গতকাল সমকাল-একজন প্রবীণ ঢাকাবাসীর ঢাকাকে লেখা একটি চিঠি by ফারুক চৌধুরী

প্রিয় ঢাকা, তোমাকে কোনো দিন এমনিভাবে চিঠি লেখার অবকাশ হয়নি। যখন থেকে তোমাকে জেনেছি, তখন থেকেই কেন জানি তুমি আমার সত্তার একটি বিরাট অংশজুড়ে অবস্থান নিয়েছিলে। আজ তোমার বয়স ৪০০ আর আমার ৭৮। বয়সের এই ব্যবধান সত্ত্বেও আজ থেকে ৬২ বছর আগে, ১৯৪৯ সালের হেমন্তের এক স্নিগ্ধ রৌদ্রস্নাত প্রভাতে, তোমার সঙ্গে আমার প্রথম পরিচয়ের দিনটি থেকে তুমি হয়ে উঠেছিলে আমার আত্মার আত্মীয়।


সেই সময়কার কিশোর আমাকে তুমি মুহূর্তেই নিজের করে নিয়েছিলে। বিগত বছরগুলোতে ব্যক্তিগত ও জাতীয় কত ‘আনন্দ-বেদনা’ আর ‘মিলন বিরহ সংকটে’ তুমি হয়ে উঠেছ একান্ত আপনার। কর্মজীবনের বিরাট একটি অংশ বড় বড় নামীদামি সব শহরে কাটিয়েছি। বোস্টন, নিউইয়র্ক, ওয়াশিংটন, লন্ডন, প্যারিস, ব্রাসেলস, বেইজিং, দিল্লি, রোম—কত না ঐতিহ্যবাহী নাগরিক সুব্যবস্থার সব শহর, কিন্তু যখনই তোমার কথা মনে হয়েছে, সেই পঞ্চাশের দশক থেকে বিদেশে কর্মজীবনের শেষ দিন পর্যন্ত, তখনই মনে হয়েছে তোমার সব দৈন্য নিয়েও, ‘এমনটি আর পড়িল না চোখে আমার যেমন আছে!’
এত কাছের কাউকে কি আনুষ্ঠানিক ঢংয়ে এ রকম একটি খোলা চিঠি দেওয়া যায়? তবুও আজ তোমাকে না লিখে পারছি না। কারণ জেনেছি যে, বিগত ৪০০ বছরে তোমার শরীরে বাঁধা সব ব্যামো সারাতে অস্ত্রোপচার করে তোমাকে দ্বিখণ্ডিত করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তোমাকে এখন সেবাদানে নিযুক্ত রইবে একজনের স্থলে দুজন পরিচারিকা। আমি কোনো শহর চিকিৎসক নই। আমি এখন তোমার বুকে বসবাসরত প্রবীণ একজন সাধারণ নাগরিক। তবে তোমার দেহের শিরা-উপশিরায় আর অস্থিমজ্জায় তোমাকে এত ভালোভাবে চিনি যে, আমি বিশ্বাস করি অস্ত্রোপচারে দ্বিখণ্ডিত তুমি, তোমার শরীরে বাসা বাঁধা সব রোগ-বালাই নিয়ে দ্বিখণ্ডিতই থেকে যাবে—উত্তর আর দক্ষিণ ঢাকায়। অস্ত্রোপচারে তুমি বদলে যাবে, তবে নিরাময় লাভ করার সম্ভাবনা তোমার নেই বললেই চলে। তোমার চিকিৎসার গুণগত মানের কোনো উন্নতি হওয়ার লক্ষণ যে আমি দেখতে পাচ্ছি না, বরং অস্ত্রোপচারের ফলে তোমার দেহে নানা প্রকার দূষণ সংক্রমণ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
১৯৪৯ সালের বর্ণিত সেই সোনালি সকালটির কথা আমার এ জন্য মনে আছে যে, সেই ভোরে তোমার মাটিতে আমার প্রথম পদচারণে, তোমার রমনার সবুজের ছোঁয়ায় আর শিশিরভেজা স্বচ্ছতায় তুমি নিমেষেই, ভারত বিভাগের ফলে চিরদিনের জন্য আসামের রাজধানী শিলং ছেড়ে আসা আমার গভীর বেদনাটি লাঘব করতে পেরেছিলে। তারপর তোমার মাঝেই তো বেড়ে উঠলাম; ঢাকা কলেজের (এখন যেখানে তোমার ‘নগর ভবন’ সেই এলাকায়ই তখন ছিল তার অস্থায়ী অবস্থান) কাছাকাছি আগামসি লেনের ২৩ নম্বরে অবস্থিত অতি সাধারণ একটি