অর্থনীতি- আমেরিকান অর্থনীতি ডলারের চ্যালেঞ্জ by ড. আবু এন. এম. ওয়াহিদ

বেশিদিন আগের কথা নয়। উনিশ শ' আশির দশক। আমি তখনো পড়ছি। ক্যানাডার ম্যানিটোবা বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতিতে পি.এইচ.ডি.'র ছাত্র। আমাদের মাত্র কয়েক বছর সিনিয়র একজন বাংলাদেশী সদ্য ডিগ্রী শেষ করে আমেরিকায় চাকরি পেয়েছেন। কিছুদিন পর সীমান্তের ওপারে গিয়ে কাজে যোগ দেবেন। তার আগে আমাকে একদিন ওয়ালেট থেকে একখানা আমেরিকান ডলার বের করে দেখিয়ে বললেন, "স্বপ্নের দেশ আমেরিকা যাচ্ছি।
আই উইল আর্ন দিস্ - দি মোস্ট পাওয়ারফুল কারেন্সী অফ দি ওয়ার্ল্ড"। তখন থেকে আমিও স্বপ্ন দেখতে শুরু করি, কবে আসব আমেরিকা এবং কামাই করব মাইটি দেশের মাইটি ডলার। সে সময় সত্যি সত্যি মার্কিন ডলার ছিল পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিশালী মুদ্রা। সর্বত্র গ্রহণযোগ্য, সবার কাছে আদ্রিত। আন্তর্জাতিক বিনিময় এবং বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে সবচেয়ে বাঞ্ছিত ও কাঙ্ক্ষিত "সংরক্ষণ মুদ্রা" ইংরেজীতে যাকে বলে "রিজার্ভ কারেন্সী"। এমন কী স্মাগলিং, ড্রাগ ট্রাফিকিং, ইলিসিট আর্মস ডিলিং এবং মানি লন্ডারিংয়েও ছিল মার্কিন ডলারের একচেটিয়া আধিপত্য ও গ্রহণযোগ্যতা।
মাইটি মার্কিন ডলারের আংশিক হলেও একটা ব্যাখ্যা পেয়েছিলাম ১৯৯২ সালে ইউনিভার্সিটি অফ ইলিনয় - আরবানা শেম্পেইনের ফাইন্যান্স বিভাগের অধ্যাপক উইলিয়াম ব্রায়েনের কাছে। তখন আমি ইস্টার্ন ইলিনয় ইউনিভার্সিটিতে পড়াই। শেম্পেইনের এশিয়া পেসিফিক হেরিটেজ কমিটির আমন্ত্রণে "ইউএস জাপান ট্রেড রিলেশন্সের" ওপর এক বিতর্ক সভায় আমি অধ্যাপক ব্রায়েনের মুখোমুখি হই ওই বছর মে মাসের কোন এক সময়। বিতর্কের এক পর্যায়ে অধ্যাপক ব্রায়েন বলেছিলেন, "সবচেয়ে বেশি উদ্বৃত্ত পুঁজি জমা হচ্ছে, মধ্যপ্রাচ্য, চীন, জাপান আর ইউরোপে। সেই পুঁজির সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন এশিয়া, আফ্রিকা ও ল্যাটিন আমেরিকার উন্নয়নগামী দেশে অর্থনৈতিক ও সামাজিক অবকাঠোমো নির্মাণের জন্য। কিন্তু বর্তমান বিশ্বের কঠিন বাস্তবতা এই, যে পৃথিবীর বেশিরভাগ উদ্বৃত্ত পুঁজি সেইসব দেশে না গিয়ে, অনবরত আসছে আমেরিকায়"। কারণ হিসেবে তিনি বলেছিলেন, "পুঁজি যেখানেই যাক না কেন, সে মুনাফার আগে চায় তার নিরাপত্তা। প্রয়োজন থাকুক বা না থাকুক, মুনাফা কম কী বেশি, পানি যেমন উপর থেকে নিচের দিকে যায়, বিশ্বের উদ্বৃত্ত পুঁজি বিনিয়োগের জন্য এখন নির্দ্বিধায় আসে আমেরিকার বাজারে। কারণ গত দুশ' বছর ধরে এদেশে একটি স্থিতিশীল রাজনৈতিক ব্যবস্থা বিরাজ করছে। আছে সাংবিধানিক ও আইনের শাসন। তাছাড়া, গত দুশ' বছরে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কোন বড় যুদ্ধে কারো কাছে ডিসাইসিভলি পরাজিত হয়নি। তাই পুঁজির জন্য এদেশ বিশ্বের সবচেয়ে নিরাপদ স্থান"। একারণেই, উদ্বৃত্ত দেশের সরকার ও বেসরকারি পুঁজিপতিরা বেশুমার মার্কিন ঋণ কিনেছে এবং এখনও কিনছে, যার মূল্য হাজার হাজার বিলিয়ন ডলার।
