ইসরায়েল ইরানে হামলার সিদ্ধান্ত নেয়নি: ওবামা

মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা বলেছেন, ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলার কোনো সিদ্ধান্ত ইসরায়েল নিয়েছে বলে তিনি মনে করেন না। তবে ইরানকে পরমাণু অস্ত্র তৈরি থেকে বিরত রাখতে যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছে। গত রোববার এনবিসি টেলিভিশনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ওমাবা এসব কথা বলেন।


গত সপ্তাহে ওয়াশিংটন পোস্ট পত্রিকায় একটি নিবন্ধে বলা হয়, ইসরায়েল চলতি বসন্তে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালাতে পারে বলে মনে করেন মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লিওন প্যানেট্টা। যদিও এ বিষয়ে সাংবাদিকেরা প্যানেট্টার কাছে জানতে চাইলে তিনি এড়িয়ে যান।
এনবিসির সঙ্গে সাক্ষাৎকারে ওবামার কাছে বিষয়টি জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি না ইসরায়েল এ ধরনের কোনো সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’
তার পরও ইসরায়েল যদি ইরানে হামলা চালাতে চায়, তখন তারা আগেভাগে বিষয়টি নিয়ে ওয়াশিংটনের সঙ্গে আলোচনা করবে কি না জানতে চাইলে ওবামা বলেন, তিনি এ ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট করে কিছু বলতে পারবেন না। তবে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে গোয়েন্দা ও সামরিক সম্পর্ক আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে জোরালো বলে তিনি জানান।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘আমার কাছে এখনো সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা। তবে ইরায়েলের নিরাপত্তার বিষয়টিও গুরুত্বপূর্ণ ও সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধানের আশায় আমরা উভয়েই ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করে যাচ্ছি।’
ওবামা বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের একের পর এক কঠোর নিষেধাজ্ঞার কারণে ইরান অর্থনৈতিকভাবে চাপের মুখে আছে। এর প্রতিশোধ হিসেবে ইরান যুক্তরাষ্ট্রের ভূখণ্ডে হামলা চালাতে পারে বলে যে উদ্বেগ আছে তা নাকচ করে দেন তিনি।
ওবামা বলেন, ‘ইরান মার্কিন লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালাতে পারে—এমন কোনো প্রমাণ আমরা দেখতে পাচ্ছি না এবং সে সামর্থ্যও তাদের নেই।’ তিনি আরও বলেন, ‘ইরানকে পরমাণু অস্ত্র তৈরি ও সংঘাতপূর্ণ ওই অঞ্চলে পরমাণু প্রতিযোগিতা থেকে বিরত রাখতে আমরা সব কিছুই করছি। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আমরা এমনভাবে সক্রিয় করে তুলেছি, যা ছিল প্রায় অকল্পনীয়। এখন ইরান আর্থিক সংকটে আছে। তারা চাপ অনুভব করছে।’
মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য কূটনৈতিক উপায়ে সমস্যার সমাধান করা এবং সেটাই কাম্য। তার পরও কোনো বিকল্পকে আমরা সম্ভাবনার বাইরে রাখছি না।’
ওবামা সতর্ক করে দিয়ে বলেন, ‘উপসাগরীয় অঞ্চলে কোনো ধরনের অতিরিক্ত সামরিক তৎপরতা চালানো হলে তা হবে বিধ্বংসী এবং এর বড় ধরনের প্রভাব পড়বে আমাদের ওপর। তেলের বাজারেও তার প্রভাব পড়বে।’
গতকাল সোমবার ওয়াশিংটন সফরে যাওয়ার কথা আছে ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আভিগদোর লিবারম্যানের। এ ছাড়া ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্র সফর করবেন। যদিও ওবামার সঙ্গে নেতানিয়াহুর বৈঠকের বিষয়টি এখনো চূড়ান্ত হয়নি। এএফপি ও বিবিসি।

No comments

Powered by Blogger.