ছাত্রাবাসে আর তারপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অতি পরিচিত সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের শুভ্র গম্বুজধারী ভবনের প্রতিটি কন্দর আর সুবিন্যস্ত উদ্যানের মসৃণ ঘাসের সঙ্গে আশ্চর্য নিবিড় এক অন্তরঙ্গতায়। তখনই তো প্রথম বারের মতো শুনলাম রমনার আকাশ-বাতাস প্রকম্পিত করে পুলিশের তাজা গুলির শব্দ, রমনার সবুজ লাল হলো তাজা রক্তে। তাজা গুলির আওয়াজকে ছাড়িয়ে গেল, ‘রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই’-এর দৃপ্ত দাবি।
১৯৫৬ সালে তোমাকে আমার ছেড়ে যেতে হলো জীবিকার তাগিদে। একাত্তরে বাংলাদেশ স্বাধীন হলো। আমি বিদেশের চাকরিতেই রয়ে গেলাম, বাংলাদেশের হয়ে। তবে তোমার কাছে ফিরে এসেছি বারবার সীমিত সময়ের জন্য, অবস্থান করেছি বিভিন্ন সরকারি দায়িত্বে। একটি ফিরে আসা স্মৃতিতে চিরজাগরুক রইবে। ১৯৭২-এর ১০ জানুয়ারি দিল্লি থেকে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে প্রত্যাবর্তনটি, অন্য সব তাৎপর্যের মাঝে ছিল একটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশের রাজধানী হিসেবে তোমার পূর্ণ মর্যাদা প্রাপ্তি। আনুষ্ঠানিকভাবে তুমি উপবিষ্ট হলে পৃথিবীর অন্য সব রাজধানীর সঙ্গে, শহরগুলোর প্রথম সারিতে। আমাদের সবারই গর্ব—ঢাকা আমাদের ঢাকা। সরকারি চাকরির পাট চুকিয়ে দিল্লি থেকে ঢাকা ফিরলাম ১৯৯২ সালে। দুই দশক ধরে কোনো না কোনো দায়িত্বে ব্র্যাকের সঙ্গে সম্পৃক্ত রয়েছি, কিছুদিনের জন্য হলেও রাজনীতির অলিন্দে রাখতে হয়েছিল প্রান্তিক পদচারণা, আর এখন মাঝেমধ্যে কলম ধরি—আজ যেমন তোমাকে এই চিঠিটি লিখতে ধরেছি। কিন্তু সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে, তুমি এখন কেবলমাত্র আমার স্মৃতির শহর নও, তোমার বুকেই এখন আমার জীবন যাপন। তোমার বুকেই যেন আমার মৃত্যু ঘটে। তাই তোমার যেকোনো অঘটনে বিচলিত হয়ে উঠি।
প্রিয় ঢাকা, যদিও এর আগে তোমাকে সরাসরি লিখিনি, তোমাকে ভালোবাসি বলে তোমার সম্বন্ধে মাঝেমধ্যে চিন্তা-ভাবনা আর লেখাজোকা যে করিনি তা নয়। বেশ কয়েক বছর আগে লিখতে গিয়ে পেয়েছিলাম তোমার সঙ্গে বাংলাদেশের একজন সরকারি কর্মকর্তার চাকরিজীবনের বৃত্তান্তের মিল। ১৬১০ সালে শহর হিসেবে অধিষ্ঠিত হওয়ার পর তোমার কখনো হয়েছে পদোন্নতি, কখনো বা হয়েছে পদমর্যাদাহানি, কখনো তোমাকে নিতে হয়েছে বাধ্যতামূলক অবসর, আবার কখনো বা হয়েছ পুনর্বহাল। কিন্তু এই যাত্রায় তোমার যে কী হচ্ছে ঠিক বুঝতে পারছি না। তুমি দ্বিখণ্ডিত হয়ে যাবে। তোমার থাকবে দুই সেবক, তোমার দ্বিখণ্ডিত অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের সেবার জন্য। তাহলে কোথায় রইল তোমার একক সত্তা? তুমি যে আমার ঢাকা! আমার উত্তর অথবা দক্ষিণ ঢাকা তো তুমি নও!