তিরিশ বছর পর, এখনো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি পৃথিবীর সর্ববৃহৎ। তার বার্ষিক দেশজ উৎপাদনের মূল্য চৌদ্দ ট্রিলিয়ন ডলারের উপরে, যা সারা বিশ্বের দেশজ উৎপাদনের পাঁচ ভাগের এক ভাগ। তার ডলারের চাহিদাও আছে, কিন্তু নেই আগের তেজ, আগের শক্তি। কারণ অর্থনীতির অবকাঠামো পুরনো, গবেষণা ও উন্নয়নে বিনিয়োগ আনুপাতিক হারে কম, উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থা জোরদার হলেও, প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা ব্যবস্থা দুর্বল। শ্রমিকদের দক্ষতা উৎপাদন ক্ষমতা তুলনামূলকভাবে কমে গেছে, তথাপি ট্রেড ইউনিয়নের কারণে নিয়োগদাতাকে অতিরিক্ত মজুরি ও সুযোগ-সুবিধা দিতে হয়। উৎপাদন খরচ অন্য অনেক দেশের তুলনায় এখানে বেশি। যার ফলে আমেরিকান কোম্পানীগুলো আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিযোগিতায় ক্রমাগত মার খাচ্ছে। এমতাবস্থায় বাণিজ্য ঘাটতি দিনে দিনে বেড়েই চলেছে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে আমেরিকার একচেটিয়া আধিপত্য আগের মত নেই। ব্যক্তি ও ব্যবসা খাতে খরচ বাড়ছে কিন্তু সঞ্চয় ও বিনিয়োগ বাড়ছে না। ফলে বর্তমানের চেয়ে ভবিষ্যৎ যে ভাল হবে, তার সম্ভাবনাও দিনে দিনে ক্ষীণ হয়ে আসছে। মার্কিন অর্থনীতির আরেকটি বৈশিষ্ট্য হল ঋণ করে খরচ করা। এ সংস্কৃতিতে কী ব্যক্তি, কী ব্যবসা, কী সরকার কেউই পিছিয়ে নেই। "বরো এন্ড স্পেন্ড," চলছে সমান তালে যুগের পর যুগ ধরে। তার সাথে বাড়ছে ঋণের বোঝা। এখন সরকারি ও বেসরকারি খাত দারুণভাবে ঋণে জর্জরিত।
বর্তমান মার্কিন অর্থনৈতিক সমস্যার দুটো মূল দিক। প্রথমত: শ্রমিকের উৎপাদনশীলতা কমে যাওয়া এবং আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিযোগিতায় মার খাওয়া। দ্বিতীয়ত: ব্যক্তি, ব্যবসা ও সরকারি খাতে অতিরিক্ত ঋণগ্রস্ততা। প্রথম সমস্যা - স্ট্রাকচারেল এবং জটিল। এর কোন সহজ ও সংক্ষেপ সমাধান নেই। স্বল্প ও মধ্যমেয়াদে বড় অঙ্কের বিনিয়োগ করে যেতে হবে অর্থনৈতিক ও সামাজিক অবকাঠামো বিনির্মাণে। স্কুল ও কলেজ পর্যায়ের শিক্ষা ব্যবস্থাকে আগাগোড়া ঢেলে সাজাতে হবে। শ্রমিকদের দক্ষতা উৎপাদন ক্ষমতা বাড়াবার জন্য ব্যাপকভাবে বিশেষ কারিগরি শিক্ষা দিতে হবে। গবেষণা ও উন্নয়ন (রিসার্চ এন্ড ডেভেলপমেন্ট) খাতে সরকারি ও বেসরকারিভাবে প্রচুর বিনিয়োগ করতে হবে। কৃচ্ছ্রতা সাধন করে সঞ্চয় এবং উৎপাদন খাতে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। তারপর ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করতে হবে দীর্ঘমেয়াদে সুফল পাওয়ার জন্য।
