ব্রিটিশ পার্লামেন্টারি কমিটির অভিযোগ-সীমান্ত সংস্থা 'বারমুডা ট্রায়াঙ্গলে' পরিণত হয়েছে

ব্রিটিশ এমপিরা অভিযোগ করেছেন, অভিবাসীদের জন্য যুক্তরাজ্যের সীমান্ত সংস্থা (ইউকেবিএ) বারমুডা ট্রায়াঙ্গলে পরিণত হয়েছে। অভিবাসন-সংক্রান্ত প্রায় দুই লাখ ৭৬ হাজার মামলা সংস্থাটিতে আটকে আছে। ব্রিটেনে আশ্রয়প্রার্থী, বিদেশি অপরাধী ও অবৈধ অভিবাসী-সংক্রান্ত এই মামলাগুলোর কোনো সুরাহাই করছে না সংস্থাটি।
জমে ওঠা এসব কাজের বোঝা শেষ করতে কয়েক বছর লেগে যেতে পারে। সীমান্ত সংস্থা-সংক্রান্ত ত্রি-বার্ষিক এক প্রতিবেদনে পার্লামেন্টের নিন্মকক্ষ হাউস অব কমন্সের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়বিষয়ক কমিটির সদস্যরা এ তথ্য জানিয়েছেন।
হাউস অব কমন্সের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়বিষয়ক কমিটির সদস্যরা অভিযোগ করেন, ইউকেবিএর কারণে ব্রিটেন অভিবাসীদের জন্য বারমুডা ট্রায়াঙ্গলের মতো স্থানে পরিণত হয়েছে। কমিটির চেয়ারম্যান কিথ ভাজ বলেন, 'ব্রিটেনে প্রবেশ করা খুবই সহজ হয়েছে। কিন্তু প্রবেশ করার পর কাউকে খুঁজে বের করা বা তাকে দেশ থেকে বের করা অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে।' এমপিরা অভিযোগ করেন, ইউকেবিএতে বর্তমানে ব্রিটেনে আশ্রয়প্রার্থীদের প্রায় ২১ হাজার আবেদন জমে আছে। গত বছরের আবেদনগুলোর মাত্র ৬৩ শতাংশের জবাব দেওয়া হওয়ায় এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
এমপিরা জানান, ইউকেবিএর কাছে এমন দেড় লাখ অভিবাসীর মামলা আছে, যারা শিক্ষার্থী ও শ্রমিক হিসেবে বৈধভাবেই ব্রিটেনে প্রবেশ করেছে। কিন্তু তাদের ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। প্রতিদিন এ ধরনের অভিবাসীর সংখ্যা প্রায় ১০০ করে বাড়ছে। ব্রিটেনে বসবাসের অধিকার হারানো এসব লোক কোথায় আছে, সীমান্ত সংস্থাটি সে খবরও রাখে না। অভিবাসী এই জনগোষ্ঠীর ৪০ শতাংশকেও ব্রিটেন ছেড়ে দেওয়া-সংক্রান্ত কোনো চিঠি পাঠানো হয়নি। পাঁচ বছর আগে ভিসার মেয়াদ ফুরিয়ে যাওয়ার ঘটনাও এর মধ্যে আছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়বিষয়ক কমিটি আরো অভিযোগ করে, প্রায় তিন হাজার ৯০০ বিদেশি অপরাধী বর্তমানে ব্রিটেন বসবাস করছে। এর মধ্যে অন্তত ৮০০ জন গত পাঁচ বছর বা তার চেয়েও বেশি সময় ধরে পলাতক আছে। যার যার দেশে ফেরত পাঠানোর বিষয়টি বিবেচনা না করেই ১৯৯৯ সাল থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত এক হাজারেরও বেশি বিদেশি অপরাধীকে ব্রিটেনে মুক্ত করে দেওয়া হয়। এর মধ্যে ৬০ শতাংশেরই কোনো খোঁজ নেই। এ ছাড়া গত ছয় বছরে আশ্রয়প্রার্থী ও অভিবাসী-সংক্রান্ত এক লাখ এক হাজার মামলা ইউকেবিএর বিভিন্ন দেরাজে নিশ্চল পড়ে আছে। ইউকেবিএর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কর্মকুশলতা বিবেচনা না করেই বোনাস দেওয়ারও সমালোচনা করেছেন এমপিরা। সংস্থাটি সঠিকভাবে কাজ শুরু করতে না পারার আগে আর কোনো কর্মকর্তাদের বোনাস না দেওয়ারও পরামর্শ দিয়েছেন তাঁরা। ব্রিটিশ সরকার স্টুডেন্ট ভিসা কমিয়ে আনার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তা ব্রিটেনের জন্য সুবিধাজনক হবে না বলেও মত দিয়েছেন তাঁরা। সূত্র : ডেইলি মেইল।

No comments

Powered by Blogger.