জাতীয় স্বার্থে দুই জেনারেলকেঅবসরে পাঠানো হয়েছে

মিসরের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসি বলেছেন, ফিল্ড মার্শাল হুসেইন তানতাউয়ি ও সামরিক বাহিনীর চিফ অব স্টাফ সামি আনানকে জাতীয় স্বার্থে অবসরে পাঠানো হয়েছে। দেশ ও দেশের বাইরে তুমুল আলোড়ন তোলা নিজের ওই সিদ্ধান্তের ব্যাখ্যা দিয়ে মুরসি বলেন, ‘আজ (রোববার) আমি যে সিদ্ধান্ত নিয়েছি,


তা কোনো সুনির্দিষ্ট ব্যক্তিকে লক্ষ্য করে নয়, কোনো প্রতিষ্ঠানকে বিব্রত করার অভিপ্রায়ও আমার নেই—এমনকি কারও স্বাধীনতা খর্ব করাও আমার উদ্দেশ্য ছিল না।’
মিসরের প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘আমি কারও বিরুদ্ধে কোনো নেতিবাচক বার্তা দিতে নয়, দেশ ও জনগণের স্বার্থেই আমি এটি করেছি।’
গত রোববার মিসরের শক্তিশালী সামরিক বাহিনীর শীর্ষ দুই জেনারেলকে সরিয়ে দেওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই এসব কথা বলেন প্রেসিডেন্ট মুরসি। পবিত্র রমজান উপলক্ষে গত রোববার এক ধর্মীয় অনুষ্ঠানে দেওয়া ভাষণে জেনারেলদের সরিয়ে দেওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করেন তিনি।
অনুষ্ঠানে সামরিক বাহিনীর প্রশংসা করে মিসরের প্রেসিডেন্ট বলেন, তারা এখন দেশরক্ষার পবিত্র কাজে নিয়োজিত থাকবে।
প্রেসিডেন্ট ও সামরিক বাহিনীর মধ্যে ক্ষমতা নিয়ে যে দ্বন্দ্ব চলে আসছে, এর মধ্যে গত রোববার আকস্মিকভাবে ফিল্ড মার্শাল হুসেইন তানতাউয়ি এবং সামরিক বাহিনীর চিফ অব স্টাফ সামি আনানকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে অবসরে পাঠানোর ঘোষণা দেওয়া হয়।
প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র ইয়াসের আলী সেনাবাহিনীর এই দুই শীর্ষ কর্মকর্তাকে সরিয়ে দেওয়ার ঘোষণা দেন। দুই জেনারেলকে অবসরে পাঠানোর পাশাপাশি মুরসি প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা খর্ব করা সাংবিধানিক সংশোধনীও বাতিল করেন।
বিবৃতিতে মুরসির মুখপাত্র বলেন, ফিল্ড মার্শাল হুসেইন তানতাউয়িকে অবসরে পাঠানো হলো। তাঁর জায়গায় সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান ও প্রতিরক্ষামন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল সিসিকে। আনানের স্থলাভিষিক্ত করা হয়েছে লেফটেন্যান্ট জেনারেল সিদকি সৈয়দ আহমেদকে। অবসরে পাঠানো তানতাউয়ি ও সামি আনানকে প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা করা হয়েছে।
মুরসি প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার আগে মিসরের ক্ষমতাসীন সশস্ত্র বাহিনীর সর্বোচ্চ পরিষদ (স্কাফ) নানাভাবে তাঁকে হয়রানির মুখে ফেলেছিল। গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে হোসনি মোবারকের পতনের পর স্কাফের প্রধান হিসেবে তানতাউয়ি মিসরের অন্তর্বর্তী শাসকের ভূমিকা পালন করেছেন।
সেনাবাহিনীর দুই শীর্ষ কর্মকর্তাকে সরিয়ে দেওয়ায় মিসরের রাজনৈতিক পরিস্থিতি আরও ঘোলাটে হবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা। এর মাধ্যমে মুরসি ও সেনাবাহিনীর দ্বন্দ্ব প্রকাশ্য হয়ে পড়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। রয়টার্স, বিবিসি।

No comments

Powered by Blogger.