যখন সুফল আসতে শুরু করবে, তখন আমেরিকান শ্রমিকের উৎপাদন ক্ষমতা বাড়বে এবং আন্তর্জাতিক বাজারে মার্কিন দ্রব্য সামগ্রীর চাহিদা চাঙ্গা হয়ে উঠবে। বাণিজ্যে, ঘাটতির বদলে উদ্বৃত্ত ঘরে উঠতে শুরু করবে।
দ্বিতীয় হল ঋণ সমস্যা। সাথে সাথে এর দিকেও নজর দিতে হবে। এর আগে দেখা যাক ঋণ সমস্যার গভীরতা ও ব্যাপকতাটা কতখানি। কোনো নির্দিষ্ট বছরে, সরকারের আয় থেকে ব্যয় যতটা বেশি, ততটাকে বলে বাজেট ঘাটতি। ঘাটতি বাজেট বছরের পর বছর চলতে থাকলে, বেড়ে উঠে সরকারের ঋণের বোঝা। আমেরিকার প্রথম প্রেসিডেন্ট জর্জ ওয়াশিংটন থেকে শুরু করে বিল ক্লিনটন পর্যন্ত সোয়া দু'শ' বছরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মোট ফেডারেল ঋণ ছিল সাড়ে পাঁচ ট্রিলিয়ন ডলারের মত। বিস্ময়কর হলেও সত্য, জর্জ বুশ জুনিয়র তাঁর শাসনামলে মাত্র আট বছরে একাই এই ঋণের বোঝা প্রায় দ্বিগুণ করে নিয়ে আসেন সাড়ে দশ ট্রিলিয়ন ডলারে। তার মূল কারণ বিলিয়নিয়ারসহ সবার জন্য দু'টো বড় ট্যাক্স রেয়াতি, আফগানিস্তান ও ইরাক যুদ্ধ এবং সাব-প্রাইম মর্টগেজ ক্রাইসিস ও ফাইন্যান্সিয়াল মেল্টডাউনের জন্য দু'টো বড় আকারের ভর্তুকি। তাতেও শেষ রক্ষা হল না। অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াল না, যথেষ্ট পরিমাণে চাকরি সৃষ্টি হল না। ২০০৮-এর নির্বাচনে শোচনীয়ভাবে হারল রিপাবলিকান পার্টি। হোয়াইট হাউসে বসলেন প্রেসিডেন্ট ওবামা। উত্তরাধিকার সূত্রে পেলেন বিধ্বস্ত অর্থনীতি। ব্যক্তি ও ব্যবসা খাত হাত গুটিয়ে বসে থাকল।
এই অবস্থায় অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের একমাত্র পথ সরকারের সমপ্রসারণশীল রাজস্ব নীতি। অর্থনীতিকে দীর্ঘমেয়াদী ও গভীর মন্দা থেকে বাঁচাবার জন্য অধিকাংশ অর্থনীতিবিদরা চাইলেন দেড় হাজার বিলিয়ন ডলারের প্রণোদনা প্যাকেজ। রাজনীতির টানা-হঁ্যাচড়া ও রিপাবলিকানদের আপত্তির কারণে আসল মাত্র ৭৮৭ বিলিয়ন ডলার। তার মধ্যে আবার রিপাবলিকানরা জবরদস্তি করে ১০০ বিলিয়ন ডলার নিয়ে গেল কর রেয়াতিতে। কোন মতে মন্দা ঠেকানো গেল, কিন্তু অর্থনীতি যেভাবে ঘুরে দাঁড়াবার কথা ছিল সেটা হল না। যথেষ্ট কর্মসংস্থান সৃষ্টি হল না। বেকার লোকদের ভাতা, চলমান যুদ্ধের খরচ, স্বাস্থ্যসেবা বিলের ভর্তুকি ইত্যাদি বাবদ সরকারের ঋণের