শেষ মুহূর্তে সমঝোতার জোর চেষ্টা

জাতিসংঘের অষ্টাদশ জলবায়ু সম্মেলনে একটি সমঝোতায় পৌঁছানোর জন্য শেষ মুহূর্তেও জোর চেষ্টা করেছেন বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা। মতানৈক্য দূরে ঠেলে আপসের ভিত্তিতে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য একটি চুক্তির জন্য বাড়তি সময় নিয়ে আলোচনা চালিয়ে যান তাঁরা।
কাতারের রাজধানী দোহায় আয়োজিত ওই সম্মেলন গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু প্রতিনিধিরা চাইছিলেন ইতিবাচক কোনো অগ্রগতির মধ্য দিয়ে এই পর্বের আলোচনা শেষ করতে। এ জন্য নির্ধারিত সময়ের পরও তাঁরা আলোচনা চালিয়ে যান।
গতকাল মধ্যরাতে দোহা থেকে বিবিসির এক সংবাদদাতা জানান, অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, রাতভর আলোচনা চলবে। এমনকি তা শনিবারেও গড়াতে পারে।
কাতারের প্রেসিডেন্ট আবদুল্লাহ বিন হামাদ আল-আত্তিয়াহ বলেন, ‘সারা বছর আমি এখানে বসে থাকতে পারি। আপনারা সিদ্ধান্ত নেন কখন যাবেন।’ প্রতিনিধিদের ছোট ছোট দলে বিভক্ত হয়ে নিজেদের মধ্যকার মতবিরোধের ক্ষেত্র চিহ্নিত করে তা মীমাংসার পরামর্শ দেন তিনি।
গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন দ্রুত হ্রাসের জন্য ধনী দেশগুলোর সদিচ্ছার অভাব রয়েছে বলে উন্নয়নশীল দেশগুলো অভিযোগ করেছে।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ও যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার কারণে তাদের কাছে অপর্যাপ্ত অর্থ রয়েছে। তাই বৈশ্বিক উষ্ণতা হ্রাসে দরিদ্র দেশগুলোকে আর্থিক সাহায্যের সুনির্দিষ্ট প্রতিশ্রুতি দেওয়ার সুযোগ এখন নেই। কার্বন নির্গমন বা বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির জন্য ধনী দেশগুলোই বেশি দায়ী।
এদিকে জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে রাজনৈতিক নেতারা সিদ্ধান্ত গ্রহণে বিলম্ব করলেও গ্রিনহাউস গ্যাসের ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে বিজ্ঞানীরা অব্যাহতভাবে সতর্কবার্তা দিয়ে যাচ্ছেন। জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ন্ত্রণে ধনী দেশগুলো বিপুল অঙ্কের তহবিল দেবে বলে কোপেনহেগেনে ২০০৯ সালে অনুষ্ঠিত পঞ্চদশ জলবায়ু সম্মেলনে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। তবে দরিদ্র দেশগুলোকে ওই অর্থ প্রদানের প্রক্রিয়া এখনো সুনির্দিষ্ট করা হয়নি।
যুক্তরাষ্ট্রের পরিবেশকর্মীরা বলেছেন, তাঁরা জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ন্ত্রণের ব্যাপারে মার্কিন নেতাদের ভূমিকা নিয়ে লজ্জিত। অর্থ-সহায়তা, জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিপূরণ বণ্টন, কার্বন নির্গমনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ প্রভৃতি বিষয় নিয়ে সম্মেলনে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর মধ্যে তুমুল বিতর্ক হয়। এএফপি, বিবিসি।

No comments

Powered by Blogger.