১৯৫১ সালে তোমার লোকসংখ্যা ছিল ৩ লাখ ৩৬ হাজার। মানববসতির ঘনত্ব ছিল প্রতি বর্গমাইলে প্রায় ১২ হাজার। এখন তোমার সীমানার মাঝে দেড় কোটিরও বেশি লোকের বাস। মানুষের বসতির ঘনত্ব আমার ঠিক জানা নেই, তবে প্রতি বর্গমাইলে ৬০-৭০ হাজার তো হবেই। ১৯৫১ থেকে আজ পর্যন্ত আমার সাধারণ হিসাবে তোমার লোকসংখ্যা বেড়েছে প্রায় ৫০ গুণ অথচ আয়তন ২৮ বর্গমাইল থেকে মাত্র ৬ গুণ বেড়ে হয়েছে প্রায় ১৬০ বর্গমাইল। কিন্তু তার সঙ্গে তাল রেখে মোটেও বাড়েনি তোমার পানি, গ্যাস, বিজলি সঞ্চালন, রাস্তাঘাট, আবাসগৃহ এবং একটি আধুনিক শহরজীবনের অন্যান্য উপাদান। এই দুর্বল অবকাঠামো নিয়ে ২০২৫ সালে জনসংখ্যার বিবেচনায় তুমি হবে পৃথিবীর ১৫টি ‘ম্যাগা সিটির’ একটি।
তোমার নগর সেবা সংস্থাগুলোর কর্মকাণ্ডের সমন্বয় সাধনের সমস্যাটি প্রকটতর হবে দিন দিন। আমরা প্রায়ই দেখি, একই সড়কে ওয়াসার লাইন স্থাপনের চিহ্ন মুছে যেতে না যেতেই টেলিফোন কর্তৃপক্ষ তাদের প্রয়োজনে আবার তোমার রাজপথ খননে লিপ্ত হন। তারপর গ্যাস কর্তৃপক্ষ অথবা বিদ্যুৎ সরবরাহ সংস্থা তোমার নাগরিক জীবন সুস্থ করার মহৎ উদ্দেশ্যে হয়তো একই এলাকায় সড়ক খননের দৃপ্ত পদক্ষেপ নেয়। তোমার পরিবহন সংস্থা, মেট্রোপলিটান পুলিশ, রাজউক আর পূর্ত মন্ত্রণালয়ের মাঝেও রয়েছে সমন্বয়ের নিদারুণ অভাব। তারই পরিণতিতে অসহনীয় পর্যায়ে বেড়ে উঠেছে যানজট আর রাজপথের বিশৃঙ্খলা। যানজট নিরসনের প্রধান উপায় হলো উড়াল সড়ক, মেট্রোরেল এবং প্রয়োজন বোধে পাতাল রেল। সেই দায়িত্ব অবশ্য বর্তায় কেন্দ্রীয় সরকারের ওপর এবং হয়তো বা আগামী কয়েক বছরের মধ্যে নির্মাণাধীন যাতায়াত ব্যবস্থার সুফল কিছুটা হলেও প্রতীয়মান হবে।
