বয়স চুরি নিয়ে এমন কাণ্ড



সত্যিকারের শিশুসুলভ ম্যাচেরই দেখা মিলল! হেরে যাওয়ার ভয়ে খেলতে অস্বীকৃতি জানাচ্ছে এক দল। প্রতিপক্ষ দল তাদের মাঠে নামাতে অনুরোধ-উপরোধ করছে। বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ প্রাথমিক বিদ্যালয় ফুটবলে কাল সাতক্ষীরা কয়লা সরকারি স্কুলের খেলোয়াড়েরা প্রতিপক্ষের বয়স চুরির বিরুদ্ধে ছিল কঠিন হূদয়।
বিষয়টা মানসম্মানের হয়ে দাঁড়ানোয় আয়োজকদের পর্যন্ত মাঠে নেমে অনেক চেষ্টা-চরিত্র করতে হয়। বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় সেমিফাইনালে সিলেটের জৈন্তাপুর নিশ্চিন্তপুর স্কুলের বিপক্ষে প্রথমার্ধ খেলে ফেলেছে কয়লা স্কুল। খেলাটা সরাসরি সম্প্রচার করা হচ্ছিল বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল এটিএন বাংলায়। খেলার উদ্বোধক পরিকল্পনামন্ত্রী এ কে খন্দকার দর্শক হিসেবে গ্যালারিতে, তাঁর সঙ্গে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব এ কে এম আবদুল আউয়াল মজুমদারসহ গণ্যমান্য ব্যক্তি। তাঁদের সামনে খেলতে অস্বীকৃতি জানাল কয়লা স্কুল। কিন্তু কেন? পেছনে যৌক্তিক কারণ ছিল।
যদিও আগের দিন কয়লা স্কুল প্রতিপক্ষের খেলোয়াড়দের বয়স নিয়ে আপত্তি জানিয়ে লিখিত অভিযোগ করেছিল প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে। কিন্তু প্রতিকারের কোনো আশ্বাসই দেওয়া হয়নি তাদের। খেলা শুরুর আগে এ জন্যই গড়িমসি করছিল কয়লা স্কুল। কিন্তু খেলা মাঠে গড়ানোর পর এমদাদের গোলে এগিয়ে যায় নিশ্চিন্তপুর স্কুল। দ্বিতীয়ার্ধে আর খেলতে রাজি হয়নি কয়লার ছাত্ররা। খেলা বন্ধ থাকে মিনিট বিশেক। একপর্যায়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব শাহ মোহাম্মদ কামাল ধমক দিতে শুরু করেন কয়লা স্কুলের শিক্ষিকা ফারজানা ইয়াসমিনকে, ‘আপনি জানেন, এর পরিণাম কী হবে? ওদের বলুন যেন খেলতে আসে।’ মাঠে উপস্থিত সাতক্ষীরা-১ আসনের সাংসদ শেখ মুজিবর রহমানের অনুরোধে খেলতে রাজি হয় কয়লা স্কুল। ওই এক গোলেই জিতে ফাইনালে ওঠে নিশ্চিন্তপুর স্কুল। ১৩ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামের ফাইনালে তাদের অপেক্ষায় নারায়ণগঞ্জ ইসদাইর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।

No comments

Powered by Blogger.