরিয়ে দেন। তাঁরা অধ্যক্ষের বাসভবন ও স্টাফ কোয়ার্টারে হামলা চালান। কিছুক্ষণ পর পর তাঁরা ককটেল বিস্ফোরণ ঘটালে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। দিবাগত রাত তিনটার দিকে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
পটুয়াখালী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম জানান, ক্যাম্পাসে ককটেল বিস্ফোরণ, গুলিবর্ষণসহ ব্যাপক ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড চলানো হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে শটগানের ১০৬টি গুলি ছোড়া হয়। এ সময় ১১ জন ছাত্রকে আটক করা হয়। তাঁরা হলেন: ছিদ্দিক, আল-আমিন, তুষার, আশিকুর রহমান, সুমন দাস, মিজানুর, রাজু, মোয়াজ্জেম হোসেন, আরিফুর রহমান, ইব্রাহিম সাগর ও আল-মামুন। ছাত্রদের ছোড়া ইটপাটকেলের আঘাতে পুলিশের পাঁচ সদস্য আহত হয়েছেন।
ইনস্টিটিউটের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ জহিরুল ইসলাম বলেন, গতকাল প্রশাসনিক একাডেমিক সভায় অনির্দিষ্টকালের জন্য ছাত্রাবাস বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। বিকেল চারটার মধ্যে শিক্ষার্থীদের ছাত্রাবাস ত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ভাঙচুরের কারণে পরীক্ষাগারসহ শ্রেণীকক্ষগুলোর আসবাবের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সাত দিন একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ রাখা ও পূর্বানুমতি ছাড়া ক্যাম্পাসে মিছিল-সমাবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ঘটনা তদন্তে হোস্টেল সুপার কামরুজ্জামান খানকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তবে কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে পরীক্ষাগুলো নির্ধারিত সময় অনুষ্ঠিত হবে।

No comments

Powered by Blogger.