কিন্তু তোমার অন্য সব সমস্যার সমাধান তোমার অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে কীভাবে সমাধান হবে তা বুঝে উঠতে পারি না। শুনেছি, প্রাক-অস্ত্রোপচারের পদক্ষেপের মধ্যে রয়েছে একই রাজউক রেখে উত্তর আর দক্ষিণ ঢাকায় দুটি করপোরেশন প্রতিষ্ঠা। আমি বুঝে উঠতে পারি না, যেখানে একজন মেয়র পেরে উঠছেন না, তোমার বিভাজনের মাধ্যমে অধিষ্ঠিত দুজন মেয়র তাতে কী করে সার্থক হবেন? আমি তো স্পষ্টই দেখি, এই দুই মেয়রের সাংঘর্ষিক অবস্থান তোমার সেবার সমন্বয়হীনতার গুরুতর অবনতি ঘটাবে। আর সবচেয়ে বেশি দুঃখের কথা হচ্ছে, দ্বিধাবিভক্ত তোমার ৪০০ বছরের পরিচয় পাল্টে যাবে। তুমি আর তুমি রইবে না।
আমার মনে পড়ে, গত নব্বইয়ের দশকের মাঝামাঝিতে যখন উপরিউক্ত সমস্যাবলি গজিয়ে উঠছিল, তোমার তদানীন্তন মেয়র প্রয়াত মোহাম্মদ হানিফ ঢাকার পৌর পরিষদকে মেট্রোপলিটন সরকারের মর্যাদাদানের আবেদন জানিয়ে সরকারের কাছে একটি প্রস্তাব পেশ করেছিলেন। প্রস্তাবটির নির্যাস ছিল, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের অধীনে সরকারি নগরসেবা সংস্থাগুলোকে ঢাকার মেয়রের প্রত্যক্ষ নিয়ন্ত্রণে আনয়ন, যাতে করে সেই সংস্থাগুলোর কর্মকাণ্ডের সঙ্গে দ্রুত এবং প্রত্যাশিত সমন্বয় সাধিত হতে পারে। তোমার মেয়র তোমার নাগরিকদেরই নির্বাচিত প্রতিনিধি। কিন্তু আসলে তিনি ‘ঢাল নেই, তলোয়ার নেই নিধিরাম সর্দার’। মেয়রের পৌরসভা অন্যান্য সরকারি সংস্থার ওপর নির্ভরশীল এবং মেয়রের কাছে সেই সংস্থাগুলোর কোনো জবাবদিহি নেই। এক কথায় মেয়রের দায়িত্ব অনেক, কিন্তু তা পালনের ক্ষমতা সীমিত। জনগণের ভোটে নির্বাচিত তোমার মেয়রকে অতিরিক্ত ক্ষমতাদানের প্রয়োজন রয়েছে। সেখানে একজন মেয়রের স্থানে দুজন মেয়রে কোনো লাভ কি হবে?