বোঝা উত্তরোত্তর বাড়তেই থাকল। ওবামার দু'বছরে ফেডারেল সরকারের ঋণের বোঝায় যোগ হল আরো সাড়ে তিন ট্রিলিয়ন ডলার। বর্তমানে সর্বসাকুল্যে ঋণের বোঝা দাঁড়িয়েছে চৌদ্দ ট্রিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি। ২০০৭ সালের সেপ্টেম্বর থেকে গড়ে প্রতিদিন আমেরিকার ফেডারেল সরকারের ঋণ বাড়ছে চার বিলিয়ন ডলারের উপর। এই মুহূর্তে আমেরিকান নাগরিকদের মাথাপিছু ঋণের বোঝা প্রায় ৪৫ হাজার ডলার। আমেরিকা যে ঋণ সৃষ্টি করছে তা কিনছে বিদেশীরা বেশিরভাগ চীনারা।
বার্ষিক দেশজ উৎপাদনের সমান ঋণের বোঝা, দশ শতাংশ বেকার শ্রমশক্তি, ফি'বছর দেড় হাজার বিলিয়ন ডলার করে বাজেট ঘাটতি, সাতশ' বিলিয়ন ডলার বার্ষিক বাণিজ্য ঘাটতি, দু'টো চলমান যুদ্ধ ইত্যাদি কারণে আমেরিকা এ হারে ঋণের বোঝা আর কতদিন টানতে পারবে, সে ব্যাপারে এখন ঋণদাতাদের মনে সন্দেহ ও ভীতি দুটোই কাজ করছে। এর ফলে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ এখন আর মার্কিন ডলারকে আন্তর্জাতিক "রিজার্ভ কারেন্সী" হিসেবে গ্রহণ করতে রাজী নয়। তারা সিরিয়াসলি "রিজার্ভ কারেন্সী" হিসেবে মার্কিন ডলারের বিকল্প খুঁজছে। সার্বিক অর্থনৈতিক দুর্বলতা ও অতিরিক্ত ঋণগ্রস্ততার কারণে মার্কিন ডলার এক দারুণ আস্থা সংকটে পড়েছে। যা থেকে উত্তরণের সহজ কোন উপায় নেই। আন্তর্জাতিক "রিজার্ভ কারেন্সী" হিসেবে মার্কিন ডলার যে তার গুরুত্ব হারাচ্ছে তার আলামত ইতিমধ্যে স্পষ্ট হয়ে উঠছে। গত পাঁচ বছরে বিশ্বের অন্যান্য প্রধান মুদ্রার বিপরীতে মার্কিন ডলার তার মূল্যমান হারিয়েছে প্রায় ৩০ শতাংশ। ২০০৯ সালে পৃথিবীর কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো তাদের রিজার্ভের ৬৩ শতাংশ রেখেছে ইউরো এবং ইয়েনে এবং মাত্র ৩৭ শতাংশ রেখেছে মার্কিন ডলারে। মার্কিন ডলারের ভবিষ্যৎ এখন অনেকটা নির্ভর করছে চীন, ভারত, ব্রাজিল, রাশিয়া, মধ্যপ্রাচ্যের উপর যাদের হাতে জমা আছে বিপুল পরিমাণ মার্কিন ডলার। এবং তারাই কিনে রেখেছে অধিকাংশ মার্কিন ঋণ। আগামিতে ডলার দুর্বল হতে পারে ভেবে চীন তার রিজার্ভ পোর্টফোলিও বহুমুখিকরণ করতে শুরু করেছে। ২০০৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসে চীন ৬ বিলিয়ন ডলারের বন্ড বিক্রি করেছে হংকং-এর কাছে ইউয়ানের বিনিময়ে। একই মাসে চীন আইএমএফ থেকে ৫০ বিলিয়ন ডলারের বন্ড কিনেছে ডলারের পরিবর্তে ৩৪১ বিলিয়ন ইউয়ান দিয়ে। চীন সরকার মার্কিন ট্রেজারী বিলের হোল্ডিং কমিয়েছে ৩৪.