স্মরণসভায় শেখ হাসিনা- রাজনৈতিক দলের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না, তা ঠিক নয়

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, রাজনৈতিক দলের অধীনে নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে না, তা ঠিক নয়। সরকার পরিবর্তন হবে সাংবিধানিক প্রক্রিয়ায়। যাঁরা সংসদে আছেন, দেশের গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক ধারা অব্যাহত রাখতে তাঁদের সবাইকে সহযোগিতা করতে হবে।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগ আয়োজিত স্মরণসভায় সভাপতির বক্তব্যে শেখ হাসিনা এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, যাঁদের জনগণের ভোট পাওয়ার যোগ্যতা নেই, রাজনৈতিক দল গড়েও ব্যর্থ হন, কিন্তু ক্ষমতায় যাওয়ার খায়েশ আছে; তাঁরাই সব সময় অলিগলি খোঁজেন কীভাবে অবৈধ ও অগণতান্ত্রিক পথে ক্ষমতায় যাওয়া যায়। তাঁদের ক্ষমতার আকাঙ্ক্ষা আছে, কিন্তু জনগণের কাছে যাওয়ার যোগ্যতা নেই। এ কারণেই তাঁরা গণতন্ত্রকে ভয় যান। অসাংবিধানিক পথে কেউ ক্ষমতায় এলেই মনে করেন তাঁরা গুরুত্ব পাবেন। তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের সময় সবগুলো নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয়েছে। একটি নির্বাচন নিয়েও কেউ প্রশ্ন তুলতে পারেনি।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘ইত্তেফাক-এর মানিক মিয়ার ছেলে মইনুল হোসেন বঙ্গবন্ধুর খুনিদের নিয়ে দল গঠন করেন। এরশাদ ফারুককে দিয়ে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন করালেন। খালেদা জিয়া বঙ্গবন্ধুর খুনি হুদা, রশিদকে ১৫ ফেব্রুয়ারির ভোটারবিহীন নির্বাচনে সাংসদ করলেন। এই পরিস্থিতিতে আমাকে রাজনীতি করতে হয়েছে।’
বঙ্গবন্ধুকন্যা ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের বিয়োগান্তক ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। তিনি বলেন, ‘এক দিনে মা-বাবাসহ পরিবারের সবাইকে হারিয়েছি। তখন প্রতিজ্ঞা করেছিলাম, জনগণের অধিকার ফিরিয়ে দেব।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘২০০১ সালের নির্বাচনের আগে আমি গ্যাস বিক্রি করতে রাজি হইনি বলে ক্ষমতায় আসতে দেওয়া হয়নি। সে সময় গ্যাস বিক্রি করতে রাজি হয়েছিলেন বিএনপি নেত্রী। আমি জাতির জনকের কন্যা। আমার বাবা এ দেশের মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য জীবন দিয়ে গেছেন। বাংলাদেশের মানুষের এতটুকু ক্ষতিও হোক, সেটি আমি চাই না।’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেন, কিছু বুদ্ধিজীবী, কলাম লেখক ও সম্পাদক রাজনীতিকে জটিল করে তুলেছেন। তাঁরা চান, এই বাংলাদেশে স্বাভাবিক জীবনধারা যেন না থাকে।
১৫ আগস্ট খালেদা জিয়ার জন্মদিন পালনের সমালোচনা করে সৈয়দ আশরাফ বলেন, ‘যে দলের নেত্রী ১৫ আগস্ট ইচ্ছাকৃতভাবে জন্মদিন পালন করেন, যে ব্যক্তি ১৫ আগস্ট জন্মদিন করে উল্লাস করেন, তাঁদের সঙ্গে কি সমঝোতা সম্ভব?’ তিনি বলেন, হত্যাকারী, খুনি, খুনির আশ্রয়দাতা ও মদদদানকারীদের সঙ্গে ঐক্য সম্ভব নয়। কোনো খুনির সঙ্গে রাজনীতি সম্ভব নয়। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে চিরদিনের জন্য যারা পৃথিবী থেকে সরাতে চায়, তাদের সঙ্গে ঐক্য নয়।
স্মরণসভায় আরও বক্তৃতা করেন আওয়ামী লীগের নেতা সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, মতিয়া চৌধুরী, দুর্গাদাস ভট্টাচার্য, মোহাম্মদ নাসিম, এ কে এম রহমতউল্লাহ, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী প্রমুখ। সভা পরিচালনা করেন নূহ-উল আলম লেনিন ও অসীম কুমার উকিল।

No comments

Powered by Blogger.