নির্বাচিত মেয়রের অধীনে সরকারের পূর্ণ সচিবের মর্যাদার একজন কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়ার কথা হানিফ বলেছিলেন। সব নগরসেবা সংস্থার সমন্বয় সাধন করবেন তিনি। তোমার সেবায় নিয়োজিত প্রতিটি সরকারি সংস্থাই, তা মেট্রোপলিটান পুলিশই হোক অথবা ডেসা, নগর পরিবহনই হোক অথবা গ্যাস সঞ্চালন, ফায়ার ব্রিগেড হোক অথবা ওয়াসা, রাজউক হোক অথবা খোদ পৌরসভা—প্রত্যেকেরই প্রাতিষ্ঠানিক ও কর্মবিন্যাসজনিত আইনকানুন রয়েছে। সেসব আইনকানুন প্রয়োজনবোধে সমন্বয় ও সংশোধনী একটি দূরদর্শী সংসদের পক্ষে সম্ভব। এ জন্য সরকারের কাছে আমার অনুরোধ হবে, মেয়রের সংখ্যা বাড়িয়ে নয়, নির্বাচিত মেয়রকে শক্তিশালী করলে তোমার অনেক সমস্যার সমাধানই সম্ভব হবে। আমি যদিও বা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আমলা ছিলাম, ঢাকা শহরের পক্ষে সংশ্লিষ্ট প্রায় প্রতিটি সংস্থার সঙ্গেই ’৮০ ও ’৯০-এর দশকে তিনবার দায়িত্ব পালনের সুযোগ আমার হয়েছে। ১৯৮৩ সালে ঢাকায় অনুষ্ঠিত একাদশ ইসলামি পররাষ্ট্রমন্ত্রী সম্মেলনের আমি ছিলাম প্রধান সমন্বয়কারী। ১৯৮৫ সালে সার্কের জন্মলগ্নে পররাষ্ট্রসচিব হিসেবে আমাকে প্রথম সার্ক সম্মেলনের মহাসচিবের দায়িত্ব পালন করতে হয়েছিল। ’৯০-এর দশকে অবসরপ্রাপ্ত অবস্থায়ও সপ্তম সার্ক সম্মেলনের প্রস্তুতি কমিটির আমি সভাপতি ছিলাম। প্রিয় ঢাকা, তোমার মনে পড়বে নিশ্চয়ই, ইসলামি পররাষ্ট্রমন্ত্রী সম্মেলনটি ছিল আন্তর্জাতিক সম্মেলন অনুষ্ঠানে তখন তোমার ৩৭৩ বছর জীবনের প্রথম অভিজ্ঞতা। সার্ক ছিল তোমার বুকে অনুষ্ঠিত সরকারপ্রধানদের প্রথম শীর্ষ সম্মেলন। এই সম্মেলন তিনটি অনুষ্ঠানে সাফল্যের কারণ ছিল বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার ঐকান্তিক সহযোগিতা। সেই সাময়িক প্রয়োজনে অবশ্য কারও আইন বদল বা সংশোধন করে নয়, তবে সাংগঠনিক চিন্তাধারাকে বাস্তবধর্মী রূপ দিয়ে। অতএব একজন নির্বাচিত মেয়র বহাল রেখে তোমাকে দ্বিখণ্ডিত না করে তোমার সমস্যাগুলোর সমাধান করার যথেষ্ট অবকাশ রয়েছে। তোমাকে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে দ্বিখণ্ডিত করলে সমস্যা বাড়বে বই কমবে না—আর সমন্বয়হীনতা জটিলতরই হবে।
এক কথায়, আমি তদানীন্তন প্রয়াত মেয়র হানিফের দাবিরই পুনরাবৃত্তি করছি। প্রয়োজন হলে একটি মেট্রোপলিটন সরকার স্থাপন করে তোমার মেয়রকে শক্তিমান করা হোক। দ্বিখণ্ডিত তোমার বুকে দুজন মেয়র বসিয়ে দিলে সমস্যার সমাধান হবে বলে আমি মনে করি না। তোমার হয়তো বা মনে পড়বে, তোমার বর্তমান সমস্যাবলির আশঙ্কাতেই ১৯৯৬ সালের ৩০ আগস্ট ভোরের কাগজ-এর পাতায় আমার মতামত ব্যক্ত করেছিলাম, যার নির্যাস এই চিঠিতে দিলাম।
চিঠিটি শেষ করার আগে অন্তিম একটি বাসনা ব্যক্ত করতে চাই, তোমার বুকে সমাহিত হওয়ার আশায় আজিমপুর কবরস্থানে একটি জমি ক্রয় করেছি বেশ কদিন আগে। সেই জমিটি উত্তর বা দক্ষিণ ঢাকার হোক আমি তা চাইব না। আমি ঢাকায়ই সমাহিত হতে চাই। তোমার বুকে, তোমার উত্তরে অথবা দক্ষিণে নয়।
তুমি ভালো থেকো। হাজার হাজার বছরের আয়ু হোক তোমার। তোমারই একজন নাগরিক।
ফারুক চৌধুরী: সাবেক পররাষ্ট্রসচিব। সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা।

No comments

Powered by Blogger.