ব্লাসফেমি আইন নিয়ে করাচিতে বিক্ষোভ

পাকিস্তানে বিতর্কিত ব্লাসফেমি আইনের যেকোনো ধরনের পরিবর্তনের বিরুদ্ধে দেশটির করাচি নগরে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়েছে। গত রোববারের ওই বিক্ষোভে প্রায় ৫০ হাজার মানুষ অংশ নেয়। বিক্ষোভকারীরা বিভিন্ন ধরনের ব্যানার নিয়ে আসে। পুলিশ জানায়, ধর্মভিত্তিক বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এতে অংশ নিয়েছে।
পাঞ্জাব প্রদেশের গভর্নর সালমান তাসির নিহত হওয়ার কয়েক দিন পর এ ধরনের বিক্ষোভ করা হলো। ব্লাসফেমি আইনের বিরোধিতা করায় গত ৪ জানুয়ারি সালমান তাসিরের ওপর ক্ষুব্ধ হয়ে তাঁর দেহরক্ষী মালিক মুমতাজ হুসেইন কাদরি তাঁকে গুলি করে হত্যা করেন। এই আইনের আওতায় ধর্ম অবমাননার দায়ে মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত খ্রিষ্টান নারী আসিয়া বিবিকে ক্ষমা করে দেওয়ার আহ্বান জানানোর কারণে তাসিরের প্রতি ক্ষুব্ধ ছিলেন কট্টর ইসলামপন্থীরা। মুমতাজ কাদরি গতকাল রাওয়ালপিন্ডির সন্ত্রাসবাদবিরোধী আদালতে তাসিরকে হত্যার দায় স্বীকার করেন।
মুমতাজ কাদরিকে রিমান্ডে নেওয়ার ব্যাপারে শুনানির জন্য গতকাল আদালতে হাজির করা হয়। পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা হারুন জায়া বলেন, ‘মুমতাজ গভর্নর সালমান তাসিরকে হত্যার ব্যাপারে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। মুমতাজ বলেছেন, এই হত্যাকাণ্ডে তিনি একাই জড়িত। এর সঙ্গে কোনো ইসলামপন্থী বা জঙ্গি সংগঠনের সংশ্লিষ্টতা নেই।’
হত্যাকাণ্ডে একাই জড়িত থাকার দাবি করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিলেও প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। কারণ, ওই সময় অন্য নিরাপত্তাকর্মী কাদরিকে প্রতিরোধ করার চেষ্টা করেননি।
এর আগে কাদরি দাবি করেন, ব্লাসফেমি আইন সংস্কারের পক্ষে অবস্থান নেওয়ায় গভর্নর সালমান তাসিরকে তিনি হত্যা করেন।
মুমতাজ কাদরির ভাই দিলপাজির আয়ান বলেছেন, এই হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে তাঁদের পরিবার কোনো কিছুই জানে না। তিনি বলেন, ‘মুমতাজ তাঁর পরিকল্পনা সম্পর্কে কখনো তাঁদের কিছু জানাননি। তিনি একক সিদ্ধান্তে এটা করেছেন।’
পোপের আহ্বান: পোপ ষোড়শ বেনেডিক্ট গতকাল ব্লাসফেমি আইন বাতিলের জন্য পাকিস্তানের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আইনটি বাতিলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে আমি আরও একবার দেশটির নেতাদের উৎসাহিত করছি।’

No comments

Powered by Blogger.