আবারও ব্যর্থ ওয়েভরাইডার

বিশ্বের যেকোনো স্থানে এক ঘণ্টার মধ্যে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো যাবে অথবা এর চেয়েও কম সময়ে পেঁৗছানো যাবে নিউ ইয়র্ক থেকে লন্ডনে_এমনই এক উচ্চাভিলাষী লক্ষ্য মাথায় রেখে গত মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী মানববিহীন হাইপারসনিক বিমানের উৎক্ষেপণের পরীক্ষায় নামে। তবে দুর্ভাগ্যজনকভাবে ব্যর্থ হয়েছে তারা।


আশা করা হচ্ছিল, শব্দের চেয়ে ছয় গুণ (ঘণ্টায় তিন হাজার ৬০০ মাইল) দ্রুততায় ছুটবে 'ওয়েভরাইডার' নামের হাইপারসনিক এই এয়ারক্রাফট। কিন্তু উৎক্ষেপণের কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই প্রশান্ত মহাসাগরে ভেঙে পড়ে এর ধাতব শরীর।
যুক্তরাষ্ট্রের বিমানবাহিনী গত বুধবার এক বিবৃতিতে জানায়, পেছনের ত্রুটিপূর্ণ পাখার কারণেই বিধ্বস্ত হয়েছে ওয়েভরাইডার। একটি দূর-নিয়ন্ত্রণ রকেট উৎক্ষেপকে করে গত মঙ্গলবার একে আকাশে ছোঁড়া হয়। উড্ডয়নের ১৬ সেকেন্ডের মধ্যে পেছনের পাখার ত্রুটি ধরা পড়ে। উৎক্ষেপণের পর মাত্র ১৫ সেকেন্ড আকাশে ভেসে ছিল ওয়েভরাইডার। ত্রুটির কারণে এর র‌্যামজেট ইঞ্জিন চালু করা সম্ভব হয়নি। ফলে লস অ্যাঞ্জেলেসের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় পয়েন্ট মুগুর কাছাকাছি প্রশান্ত মহাসাগরে হারিয়ে যায় এক্স-৫১এ নামে পরিচিত ওয়েভরাইডার। সব মিলিয়ে মাত্র ৩১ সেকেন্ড আকাশে ছিল যানটি। যদিও মার্কিন বিজ্ঞানীদের লক্ষ্য ছিল অন্তত পাঁচ মিনিট উড্ডয়নের।
পরীক্ষার সফল পরিসমাপ্তি ঘটলেও সাগরেই সলিলসমাধি ঘটত ওয়েভরাইডারের। উদ্ধারের কোনো পরিকল্পনাও ছিল না। তবে ইঞ্জিনই চালু না হওয়ায় আবারও ব্যর্থ হলেন যুক্তরাষ্ট্রের বিজ্ঞানীরা। এক্স-৫১এ ধাঁচের মোট চারটি বিমান তৈরি করে মার্কিন সেনাবাহিনী। মঙ্গলবারেরটি দিয়ে তিনটির পরীক্ষা ইতিমধ্যেই সম্পন্ন ও ব্যর্থ হয়েছে। প্রথম দফা পরীক্ষা চালানো হয় ২০১০ সালে। পাঁচ মিনিট উড়াল দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে সেবার যানটি তিন মিনিট উড়তে সক্ষম হয়। শেষ ফ্লাইটটির পরীক্ষা কবে চালানো হবে, তা জানায়নি বিমানবাহিনী।
মূলত সামরিক কাজে ব্যবহারের পরিকল্পনা থেকেই এ কাজে নামে মার্কিন সামরিক বাহিনী। সাফল্য পেলে বিমানের স্থলে ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করবে তারা। সেই ক্ষেত্রে সফল হলে বিশ্বের যেকোনো স্থানে এক ঘণ্টার মধ্যেই হামলা চালাতে পারবে মার্কিন বাহিনী। আর এ প্রযুক্তি যাত্রীবাহী বিমানে ব্যবহার করা হলে টোকিও থেকে প্যারিসে যেতে সময় লাগবে মাত্র আড়াই ঘণ্টা। এর আগে শব্দের দ্বিগুণ গতিসম্পন্ন কনকর্ড বিমান চালু করা হয়েছিল। তবে অতিরিক্ত খরচের কারণে ২০০৩ সালে বন্ধ করে দেওয়া হয় এটি। কনকর্ড লন্ডন থেকে নিউ ইয়র্কে পেঁৗছাত তিন ঘণ্টায়।
ওয়েভরাইডারের নির্মাণ ও পরীক্ষার খরচ প্রকাশ করা হয়নি। সূত্র : বিবিসি, রয়টার্স।

No comments

Powered by Blogger.