গুরুতর এই সমস্যার প্রতি মন্ত্রী দৃষ্টি দেবেন কি?-প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক-সংকট

প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঁচটি শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের পাঠদানের জন্য অন্তত পাঁচজন শিক্ষক প্রয়োজন। শহরের অনেক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সমসংখ্যক বা এর চেয়ে বেশি শিক্ষক আছেন। কিন্তু সুনামগঞ্জ জেলার জগন্নাথপুর উপজেলার চিত্র একেবারেই ভিন্ন।


বৃহস্পতিবার প্রথম আলোর জগন্নাথপুর প্রতিনিধির পাঠানো প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, উপজেলার ১৫টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় চলছে একজন করে শিক্ষক দিয়ে। দুজন করে শিক্ষক আছেন ৩০টি বিদ্যালয়ে। আর ৩৭টি বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য আছে।
সারা দেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর চিত্র এতটা নাজুক না হলেও সর্বত্র যে প্রয়োজনীয়সংখ্যক শিক্ষক নেই, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। জগন্নাথপুর উপজেলা শিক্ষা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চারদলীয় জোট সরকারের আমলে বাইরে থেকে ৯৪ জন শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তাঁরা এক বছরের ব্যবধানে চলে যান। বর্তমান সরকারের আমলে বাইরে থেকে আরও ১০৪ জন শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হলেও তাঁরা এখন কর্মস্থলে নেই। যোগদানের পরই কেউ প্রশিক্ষণ নিতে চলে গেছেন, কেউ বা অন্যত্র বদলি হয়েছেন।
একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় এক বা দুজন শিক্ষক দিয়ে কখনোই চালানো যায় না। ছুটিছাটা ছাড়াও দাপ্তরিক কাজেও শিক্ষকদের উপজেলা বা জেলা সদরে যেতে হয়। সে ক্ষেত্রে বিদ্যালয়ে পাঠদান কে করবেন? বাইরের শিক্ষকেরা যদি জগন্নাথপুরে এসে থাকতে না চান, তাহলে স্থানীয় ব্যক্তিদের মধ্য থেকে কেন নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে না? প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক হতে পারেন এমন লোক কি সেখানে নেই? অবশ্যই আছেন। আসল সমস্যাটি হলো, সংশ্লিষ্ট বিভাগের সদিচ্ছা ও পরিকল্পনার অভাব। শিক্ষা বিভাগের কর্মকর্তারা বিদ্যালয়ে শিক্ষক আছেন কি নেই, তা নিয়ে খুব একটা ভাবেন না। ঠিকমতো বিদ্যালয় পরিদর্শনও করেন না।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য দালানকোঠার প্রয়োজন আছে, অস্বীকার করি না। তার চেয়েও বেশি জরুরি শিক্ষক নিয়োগ। প্রয়োজনে গাছতলায়ও হয়তো শিক্ষাদান চলতে পারে, কিন্তু শিক্ষক ছাড়া তা কোনোভাবেই সম্ভব নয়। অতএব, এই গুরুতর সমস্যাটির প্রতি প্রাথমিক ও গণশিক্ষা দপ্তরের মন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

No comments

Powered by Blogger.