২ বিলিয়ন ডলারের। এছাড়া আর্জেন্টিনা, দক্ষিণ কোরিয়া, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া ও বেলারুশের সাথে চীন নতুন মুদ্রা চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। এই চুক্তির অধীনে ডলারের বাইরে নিজস্ব মুদ্রায় তারা দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বিনিময় করবে। সমপ্রতি আইএমএফ ৪০৩ টন সোনা বিক্রি করবে বলে ঘোষণা দিয়েছে। চীন একাই পুরোটা কেনার ইচ্ছা ব্যক্ত করেছে। পিপলস্ ব্যাংক অফ চায়না, ডলারের বিনিময়ে ইউরো এবং ইউয়ানের রিজার্ভ বাড়াচ্ছে। চীন আফ্রিকায় বিলিয়ন বিলিয়ন ব্যারাল তেল রিজার্ভ এবং পেরু, ক্যানাডা ও ব্রাজিলে আগাম কিনে রাখছে লোহা, পটাশ, নিকেল, সোনাসহ বিভিন্ন ধরনের খনিজ দ্রব্য । কেবল ২০০৯ সালে চীনের ৪৪ শতাংশ বিনিয়োগ হয়েছে মাইনিং সেক্টরে।
ল্যাটিন আমেরিকার ভেনিজুয়েলা, কিউবা, বলিভিয়া, হন্ডুরাস, নিকারাগুয়া এবং ডমিনিকা নতুন কমন কারেন্সী করে তার নাম দিয়েছে "সুখ্র"। আগামিতে তারাও দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যে ডলারের বিপরীতে "সুখ্র" ব্যবহার করবে। একই বছর কুয়েত, কাতার, সৌদি আরব ও বাহরাইন ২০১০ থেকে কমন কারেন্সী চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে অনেকের ধারণা, গাল্ফ কওপারেশন কাউন্সিল (জিসিসি) দেশের জন্য এটা বেশি তাড়াতাড়ি হয়ে গেছে। এত শিগ্গির তারা কমন কারেন্সী পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে পারবে না। তুরস্ক সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইরান এবং চীনের সাথে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যে ডলার এবং ইউরোর পরিবর্তে আঞ্চলিক মুদ্রা ব্যবহার করবে। ডলার পোর্টফলিও বহুমুখিকরণের উদ্দেশ্যে, ২০০৯ সালের নভেম্বরে আইএমএফ থেকে মরিশাস কিনেছে ২ টন সোনা এবং শ্রীলঙ্কা কিনেছে ১০ টন।
এখনো আমেরিকান ডলারকে বাঁচাবার পথ আছে। তবে পথটা সহজ নয়, কঠিন এবং দিনে দিনে এটা আরও কঠিন হবে। আন্তর্জাতিক বাজারে সফল প্রতিযোগিতার জন্য অর্থনীতিকে স্ট্রাকচারেলী ঢেলে সাজাতে হবে। ব্যক্তি ও ব্যবসা খাতে খরচ কমিয়ে সঞ্চয় ও বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। শিক্ষা ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন এনে শ্রমিকদের দক্ষতা ও উৎপাদন ক্ষমতা বাড়িয়ে আন্তর্জাতিক বাজারে আমেরিকান দ্রব্যসামগ্রীর চাহিদা চাঙ্গা করতে হবে। ঋণদাতাদের পরিষ্কার ভাষায় জানিয়ে দিতে হবে যে, আমেরিকা তার বাজেট ঘাটতি ও ঋণ নিয়ন্ত্রণের ব্যাপারে সিরিয়াস। একদিকে সরকারের খরচ কমাতে হবে এবং অন্যদিকে মিডল ক্লাস থেকে শুরু করে উপরের দিকে আনুপাতিক হারে সবার ওপর কর বাড়াতে হবে। কিন্তু সমস্যা হল, যে প্রেসিডেন্ট খরচ কমাবার ও কর বাড়াবার কথা বলবে, তাকে কী আমেরিকার জনগণ ভোট দেবে?
=================================
বাংলাদেশ-ভারত যৌথ ইশতেহার- আশানুরূপ সুফল নেই এক বছরেও  ন্যায়ভিত্তিক সমাজ ও রাজনীতি  মাস্টারদা সূর্যসেন ও যুব বিদ্রোহ সাতাত্তর  রসভা নির্বাচন ২০১১: একটি পর্যালোচনা  ড. ইউনূস অর্থ আত্মসাৎ করেননি  প্রত্যাশা ও প্রাপ্তির ৩৯ বছর  স্বাধীনতাযুদ্ধের 'বিস্মৃত' কূটনৈতিক মুক্তিযোদ্ধারা  আতঙ্কে শেয়ারবাজার বন্ধঃ বিক্ষোভ  আতঙ্কের রাজত্ব কায়েম হয়েছে  মানবকল্যাণ আমাদের মন্ত্র  ট্রানজিট নিয়ে সবে গবেষণা শুরু  ভারতের একতরফা সেচ প্রকল্পঃ বাংলাদেশের আপত্তিতে বিশ্বব্যাংকের সাড়া  আমলাদের যাচ্ছেতাই বিদেশ সফর  সরকারের ব্যর্থতায় হতাশাঃ বিরোধী দলের ব্যর্থতায় বিকল্পের অনুপস্থিতি  ক্ষমতা ও গণতন্ত্র  পানি সংকট পানি বাণিজ্য  ২০১০ সালের অর্থনীতি কেমন গেল  গণতান্ত্রিক বিকাশের পথে বাধা অনেক  কপাটে তালা দিয়ে কেন এই মৃতু্যর আয়োজন  বিজয়ের অর্থনীতি ও সম্ভাবনা  মুক্তিযুদ্ধের বিজয়লক্ষ্মীর মুখোমুখি  একেই কি বলে আমলাতন্ত্র?  আত্মসমর্পণের সেই বিকেল  আমরা তাঁদের ভুলতে পারি না  সংবিধানের অনেক বক্তব্য পারস্পরিক সংঘাতমূলক  পরাশক্তির বিরুদ্ধে এক ‘ভবঘুরের’ স্পর্ধা  আবু সাঈদ চৌধুরীর ভাষণ দেওয়া হলো না  শুভ নববর্ষ ২০১১- দিনে দিনে বর্ষ হলো গত  এরশাদের বিচারে দুই দলেরই আগ্রহ কম  কিশোরদের সাদামাটা ফল  জিপিএ-৫ পেয়েছে আট হাজার ৫২ জন  এরশাদের বিচার হওয়া উচিত  ছোটদের বড় সাফল্য  প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষাঃ পাস ৯২%, প্রথম বিভাগ বেশি  বাংলাদেশের বন্ধুঃ জুলিয়ান ফ্রান্সিস  নিষ্ফল উদ্ধার অভিযানঃ দখলচক্রে ২৭ খাল  জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ বনাম মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র  ভ টিজিং : জরুরি ভিত্তিতে যা করণীয়  প্রতিশ্রুতির দিন  শোকের মাস, বিজয়ের মাস


দৈনিক ইত্তেফাক এর সৌজন্যে
লেখকঃ ড. আবু এন. এম. ওয়াহিদ
অধ্যাপক , টেনেসী স্টেট


এই আলোচনা'টি পড়া হয়েছে...
free counters

No comments

Powered by Blogger.